একা রাহুল নন, গান্ধী পরিবারের আর কোন কোন সদস্য খুইয়েছিলেন সাংসদ পদ? ফাইল চিত্র।
‘মোদী’ পদবি নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যের দায়ে ২ বছর জেলের সাজাপ্রাপ্ত রাহুল গান্ধীর সাংসদ পদ খারিজ করেছেন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা। তবে শুধু রাহুলই নন, গান্ধী পরিবারের আরও দুই সদস্যও সাংসদ পদ খুইয়েছিলেন। তবে ‘প্রাক্তন’ সাংসদ হিসাবেই রাজনৈতিক এবং নির্বাচনী লড়াইতে জিতে আবারও রাজনীতির মূল কেন্দ্রে ফিরে এসেছিলেন তাঁরা। তাঁদের এক জন সম্পর্কে রাহুলের ঠাকুমা তথা দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী। অন্য জন হলেন রাহুলের মা, কংগ্রেসের প্রাক্তন সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী।
জরুরি অবস্থার অবসানের পর ১৯৭৭ সালের লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের সঙ্গে হেরে যান ইন্দিরাও। ১৯৭৮ সালে কর্নাটকের চিকমাগালুর কেন্দ্র থেকে উপনির্বাচনে জিতে সংসদে পৌঁছন তিনি। কিন্তু তৎকালীন জনতা সরকার ইন্দিরার বিরুদ্ধে স্বাধিকারভঙ্গের প্রস্তাব আনে। প্রধানমন্ত্রী মোরারজি দেশাই নিজে সংসদে ইন্দিরার বিরুদ্ধে এই প্রস্তাব আনেন। সংখ্যাগরিষ্ঠতার জেরে সেই প্রস্তাব পাশও হয়ে যায়। ইন্দিরার বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন সময়ে সরকারি আধিকারিকদের অপমান করা এবং পদের অপব্যবহার করার অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ খতিয়ে দেখতে স্বাধিকারী কমিটি গঠন করা হয়। তদন্তে ইন্দিরার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সত্য বলে ‘প্রমাণিত’ হয়। ইন্দিরা সাংসদ পদ খারিজ তো হয়ই, একই সঙ্গে তাঁকে তিহাড় জেলে পাঠানো হয়। তিন বছর পর অবশ্য অন্তর্কলহের জেরে জনতা সরকার পড়ে যায়। ১৯৮০ সালের পুনর্নির্বাচনে জিতে আবার সাংসদ এবং প্রধানমন্ত্রী হন ইন্দিরা।
২০০৬ সালে তৎকালীন কংগ্রেস নেত্রী সনিয়ার বিরুদ্ধে ‘স্বার্থের সংঘাতে’ জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ ওঠে। সে সময় সনিয়া একাধারে ছিলেন রায়বরেলীর সাংসদ এবং কংগ্রেস সভানেত্রী। এর পাশাপাশি তৎকালীন ইউপিএ সরকারের তৈরি করা জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের চেয়ারম্যানও ছিলেন সনিয়া। সনিয়ার ‘দ্বৈত ভূমিকা’ নিয়ে সে সময় প্রশ্ন ওঠে। বিতর্ক থামাতে সাংসদ পদে ইস্তফা দিয়ে পুনর্বার রায়বরেলী কেন্দ্রে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন সনিয়া এবং জয়ী হন। পরিবারের তৃতীয় সদস্য হিসাবে রাহুল আবার সংসদে ফিরে পারিবারিক ‘ধারা’ অক্ষুণ্ণ রাখতে পারেন কিনা, তা-ই এখন দেখার।