Odisha

মৃত্যুর পরও একসঙ্গে থাকতে চান, তাই আগেভাগেই সমাধিস্থল বানালেন বৃদ্ধ দম্পতি! খাওয়ালেন ভোজও

লক্ষ্মণ এবং জেঙ্গির পুত্র-কন্যা উভয়ই আছে। কিন্তু তারা কেউ বৃদ্ধ দম্পতিকে দেখেন না। আর সেই কারণেই প্রায় দেড় লক্ষ টাকা খরচ করে এই সমাধিস্থল বানানোর সিদ্ধান্ত নেন লক্ষ্মণ এবং জেঙ্গি।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ভুবনেশ্বর শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১০:৩৯
Share:

বৃদ্ধ দম্পতি ওড়িশার গজপতি জেলার নুয়াগাদা ব্লকের সোরি গ্রামের বাসিন্দা। প্রতীকী ছবি।

মৃত্যু কখন আসবে জানেন না। কিন্তু একসঙ্গে থাকতে চান জীবনের ও পারে গিয়েও। তাই আগেভাগেই লক্ষাধিক টাকা ব্যয়ে নিজেদের জন্য সমাধিস্থল বানালেন বৃদ্ধ দম্পতি। মারা গেলে শ্রাদ্ধ কে করবে! সেই ভয়ে মৃত্যুর আগেই গ্রামের মানুষকে ডেকে খাবারও খাইয়ে দিয়েছেন অশীতিপর লক্ষ্মণ ভুঁইয়া এবং তাঁর ৭০ বছর বয়সি স্ত্রী জেঙ্গি। দম্পতি ওড়িশার গজপতি জেলার নুয়াগাদা ব্লকের সোরি গ্রামের বাসিন্দা। বাস করেন একটি অ্যাসবেস্টর্সের ছাদওয়ালা বাড়িতে। বাড়িতে বুড়োবুড়ি ছাড়া আর কেউ নেই। অসুস্থতার সময় পাশে এসে একটু জল ধরে দেবেন, এমন কেউ-ও দু’কুলে নেই।

Advertisement

বৃদ্ধ লক্ষ্মণের সারা জীবনের যা পুঁজি জমা রয়েছে তার সঙ্গে সরকারি ভাতা মিলিয়ে তাঁর এবং স্ত্রীর খাওয়াদাওয়া এবং ওষুধ খরচা চলে যায়। থাকার মধ্যে ছিল কিছুটা জমি। সেটিও বিক্রি করে দিয়েছেন। আর সেই টাকাতেই বানিয়ে ফেলেছেন নিজের এবং স্ত্রীর সমাধিস্থল। বাকি টাকায় গ্রামের মানুষদের ডেকে পেট পুরে শ্রাদ্ধানুষ্ঠান খাইয়েছেন।

লক্ষ্মণ এবং জেঙ্গির পুত্র-কন্যা উভয়ই আছে। কিন্তু তারা কেউ বৃদ্ধ দম্পতিকে দেখেন না। আর সেই কারণেই প্রায় দেড় লক্ষ টাকা খরচ করে এই সমাধিস্থল বানানোর সিদ্ধান্ত নেন লক্ষ্মণ এবং জেঙ্গি।

Advertisement

লক্ষ্মণের কথায়, “আমরা জীবনের শেষ পর্যায়ে চলে এসেছি। কখন মৃত্যু হবে জানি না। মৃত্যুর পর এখানেই একসঙ্গে সমাধিতে বাস করব। তাই আমি নিজের ইচ্ছায় এই সমাধিস্থল বানিয়েছি।’’

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দু’তিন বছর আগে এই দু’টি সমাধিস্থল নির্মাণ করা হয়েছে। নির্মাণ শেষে দম্পতি গ্রামবাসীদের জন্য একটি ভোজের ব্যবস্থাও করেছিলেন। এক জন গ্রামবাসী বলেন, “যখন লক্ষ্মণকে তাঁর এবং স্ত্রীর জন্য সমাধিস্থল বানাতে দেখি, তখন আমরা অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। তাঁদের দেখার কেউ নেই। তাই হয়তো এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’’

লক্ষ্মণ এবং তাঁর স্ত্রীর সমাধি বানানোর খবর প্রকাশ্যে আসতেই হইচই পড়ে গিয়েছে ওড়িশা রাজ্যে। দূরদূরান্ত থেকে দম্পতির সমাধিস্থল দেখতে সোরি গ্রামে ভিড় জমাচ্ছেন সাধারণ মানুষ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement