বিস্ফোরক মন্তব্যের জন্য তাঁর ‘খ্যাতি’ রয়েছে। ভোটের উত্তরপ্রদেশে আবার বিস্ফোরণ ঘটালেন সাক্ষী মহারাজ। —ফাইল চিত্র।
দেশে আর কবরস্থানের জন্য জমি দেওয়া যাবে না। অত জমি নেই। মন্তব্য উন্নাওয়ের বিজেপি সাংসদ সাক্ষী মহারাজের। আইন করে নতুন কবরস্থান তৈরি বন্ধ করে দিতে হবে। নিজের নির্বাচনী ক্ষেত্রে আয়োজিত এক জনসভায় সম্প্রতি তিনি এই মন্তব্য করেছেন। বিধানসভা নির্বাচন প্রক্রিয়ার মধ্যে থাকা উত্তরপ্রদেশে বিজেপি তীব্র সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের চেষ্টা চালাচ্ছে বলে সপা, কংগ্রেস-সহ বিভিন্ন দল আগে থেকেই অভিযোগ করছিল। সাক্ষী মহারাজের বিস্ফোরক নিদানের পর বিরোধীরা সুর আরও চড়িয়েছে।
উন্নাওয়ের জনসভায় সাক্ষী মহারাজ বলেছেন, ‘‘কাউকে কবর দেওয়ার প্রয়োজন নেই। দেশে দু-আড়াই কোটি সাধু-সন্ত রয়েছেন। তাঁদের মৃত্যুর পর সবার জন্য সমাধি তৈরি করা প্রয়োজন। তার জন্য জমি লাগবে। দেশে ২০ কোটি মুসলমান রয়েছেন। তাঁদের সবার একটা করে কবর দরকার। হিন্দুস্তানে এত জমি কোথায়?’’ বিজেপির বর্তমান সংসদীয় দলের সবচেয়ে কট্টরবাদী মুখগুলির অন্যতম সাক্ষী মহারাজ এই মন্তব্যটি করেছেন সোমবার। কিন্তু উন্নাওয়ের জনসভায় করা সন্ন্যাসী-সাংসদের এই মন্তব্য সম্পর্কে শুরুতে খবর ছড়ায়নি। পরে খবর ছড়িয়ে পড়তেই বিরোধীরা তীব্র প্রতিক্রিয়া দিতে শুরু করেছে।
কবরস্থান আর শ্মশান নিয়ে উত্তরপ্রদেশের ভোট ময়দানে বিতর্কটা প্রথমে উস্কে দিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদীই। —ফাইল চিত্র।
কংগ্রেস নেতা সন্দীপ দীক্ষিত বলেছেন, ‘‘যদি কবরস্থানের প্রয়োজন হয়, কবরস্থান তৈরি হবে। একই ভাবে যদি শ্মশানঘাটের প্রয়োজন হয় শ্মশানঘাটও হবে। কোনও নেতা বা সাধুর প্ররোচনামূলক বিবৃতিতে কিছু যায় আসে না।’’
সপা সাংসদ নরেশ অগ্রবাল বলেছেন, ‘‘এই মন্তব্য থেকেই বিজেপির হতাশা স্পষ্ট। আলোচনা করার মতো কোনও ইস্যুই তাদের হাতে নেই।’’ উত্তরপ্রদেশের নির্বাচনে ভরাডুবি নিশ্চিত জেনে বিজেপি এখন হিন্দু এবং মুসলমানদের মধ্যে দূরত্ব বাড়িয়ে তোলার চেষ্টা করছে বলে সপা নেতার মন্তব্য।
আরও পড়ুন: এবিভিপির দাদাগিরিতে চাপ বাড়ছে বিজেপিরই
ফেব্রুয়ারির গোড়ায় নরেন্দ্র মোদী নিজেই কবরস্থান এবং শ্মশান নিয়ে বিতর্ক উস্কে দিয়েছিলেন। অখিলেশ যাদবের সরকার একটি বিশেষ সম্প্রদায়ের জন্য কাজ করে বলে উত্তরপ্রদেশের এক জনসভায় মোদী মন্তব্য করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘‘যদি কোনও গ্রামে একটা কবরস্থান বানানো হয়, তা হলে সেখানে একটা শ্মশানও বানিয়ে দেওয়া উচিত। রমজানের সময় যদি বিদ্যুৎ সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন থাকে, তা হলে দিওয়ালির সময়ও তেমনই হওয়া উচিত। কোনও বৈষম্য থাকা উচিত নয়।’’
সাক্ষী মহারাজ সে বিতর্ক আবার উস্কে দিলেন। প্রধানমন্ত্রীর চেয়ে এক ধাপ এগিয়ে তিনি বলে দিলেন, কবর দেওয়ার ব্যবস্থাই তুলে দেওয়া উচিত।