পুরীর স্বর্গদ্বার শ্মশানের দূষণ নিয়ে বারবার সমালোচনা-ভর্ৎসনার মুখে পড়েছে হয়েছে ওড়িশা সরকার। এ বার সেই প্রসঙ্গে নতুন প্রশ্ন তুলল দিল্লির জাতীয় পরিবেশ আদালত। ওই শ্মশানে দূষণ সৃষ্টিকারী চুল্লিতে শবদাহের উপরে সরকার কেন ‘কর’ বসাবে না, সেই প্রশ্নই বৃহস্পতিবার উঠে এসেছে আদালতে। এই ব্যাপারে ওড়িশার মুখ্যসচিবের জবাব তলব করেছে জাতীয় পরিবেশ আদালতের চেয়ারপার্সন, বিচারপতি স্বতন্ত্র কুমারের ডিভিশন বেঞ্চ।
পুরীর দূষণ রুখতে পরিবেশ আদালতের দাওয়াই ছিল, স্বর্গদ্বারের সাধারণ কাঠের চুল্লিকে (যা থেকে দূষণ ছড়ায়) পরিবেশবান্ধব করে তুলতে হবে। প্রযুক্তি ব্যবহার করে সেই ব্যবস্থাও গড়ে তোলা হয়েছে। কিন্তু তার ব্যবহার বাড়েনি। পুরীর দূষণ নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। তিনি জানান, স্বর্গদ্বার ওড়িশা সরকারের বিশেষ প্রকল্পের আওতায় রয়েছে। তার ফলে সেখানে দাহকাজে কোনও খরচ লাগে না। পরিবেশবান্ধব চুল্লি ব্যবহার বাধ্যতামূলক করার জন্য সরকারের তরফে আলাদা কোনও তৎপরতাও দেখা যাচ্ছে না। তার ফলে দূষণ-প্রতিরোধী চুল্লির ব্ভহার বাড়ছে না। সুভাষবাবুর পরিসংখ্যান, ওই শ্মশানে সাধারণ কাঠের চুল্লিতে প্রতিদিন গড়ে ৪৫টি শব দাহ হয়। অথচ পরিবেশবান্ধব চুল্লিতে তিন দিনে দাহ করা হচ্ছে একটি শব!
এ কথা শোনার পরে আদালত প্রশ্ন তোলে, দূষণ ছড়ানো সত্ত্বেও সরকার সেই শ্মশানে বিনামূল্যে মৃতদেহ দাহ করার সুযোগ দেবে কেন? এ ব্যাপারে আগামী ১৯ অগস্টের মধ্যে ওড়িশার মুখ্যসচিবকে সরকারের জবাব-সহ রিপোর্ট পেশের নির্দেশ দিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ।
স্বর্গদ্বারের পাশাপাশি পুরীর নিকাশি ব্যবস্থা, উপকূল বিধি ভেঙে নির্মাণ এবং বৈধ অনুমতি ছাড়া হোটেল চালানো নিয়েও বারবার প্রশ্ন উঠেছে। তার ভিত্তিতে নতুন করে নিকাশি ব্যবস্থা গড়ে তোলা এবং বেআইনি নির্মাণ ভাঙা এবং অবৈধ হোটেল বন্ধ করার নির্দেশও দিয়েছে পরিবেশ আদালত। কিন্তু সেই সব নির্দেশ ঠিকমতো পালন না-করায় একাধিক বার আদালতে তিরস্কৃত হয়েছে ওড়িশা সরকার।
এ দিন আদালত জানিয়েছে, এই তিন ক্ষেত্রে সরকার কী করেছে এবং এখন অবৈধ নির্মাণ এবং হোটেলের কী অবস্থা, তা সরকারকে জানাতে হবে। ১৯ অগস্ট এ ব্যাপারে শুনানি হবে। তার পরে মামলাটি দিল্লি থেকে জাতীয় পরিবেশ আদালতের কলকাতা বেঞ্চে স্থানান্তরিত হতে পারে বলে আদালত সূত্রের খবর।