নরেন্দ্র মোদীর সরকারকে হুঁশিয়ারি নাগা সশস্ত্র গোষ্ঠী এনএসসিএন (আইএম)-এর। —ফাইল চিত্র।
নাগা সশস্ত্র গোষ্ঠী এনএসসিএন (আইএম) ফের ‘ভারতের বিরুদ্ধে হিংসাত্মক প্রতিরোধ’ শুরু করার হুঙ্কার দিয়ে একটি বিবৃতি প্রকাশ করল। ২০১৫ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উপস্থিতিতে সরকারের সঙ্গে একটি চুক্তিতে সই করেছিল এই গোষ্ঠী। তার পর থেকে এই প্রথম বার নাগা সশস্ত্র গোষ্ঠী এই ধরনের বিবৃতি দিল। ‘দ্য হিন্দু’-র এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, নিজেদের দাবিগুলি নিয়ে আলোচনার জন্য তৃতীয় কোনও পক্ষের হস্তক্ষেপ চান তাঁরা। বিশেষ করে নাগাদের জন্য পৃথক পতাকা এবং সংবিধানের দাবি নিয়ে আলোচনার জন্য তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ চাইছে এনএসসিএন (আইএম)।
গত বৃহস্পতিবার বিবৃতিটি প্রকাশিত হয়েছে। উত্তর-পূর্বের ওই গোষ্ঠী লিখেছে, “২০১৫ সালের ৩ অগস্টের চুক্তিকে ভারত এবং ভারতের নেতৃত্ব সম্মান করছে না। হিংসাত্মক সংঘাত ছড়ালে, তার দায় বর্তাবে এই ইচ্ছাকৃত বিশ্বাসঘাতকতার উপর।” বিবৃতিতে সই রয়েছে এনএসসিএন (আইএম)-এর সাধারণ সম্পাদক টি মুইভার। ‘দ্য হিন্দু’-র প্রতিবেদনে সরকারি সূত্রকে উদ্ধৃত করে জানানো হয়েছে, এই বিবৃতির খসড়া তৈরিতে চিন থেকে তাঁকে সাহায্য করেছেন ফুনটিং শিমরে এবং পমশিন মুইভা নামে দুই অনুগামী। ওই সূত্র আরও জানিয়েছে, নাগা সশস্ত্র গোষ্ঠীর ৯০ বছর বয়সি সাধারণ সম্পাদকের শারীরিক অবস্থা বর্তমানে খুব একটা ভাল নেই। সম্প্রতি সরকারের সঙ্গে একাধিক আলোচনাতেও তাঁকে থাকতে দেখা যায়নি।
বিবৃতিতে এনএসসিএন (আইএম) দাবি করেছে, তারা নাগাদের ইতিহাস, সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা, এলাকা, পতাকা এবং সংবিধানকে রক্ষা করবে। এর জন্য যে কোনও পর্যায়ে তারা যেতে পারে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠন। প্রসঙ্গত, ১৯৯৭ সালে নাগাদের এই সংগঠনের সঙ্গে শান্তি চুক্তি (সংঘর্ষ বিরোধী চুক্তি) হয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকারের।
১৯৯৭ সালে বিস্তর প্রাণহানির পর সংঘর্ষবিরতি চুক্তিতে সই করেছিল নাগাদের সশস্ত্র গোষ্ঠী। শুরু হয়েছিল শান্তি আলোচনা। একাধিক দফায় আলোচনা হয়েছে। শেষে মোদী সরকারের আমলে নাগাদের দাবিগুলি নিয়ে আলোচনার সাপেক্ষে আরও একটি চুক্তি (ফ্রেমওয়ার্ক এগ্রিমেন্ট) হয়। তবে দিল্লি সেই চুক্তিকে সম্মান করছে না বলে অভিযোগ নাগাদের সংগঠনের। প্রসঙ্গত, এনএসসিএন-এর দাবিগুলির মধ্যে অন্যতম রয়েছে ‘বৃহত্তর নাগাল্যান্ড’ গঠন। অসম, মণিপুর ও অরুণাচল প্রদেশের নাগা অধ্যুষিত অঞ্চলগুলিকে একত্রিত করে ‘বৃহত্তর নাগাল্যান্ড’ গঠন করতে চায় তারা।