‘রাজা পঞ্চম জর্জকে খুশি করতেই ‘জনগণমন’ লিখেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।’
‘গাঁধী বা হিটলার কেউই ওঁকে পাত্তা দেননি বলে জাপানের দালাল হয়ে গিয়েছিলেন সুভাষচন্দ্র বসু।’
‘রাজনীতির শরীরে ধর্মের ইঞ্জেকশন ফুঁড়ে দিয়েছিলেন গান্ধীজি। সেই সুযোগটাই পরে নিয়েছে ব্রিটিশরা।’
‘আবোলতাবোল’ পড়ছেন, মনে হচ্ছে?
হ্যাঁ। আবোলতাবোলই! তবে সুকমার রায়ের নয়। টুইটে এই সব ‘আবোলতাবোল’ কথা বলেছেন যিনি, তিনি কোনও রাম-শ্যাম-যদু-মধু নন!
মার্কন্ডেয় কাটজু। সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি। প্রেস কাউন্সিলের প্রাক্তন চেয়ারম্যান। স্বাধীনতা সংগ্রামী কৈলাসনাথ কাটজুর নাতি।
ফেসবুকে-টুইটারে ‘কেউ-কেউ’ নয়, কোনও ‘কেউকেটা’ এ সব লিখলে যা হয়, হতে পারে, স্বাভাবিক ভাবেই তা হয়েছে। বিতর্ক তুঙ্গে পৌঁছেছে।
তবে এ সব ক্ষেত্রে একেবারে ‘হাই-প্রোফাইল’ মানুষ হলে, তাঁরা যেটা করে থাকেন, কাটজুর পক্ষে তা কী ভাবেই-বা সম্ভব! বরং তিনি একটি ‘শিশুসুলভ’ ব্যাখ্যা দিয়েছেন। এবং ‘যা করেছি, বেশ করেছি’-এই ঢঙে কাটজু বলেছেন, ‘‘কলকাতায় যাচ্ছি। রবীন্দ্রনাথ ও সুভাযকে আক্রমণ করে ভাষণ দেব। সেই ভাষণ শুনে ভিমরুলের মতো রক্ত খুঁজবেন বাঙালিরা।’’ বেহিসেবের তা-ও একটা ‘সীমা’ রয়েছে! কিন্তু কাটজুর মন্তব্যে যে ‘উস্কানি’র ছাপ মিলেছে, তা তো সীমাহীনই!
এই ‘বায়োডেটা’র শেষ কিন্তু এখানেই নয়। আরও-আরও ‘মুকুট’ রয়েছে কাটজুর প্রোফাইলে! কারণ, ‘আ-বোল, তা-বোল’-এই অভ্যস্ত, অনায়াস কাটজুর জিভ! আগেই কাটজুর ‘টার্গেট’ হয়েছেন নেতাজি। সুভাষচন্দ্রকে মাস ছয়েক আগে তাঁর ব্লগে কাটজু ‘জাপানের চর’ বলেছিলেন! মহাত্মা গাঁধীকে বলেছিলেন, ‘ব্রিটিশ এজেন্ট’! কাটজুর বিরোধিতা করে সেই সময় ঝড় ওঠে দেশজুড়ে, লোকসভা-রাজ্যসভায়।
কাটজুর ‘আবোলতাবোলে’ কিন্তু যুক্তি-টুক্তি থাকে! কেন সুভাষচন্দ্রকে তিনি ‘জাপানের চর’ বলছেন, তার তিনটি কারণ দেখিয়েছেন কাটজু। কাটজু লিখেছেন, ‘‘জাপানের ইতিহাস ব্যাখ্যা করলে দেখা যাবে, টোকিও যে-দেশকে সাহায্য করেছে, পরে সেই দেশকেই শোষণ করেছে। যদি ব্রিটেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে পরাজিত হত, তা হেল জাপান ভারতে উপনিবেশ গড়ে তুলত। নেতাজিকে পুতুল বানিয়ে সরকার চালাত। যে ভাবে মাঞ্চুরিয়ার সম্রাট পু ই-কে ‘পুতুল সম্রাট’ বানিয়ে দিয়েছিল জাপান।’’