ছবি: সংগৃহীত।
অসমের এনআরসি ওয়েবসাইট থেকে সব তথ্য উধাও হয়ে যাওয়া এবং নতুন কো-অর্ডিনেটরের আশ্বাসের পরেও প্রকল্পের পরিষেবার দায়িত্বে থাকা উইপ্রো-র দেওয়া তথ্যে নতুন করে আতঙ্ক, উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। উইপ্রো সংবাদ সংস্থাকে এক ই-মেলের জবাবে জানিয়েছে, এনআরসি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাদের পরিষেবা সংক্রান্ত চুক্তি গত অক্টোবরে শেষ হয়েছে। এনআরসি কর্তৃপক্ষ তা পুনর্নবীকরণ করেনি। জানুয়ারি পর্যন্ত তারা পরিষেবা দিয়ে অবশেষে তা বন্ধ করেছে। যদিও এনআরসি কর্তৃপক্ষ আশ্বস্ত করেছেন, উদ্বেগের কিছু নেই। সব তথ্য সার্ভারে রয়েছে। সংশ্লিষ্ট কোম্পানির সঙ্গে কথা হচ্ছে। ওয়েবসাইটে তথ্য ফেরানোর বিষয়ে যা করণীয় তা করা হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের এক সূত্রও জানিয়েছে, সমস্যা দ্রুত মিটিয়ে ফেলা হবে।
গতকাল থেকেই এনআরসি ওয়েবসাইট ফাঁকা হয়ে যায়। কেউই কোনও তথ্য, বা পূর্ণাঙ্গ তালিকা সেখানে না পাওয়ায় আতঙ্ক তৈরি হয় অসম জুড়ে। গুজব রটে, সরকার এই তালিকাকে মান্যতা না দিয়ে তা উড়িয়ে দিয়েছে। নতুন কো-অর্ডিনেটর হিতেশ দেবশর্মা জানান, সব তথ্য নিরাপদেই আছে। উইপ্রোকে বিষয়টি দেখার জন্য বলা হয়েছে। এরপরেই আজ উইপ্রোর তরফে জানানো হয়, চুক্তি পুনর্নবীকরণ হলেই এই ক্লাউড পরিষেবা তারা দেবে।
এ দিকে, লোকসভায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রায় এক প্রশ্নের উত্তরে জানিয়েছেন, বাবা-মার বা সন্তানদের নাম এনআরসিতে না থাকলেও তাদের পরস্পরের কাছ থেকে আলাদা করা হবে না। জানুয়ারি মাসে অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপালও সুপ্রিম কোর্টে জানিয়েছেন, এনআরসির ‘স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর’-এও রয়েছে, বাবা-মায়ের থেকে সন্তানদের জোর করে পৃথক করা যাবে না। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জানান, বাদ পড়া শিশুদের তালিকা পৃথক ভাবে তৈরি হয়নি। এনআরসিতে নাম অন্তর্ভুক্ত হওয়া ব্যক্তিদের পরিচয়পত্র দেওয়ারও ব্যবস্থা হয়নি। তিনি আরও জানান, এনআরসি প্রক্রিয়ার জন্য ব্যয় বরাদ্দ ১৬০২ কোটি টাকা। ইতিমধ্যেই অসম সরকারকে ১৩৪৮ কোটি ১৩ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: চ্যালেঞ্জের মুখে অমিত শাহের ‘চাণক্য’ তকমা
পাশাপাশি, প্রাক্তন এনআরসি কো-অর্ডিনেটর প্রতীক হাজেলার বিরুদ্ধে অসম সিআইডি-র কাছে এফআইআর জমা দিল একটি বেসরকারি সংগঠন। এনআরসি-র চূড়ান্ত তালিকায় কারচুপি, তথ্য বদল, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অমান্য করা, মিথ্যা নথি জমা দেওয়া, ক্ষমতার অপব্যবহার করে সাইবার অপরাধ ও সরকারি নথিতে বদল ঘটানোর অভিযোগে এই এফআইআর দায়ের করা হয়েছে বলে জানিয়েছে অভিযোগকারী আসাম পাবলিক ওয়ার্কস।