শেষ দিনে যুদ্ধ বাধল।
কাল রাত পর্যন্ত ছবিটা ছিল অন্য রকম। যুদ্ধের তাস খোলেনি কেউই। আজ রাজ্যসভা ভোটে মনোনয়ন পেশের শেষ দিনে সকাল থেকেই নাটক জমল শাসক-বিরোধী সব শিবিরেই।
যার ফলে উত্তরপ্রদেশের দশটি আসনে বিজেপির প্রার্থী দাঁড়াল এগারো জন। সপা থেকে দলে আনা হল নরেশ অগ্রবালকে। লক্ষ্য, মায়াবতীর প্রার্থীকে হারানো, জয়া বচ্চনকেও বেগ দেওয়া। বেলা তিনটেতে ছিল মনোনয়ন পেশের শেষ সময়। রাজীব শুক্লকে বেলা বারোটায় রাহুল গাঁধীর দফতর থেকে তাঁকে ফোন করে বলা হয়, গুজরাতে গিয়ে মনোনয়ন পেশ করতে। কিন্তু এক বেসরকারি বিমানের জরুরি অবতরণের জন্য বন্ধ ছিল অমদাবাদের রানওয়ে। অগত্যা শিকে ছিড়ল না শুক্লর। কিন্তু গুজরাতেও চার আসনের জন্য বিজেপি ও কংগ্রেসের তিন জন করে মনোনয়ন পেশ করেছেন। ফলে লড়াই জমজমাট।
উত্তরপ্রদেশে নিজের জোরে আটটি আসন জিততে পারে বিজেপি। গত কাল আটটি নামই ঘোষণা হয়েছিল। কিন্তু এর পরেও বিজেপির হাতে রয়েছে ২৮টি ভোট। আজ নরেশ অগ্রবালের সঙ্গে তাঁর বিধায়ক-পুত্রও বিজেপিতে যোগ দিলেন। ফলে সপার এক জনের ভোট কমায় দশম আসনে মায়াবতীর প্রার্থীর টায়ে-টায়ে অবস্থা। বিজেপির ভরসা, নরেশ অগ্রবাল সপা ও কংগ্রেস ভাঙিয়ে শুধু মায়াবতীর প্রার্থী নন, সপার প্রার্থী জয়া বচ্চনের জয়কেও অনিশ্চিত করবেন। রামগোপাল যাদবকেও বিজেপিতে নিয়ে আসবেন।
আরও পড়ুন: চোক্সী কাণ্ডে বিদ্ধ জেটলির মেয়েও
রাজীব শুক্লকে প্রথমে প্রার্থী করতে চাননি রাহুল। কংগ্রেসের খবর, তাঁর জোরাজুরিতে আজ সকালে এমন এক সময়ে তাঁকে প্রার্থী হতে বলা হয়, যখন গুজরাতে যাওয়া সম্ভব ছিল না। প্রথমে বলা হচ্ছিল, কংগ্রেসের ঘোষিত প্রার্থী নারন রাঠওয়ার কাগজ নথি পর্যাপ্ত নয়, কিন্তু সময়ের মধ্যে তিনিই মনোনয়ন পেশ করেন। গুজরাতে আমি ইয়াজনিককে প্রার্থী করায় রাজ্যের মহিলা কংগ্রেসের প্রধানও আজ ইস্তফা দেন। তবে রাঠওয়ার আগেই পি কে বালেরা কংগ্রেসের হয়ে মনোনয়ন পেশ করেন। বিজেপিও তৃতীয় প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করায় কিরিট সিংহ রাণাকে। মহারাষ্ট্রে তিনটি আসন নিশ্চিত বিজেপির। কিন্তু কংগ্রেস প্রার্থী কুমার কেতকারকে বেগ দিতে চতুর্থ প্রার্থী হিসেবে রাজ্যের মহিলা কমিশনের প্রধান বিজয় রাহাতকরের নাম ঘোষণা করেছে তারা।
বিজেপি ও কংগ্রেস উভয়েই বলছে, ১৫ মার্চ নাম প্রত্যাহারের দিন পর্যন্ত রাজনৈতিক গতিবিধি দেখে কিছু নাম প্রত্যাহার হবে। কিন্তু রাজ্যে রাজ্যে ক্রস ভোটিং আর কেনাবেচা যে হবে, তা স্পষ্ট। সে আশঙ্কা আজ প্রকাশ্যেই জানিয়েছেন গুজরাতের উপ-মুখ্যমন্ত্রী নিতিন পটেল। শেষ দিনে রাহুল আজ বিহার ও ছত্তীসগঢ়েও দুই প্রার্থী ঘোষণা করেছেন। কংগ্রেসের মতে, অমিত শাহ যখন ফের যুদ্ধং দেহি মনোভাব নিয়ে এগোচ্ছেন, রাহুল গাঁধীও বা ছেড়ে দেবেন কেন? প্রতিকূল সংখ্যার মধ্যেও সর্বোচ্চ আসন বের করে নেওয়া তাঁরও লক্ষ্য।