সাসপেন্ড হওয়া দুই কংগ্রেস সাংসদ মানিকম টেগোর এবং জ্যোতিমণির সঙ্গে অধীর চৌধুরী। সোমবার। পিটিআই
অসংসদীয় ভাবে লোকসভায় প্রতিবাদ জানাবেন না, বিরোধীদের এই আশ্বাস মিলতেই কংগ্রেসের ৪ সাংসদের ‘সাসপেনশন’ প্রত্যাহার করে নিলেন স্পিকার ওম বিড়লা। সূত্রের মতে, বিরোধীরা স্পিকারকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, আগামী দিনে সংসদ কক্ষে সরকারের নীতি নিয়ে প্রতিবাদ জানানোর সময়ে তাঁরা প্ল্যাকার্ড ব্যবহার করবেন না।
অসংসদীয় ভাবে লোকসভা কক্ষে প্রতিবাদ জানানোয় গত সপ্তাহে সম্পূর্ণ বাদল অধিবেশনের জন্য কংগ্রেসের চার সদস্যকে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নেন স্পিকার। তার পর থেকেই তা প্রত্যাহারের দাবি জানান বিরোধীরা। সেই দাবি না-মানলে গোটা অধিবেশন বানচাল হওয়ার আশঙ্কায় সরকার পক্ষ থেকে ইতিবাচক বার্তা দিয়ে জানানো হয়, বিরোধীরা যদি নিয়মের মধ্যে সংসদ কক্ষে প্রতিবাদের আশ্বাস দেন, তা হলে সাসপেনশন প্রত্যাহারের কথা ভাবা হবে। আজ লোকসভার বিষয় উপদেষ্টা কমিটিতে চলতি অচলাবস্থা কাটানো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। সূত্রের মতে, ওই বৈঠকের পরে কংগ্রেসের অধীর চৌধুরী, তৃণমূল কংগ্রেসের সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, এনসিপি-র সুপ্রিয়া সুলের সঙ্গে আলাদা করে বৈঠকে বসেন স্পিকার। সরকারের প্রতিনিধি হিসাবে বৈঠকে ছিলেন সংসদীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী। বৈঠকে স্পিকার জানান, যদি বিরোধীরা লোকসভায় অসংসদীয় ভাবে বিক্ষোভ না-দেখানোর আশ্বাস দেন, তা হলে সাসপেনশন আজই প্রত্যাহার করা হবে। ঠিক হয়, এ প্রসঙ্গে বক্তব্য রাখবেন স্পিকার। যা সমর্থন করবে বিরোধী দলগুলি। স্পিকারের পরামর্শ মেনে নেন বিরোধীরা।
পরে প্রহ্লাদ জোশী বলেন, ‘‘বিরোধীরা আশ্বাস দিয়েছেন, নিয়মের বাইরে গিয়ে বিক্ষোভ দেখানো হবে না।’’ সংসদীয় আইনে লোকসভা বা রাজ্যসভায় প্ল্যাকার্ড দেখিয়ে বিক্ষোভ করতে পারেন না বিরোধীরা।
বিরোধীদের যুক্তি, তাঁরা বাধ্য হয়েই লোকসভা বা রাজ্যসভার ওয়েলে প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়ে থাকেন। অতীতে বিরোধী-বিক্ষোভ সংসদ টিভিতে দেখানো হলেও, বর্তমানে তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তাই সরকারের নীতির বিরুদ্ধে নিজেদের প্রতিবাদ দেশবাসীর কাছে পৌঁছে দিতেই ওয়েলে নেমে প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে বাধ্য হতেন।
রাজ্যসভাতেও সমঝোতার পথে হাঁটার ইঙ্গিত দিয়েছে সরকার। গত সপ্তাহে ‘রাষ্ট্রপত্নী’ শব্দ নিয়ে সনিয়া গান্ধীর সঙ্গে স্মৃতি ইরানির বিবাদ প্রসঙ্গে রাজ্যসভায় সরব হন নির্মলা সীতারামন। সে দিন নির্মলা একাধিক বার সনিয়ার নাম নেন। সাধারণত কোনও ব্যক্তি যদি সেই কক্ষের সদস্য না-হলে তাঁর নাম নেওয়া অসংসদীয়। আজ কংগ্রেসকে বার্তা দিতে তাই রাজ্যসভার সে দিনের কার্যবিবরণী থেকে সনিয়া প্রসঙ্গ বাদ দেওয়ার নির্দেশ দেন চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নায়ডু। কংগ্রেস নেতাদের সাসপেনশন প্রত্যাহার প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে অধীর জানান, স্মৃতি দ্রৌপদী মুর্মুর নামের আগে শ্রীমতী বা রাষ্ট্রপতির মতো বিশেষণ ব্যবহার করেননি, যা অনুচিত। অধীরের যুক্তি মেনে নেয় শাসক শিবির। তবে ‘রাষ্ট্রপত্নী’ বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না অধীরের। তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে আজ প্রাক্তন মহিলা আমলা, শিক্ষাবিদেরা অমিত শাহকে চিঠি দিয়েছেন।