অসমে তৈলক্ষেত্র নিলাম নিয়ে এক দিকে সরাসরি শরিক বিজেপির বিরোধিতায় নেমেছে অসম গণ পরিষদ। অন্য দিকে, চাংসারিতে ‘এইমস’ গঠন নিয়ে দলীয় সাংসদের রোষের মুখে পড়েছে গেরুয়া দল।
শাসক জোটের শরিক অসম গণ পরিষদের মুখপাত্র কমলাকান্ত কলিতার পরে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী প্রফুল্ল মহন্তও জানিয়েছেন, তৈলক্ষেত্র নিলাম করার সিদ্ধান্ত তাঁরা মানবেন না।
গত কাল অগপ বিধায়করা এ নিয়ে বৈঠক করেন। বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে সিদ্ধান্ত পূনর্বিবেচনার অনুরোধ জানাবেন অগপর ১৪ জন বিধায়ক।
তার পরিপ্রেক্ষিতে আজ মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল বলেন, ‘‘রাজ্যের ভালর জন্যই এটা করা হচ্ছে। তৈলক্ষেত্র নিলাম করা হলে এক দিকে কয়েক হাজার কোটি টাকা রাজ্যের কোষাগারে আসবে, অন্য দিকে অনেক কর্মসংস্থান হবে।’’
কিন্তু অগপ তাদের আগের অবস্থান থেকে সরছে না। কেন্দ্র অরুণাচল, অসম, তামিলনাডু, রাজস্থান ও নাগাল্যান্ডের ৩৩টি তৈলক্ষেত্র নিলাম করছে। তার মধ্যে অসমে থাকা ১২টি তৈলক্ষেত্রে মজুত তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের পরিমাণ ২১ হাজার মেট্রিক টন।
অগপর তরফে জানানো হয়েছে, তাঁরা বরাবরই রাজ্যের সম্পদ বাইরে পাঠানো ও বেসরকারিকরণের বিরোধী। যদি রাজ্যবাসীর ভালর জন্য এ কাজ করা হয়, তবে আগে এ নিয়ে প্রকাশ্য বিতর্ক হোক। মানুষের মত নিয়ে কাজ করতে হবে।
অন্য দিকে, রহার বদলে চাংসারিতে এইমস গড়ার সিদ্ধান্তে নগাঁও জেলার রহায় আন্দোলন চলছে। বড়হমপুরের বিধায়ক প্রফুল্ল মহন্তের পাশাপাশি এ বার নগাঁও জেলার চার বারের বিজেপি সাংসদ রাজেন গোঁহাইও দলের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেন।
মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরা রহা, চাংসারি-সহ সাতটি জায়গা দেখার পর চাংসারিকে বেছে নিয়েছেন। তার বদলে অবিলম্বে রহায় এইমসের ধাঁচে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসালয় ও গবেষণাকেন্দ্র তৈরি করা হবে। কিন্তু এই ঘোষণায় আন্দোলন বন্ধ হয়নি। চার দিন ধরে চলছে অনশন।
রাজেনবাবু দাবি করেন, কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরা রহাকে এইমস গড়ার জন্য বিবেচনা করার সময়ই বর্তমানে বিজেপির ও তখন কংগ্রেসের এক ক্ষমতাশালী মন্ত্রীর দফতর থেকে আপত্তি তোলা হয়েছিল। অসমের ঠিক মধ্যবর্তী জায়গায় অবস্থিত রহায় এইমস তৈরির দাবি ছিল মধ্য অসমবাসীর। গুয়াহাটিতে অনেক বড় সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল রয়েছে। তাই তার পাশে, স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মার কেন্দ্র চাংসারিতে ফের এইমস তৈরির প্রয়োজন ছিল না।
রাজেনবাবুর অভিযোগ, হিমন্তর চাপ ও সর্বানন্দের মর্জিতেই রহার বদলে চাংসারিকে এইমস তৈরি হচ্ছে।
রাজেনবাবু বলেন, ‘‘রাজধানী, শোধনাগার, আইআইটি সবই কামরূপে তৈরি হচ্ছে। বঞ্চনার শিকার হচ্ছে মধ্য অসম।
আমার কথারও কোনও গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। এখন অনশনকারীদের আলোচনার জন্য গুয়াহাটি ডাকা হচ্ছে। প্রয়োজনে সরকার নগাঁওতে এসে আলোচনা করুক। অনশনকারীদের স্বাস্থ্যের অবনতি হচ্ছে। কারও কিছু হলে কে দায়ী হবে?’’