রণক্ষেত্রে মুখোমুখি নরেন্দ্র মোদী ও মনমোহন সিংহ।
এই ছবিটিই আগামিকাল ফুটে উঠতে চলেছে রাজ্যসভায়। কিন্তু তাতেও প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে, সংসদের অচলাবস্থা কাটবে কি?
কারণ, বিজেপি তো বটেই, রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নায়ডুও বুঝিয়ে দিয়েছেন, নরেন্দ্র মোদী ক্ষমা চাইবেন না। আর কংগ্রেস বলছে, মনমোহন এতটাই শালীন যে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে স্বাধিকার ভঙ্গের অভিযোগও আনতে চান না। কিন্তু বিজেপি একটু সুর নরম করতেই আজ মনমোহনের হয়ে নেমে পড়ে আরও আক্রমণাত্মক হল কংগ্রেস।
পাকিস্তানের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে মনমোহন বিজেপিকে হারানোর ছক কষেছিলেন বলে গুজরাতের ভোট প্রচারে অভিযোগ করেন মোদী। সংসদ শুরু হতেই তা নিয়ে তুলকালাম শুরু করে কংগ্রেস। প্রতিবাদে রোজই অচল হচ্ছে সংসদ। জট কাটাতে দফায় দফায় সরকার পক্ষের সঙ্গে বিরোধীদের বৈঠক হয়। মনমোহনের সঙ্গেও দেখা করে বিজেপি নেতারা বুঝিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী আসলে তাঁর সম্পর্কে এমন কোনও কথাই বলেননি। কিন্তু গুজরাত ভোটের ফলাফলে জোর পাওয়া কংগ্রেস এখন নাছোড়।
আজ যদিও ধার একটু কমিয়ে রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা গুলাম নবি আজাদ বলেন, ‘‘আমরা চাই প্রধানমন্ত্রী ক্ষমা চান। তা যদি না-ও হয়, তা হলে অন্তত সংসদে এসে বলুন ভোটে জিততে মনমোহন সিংহকে নিয়ে এমন কথা বলেছিলেন, এখন প্রত্যাহার করছেন।’’ কিন্তু মোদীকে দিয়ে সে কথাও বলাতে চাইছেন না বিজেপি নেতারা। তাঁদের মত, সংসদে এই নিয়ে আলোচনা হোক। দু’পক্ষই নিজের কথা বলুক। বিজেপিও তুলে ধরবে, মোদী সম্পর্কে কী সব কুকথা বলা হয়েছে।
এই পরিস্থিতির মধ্যেই কাল বেলা বারোটা নাগাদ রাজ্যসভায় যাবেন প্রধানমন্ত্রী। আর মনমোহন তো সে সভারই সদস্য। আজ সকালে দলের সাংসদদের সামনে কান্নার পরে লোকসভায় হাজির হয়েছিলেন মোদী। তাঁর সামনেই কংগ্রেস ওয়েলে নেমে স্লোগান তোলে, ‘‘ডক্টর সাহেবের কাছে ক্ষমা চান।’’ কিন্তু পরিস্থিতি বেগতিক দেখে তড়িঘড়ি সভা মুলতুবি করে দেন স্পিকার। অনেকেই মনে করছেন, আগামিকাল এমন দশা হলে চেয়ারম্যানকেও একই পথ ধরতে হতে পারে। কিন্তু আজ রাগের মাথায় বেঙ্কাইয়া বলে দেন, ‘‘কেউ ক্ষমা চাইবে না। যা হয়েছে বাইরে, তা নিয়ে সংসদ বন্ধ থাকবে না।’’
সংসদীয় প্রতিমন্ত্রী বিজয়
গয়াল অবশ্য আশা করছেন, আগামিকালের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। কী ভাবে, তা কাল সকালে আলোচনা করেই স্থির হবে। কারণ, এ ভাবে সংসদ অচলের পক্ষপাতী নয় অন্য বিরোধী দলগুলি। ফলে বিরোধী শিবিরেও কংগ্রেস একঘরে হয়ে পড়ছে। কংগ্রেস নেতারা অবশ্য বলছেন, ‘‘আগামিকাল প্রধানমন্ত্রী যদি কিছু না বলেন, ধরে নিন এ সপ্তাহের মতো অচল হল সংসদ। পরের সপ্তাহের কৌশল পরে ঠিক হবে।’’