ভারভারা রাও। ফাইল চিত্র।
ভীমা কোরেগাঁও মামলায় অসুস্থতার কারণে জামিন পেলেও আপাতত মুম্বই ছাড়ার উপরে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে সমাজকর্মী তথা কবি ভারাভারা রাওয়ের। তার মধ্যেই ১৬ বছর আগের একটি পুরনো মামলাকে খুঁচিয়ে তুলল কর্নাটকের বিজেপি সরকার। তাঁর আইনজীবী এস বালন সংবাদসংস্থাকে জানিয়েছেন, ২০০৫ সালে কর্নাটকের টুমাকুরুতে পুলিশের উপরে মাওবাদীদের হামলার একটি পুরনো মামলায় ৮১ বছর বয়সী ভারাভারা রাওয়ের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য পরোয়ানা জারি করেছে মধুগিরির দায়রা আদালত। বিষয়টি নিয়ে নিয়ে তিনি উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হবেন বলে জানিয়েছেন বালন।
এর মধ্যেই ভীমা কোরেগাঁও মামলার আর এক অভিযুক্ত গৌতম নওলাখার সঙ্গে মহারাষ্ট্রের তালোজা জেল কর্তৃপক্ষের আচরণ নিয়ে সরব হয়েছেন তাঁর সঙ্গী শাহবা হুসেন। তাঁর অভিযোগ, ৭০ বছর বয়সী গৌতম নওলাখাকে মহারাষ্ট্রের তালোজা কারাগারের আন্ডা সেলে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। ফলে মিলছে না চিকিৎসার যথাযথ সুবিধাও। এর ফলে দ্রুত তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে। হুসেনের অভিযোগ, এই ভাবে নওলাখার শরীর ভেঙে দিয়ে তাঁর মানসিক জোর কমিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। এই সমাজকর্মীর সঙ্গে যা হচ্ছে, তা অন্যায় এবং নিয়মবিরুদ্ধ বলেও সরব হয়েছেন হুসেন।
২০১৮ সালের ভীমা কোরেগাঁও মামলায় সমাজকর্মী, কবি, সাহিত্যিক, অধ্যাপক-সহ সমাজের একাধিক বিশিষ্ট জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁদের অনেকেরই একাধিক জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে গিয়েছে। ধৃতদের অধিকাংশই বয়স্ক এবং অসুস্থ। ফলে তাঁদের শারীরিক অবস্থা নিয়ে বারবার উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তাঁদের পরিবারের লোকেরা
ইতিমধ্যেই জেলের ভিতরে অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হয়েছে জেসুইট পাদ্রী তথা আদিবাসী সমাজকর্মী ফাদার স্ট্যান স্বামীর। ভারাভারা রাও অসুস্থতার জন্য জামিন পেয়েছেন। কিন্তু সোমা সেন, সুধা ভরদ্বাজ, গৌতম নওলাখার মতো অনেকেই জেলে বন্দি। বিরোধীদের অভিযোগ, এঁরা সকলেই বিজেপির ধর্মীয় বিভাজন এবং দলিত ও আদিবাসী-বিরোধী রাজনীতির বিরোধী। সে কারণেই তাঁদের বিরুদ্ধে প্রতিহিংসার রাজনীতি করতে গিয়ে মিথ্যে মামলায় জড়ানো হয়েছে। বিরোধীদের বক্তব্য, মহারাষ্ট্রের পূর্বতন বিজেপি-জোট সরকার এঁদের বিরুদ্ধে মিথ্যে মামলা সাজিয়েছিল। পরে রাজ্যে সরকার বদল হলে ভীমা কোরেগাঁও মামলা ফের খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেওয়ার পরেই অতি তৎপরতার সঙ্গে গোটা মামলাটি কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকা এনআইএ-র হাতে তুলে দেয় মোদী সরকার। জেলবন্দি এই বিশিষ্টদের পরিজন ও ঘনিষ্ঠ মহলের অভিযোগ, মোদী-অমিত শাহের প্রতিহিংসার রাজনীতির দামই চোকাতে হচ্ছে সোমা-সুধা-গৌতমদের।