দলের সদর দফতরে কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে ও পনীরসেলভম (বাঁ দিকে)। সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার পরে কে পলানীস্বামী। সোমবার চেন্নাইয়ে। পিটিআই
এডিএমকে-তে তুমুল কোন্দল। দলের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েই বিরোধী গোষ্ঠীর নেতা ও পনীরসেলভমকে দল থেকে বহিষ্কার করলেন ই পলানীস্বামী। এই নিয়ে আজ চেন্নাইয়ে দলের সদর দফতরে বিবদমান দুই গোষ্ঠীর মধ্যে প্রকাশ্যে সংঘর্ষও হয়েছে। বহিষ্কৃত পনীরসেলভম মাদ্রাজ হাই কোর্টের দ্বারস্থ হলেও আদালত তাঁর আবেদন খারিজ করে দিয়েছে।
দলের রাশ কার হাতে থাকবে তা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই দ্বন্দ্ব চলছে পনীরসেলভম এবং পলানীস্বামীর। দলের সাধারণ পরিষদের (জেনারেল কাউন্সিল) যে বৈঠক পলানীস্বামী ডেকে ছিলেন, তার উপর স্থগিতাদেশ চেয়ে মাদ্রাজ হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন পনীরসেলভম। কিন্তু সেই আবেদন অগ্রাহ্য করে, আদালত সাধারণ পরিষদের বৈঠকে সবুজ সংকেত দেয়। তার পরেই কার্যত নিশ্চিত হয়ে যায় প্রয়াত জয়ললিতার দলের রাশ পলানীস্বামীর হাতে যেতে চলেছে। পলানীস্বামী শিবিরের দাবি, ৭৫ জন জেলা সম্পাদকের মধ্যে ৭০ জন, ৬৬ জন বিধায়কের মধ্যে ৬৩ জন এবং সাধারণ পরিষদের ২১৯০ জন সদস্য পলানীস্বামীকে সমর্থন করেছেন।
এত দিন এডিমকে দ্বৈত নেতৃত্বে চলছিল। আজকের বৈঠকের শুরুতেই সেই দ্বৈত নেতৃত্বের অবসান ঘটানো হয়। সিদ্ধান্ত হয় কো-অর্ডিনেটর এবং জয়েন্ট কো-অর্ডিনেটর পদের বিলোপ ঘটানো হবে। গরিষ্ঠসংখ্যক সদস্যের সমর্থনে দলের অন্তর্বর্তিকালীন সাধারণ সম্পাদক নিযুক্ত হন পালানিস্বামী। চার মাস পরে নির্বাচনের মাধ্যমে দলের সাধারণ সম্পাদক ঠিক করা হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে আজকের বৈঠকে। দলের রাশ হাতে পাওয়ার পরেই পনীরসেলভমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় পলানীস্বামীর শিবির। রাজ্যের শাসকদল ডিএমকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা এবং দলকে দুর্বল করার অভিযোগে পনীরসেলভমকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। দলের কোষাধ্যক্ষ পদেও ছিলেন তিনি। বহিষ্কার করা হয়েছে তাঁর অনুগামীদেরও।
এর পরেই দলের সদর দফতরের সামনে কার্যত খণ্ডযুদ্ধ শুরু হয় দুই গোষ্ঠীর সমর্থকদের মধ্যে। পরস্পরের দিকে ব্যাপক ইট-পাটকেল, চেয়ার ছোড়া হয়। ভাঙচুর করা হয় দফতরের বাইরে থাকা গাড়িগুলিও। পরে সাংবাদিক বৈঠকে পলানীস্বামী বলেন,‘‘দলের প্রবীণ নেতারা পুলিশকে আগেই জানিয়েছিলেন, কিছু সমাজবিরোধী দফতরে হামলা চালাতে পারে। কিন্তু পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করেনি।’’ পরে পুলিশি নিরাপত্তায় দফতর থেকে বার হন পনীরসেলভম। দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষের পরে এডিএমকের সদর দফতর বন্ধ করে দেয় প্রশাসন।
দল থেকে তাঁকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত মানতে চাননি পনীরসেলভম। তাঁর পাল্টা, ‘‘দলের লক্ষাধিক কর্মী আমাকে কো-অর্ডিনেটর নির্বাচিত করেছিলেন। পলানীস্বামীর কোনও অধিকার নেই আমাকে দল থেকে বহিষ্কার করার। পলানীস্বামীকেই বহিষ্কার করা হল।’’ তাঁকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মাদ্রাজ হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন পনীরসেলভম। কিন্তু আদালত তাঁর আবেদন শুনতে চায়নি।