ছবি এএফপি
ভারতের মাটিতে দাঁড়িয়ে বেজিংকে নিশানা করছেন আমেরিকার বিদেশ এবং প্রতিরক্ষা সচিব। স্বাভাবিক ভাবেই ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানালো চিন। আমেরিকাকে ‘তৃতীয় পক্ষ’ হিসেবে উল্লেখ করে নয়াদিল্লিতে চিনা দূতাবাস এক বিবৃতিতে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, ভারত-চিন সীমান্ত সমস্যায় ‘তৃতীয় পক্ষ’-এর কোনও জায়গা নেই। ভারতীয় উপমহাদেশে আমেরিকা নিজেদের আধিপত্য বাড়াতে চাইছে বলেও মন্তব্য করেছেন চিনা নেতৃত্ব।
বিষয়টি নিঃসন্দেহে অস্বস্তিকর নয়াদিল্লির কাছে। টোকিয়োতে ভারত, আমেরিকা, জাপান এবং অস্ট্রেলিয়ার চর্তুদেশীয় অক্ষের বৈঠকেও বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর সংযত থেকেছিলেন চিন প্রসঙ্গে। গত কালও উন্মুক্ত এবং অবাধ ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় নীতির পক্ষে সওয়াল করলেও, নাম করে চিনের বিরুদ্ধে কোনও কটূক্তি করতে শোনা যায়নি তাঁকে। এর কারণ হল, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা সংলগ্ন এলাকায় চিনের সঙ্গে সংঘাত কমানোর জন্য আলোচনার একের পর এক দরজা খোলা হচ্ছে। দু’দেশের সামরিক এবং কূটনৈতিক পর্যায়ে চলছে দফায় দফায় সংলাপ। এই মুহূর্তে আগ বাড়িয়ে চিনের মতো প্রবল পরাক্রান্ত প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে বুক ঠুকে, আমেরিকাকে সঙ্গে নিয়ে জোট ঘোষণা অবিবেচকের কাজ বলেই মনে করছে বিদেশ মন্ত্রক। আমেরিকার চিন-বিরোধী কর্মসূচিতে ভারত থাকতে চায় না গোড়া থেকেই। কিন্তু আমেরিকার দিক থেকে ভারত-সহ অঞ্চলের বিভিন্ন দেশকে সঙ্গে নিয়ে চিন-বিরোধিতার মঞ্চ গড়ে তুলতে অতিসক্রিয়তা দেখা যাচ্ছে অতিমারির পর।
কাল যৌথ সাংবাদিক বৈঠকে পম্পেয়ো ভারতের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে চিনকে নিশানা করে বলেন, ভারতের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ওয়াশিংটন সব সময়ই নয়াদিল্লির পাশে। যে কোনও ‘বিপদ’ থেকে রক্ষা পেতে একযোগে কাজ করবে দুই দেশ। চিনকে গণতন্ত্রের শত্রু হিসাবেও উল্লেখ করেন তিনি। বলেন, চিনের কোনও স্বচ্ছতা নেই, তারা মিথ্যাচারী।
পম্পেয়োর এই বার্তার পরেই আজ বিবৃতি দিয়ে চিনের বক্তব্য, ‘সীমান্ত সমস্যা ভারত-চিনের দ্বিপাক্ষিক সমস্যা। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা থেকে সেনা সরাতে এবং স্থিতাবস্থা ফেরাতে কূটনৈতিক ও সামরিক স্তরে আলোচনা চলছে। নিজেদের মধ্যে এই সমস্যা সঠিক ভাবে মেটানোর ক্ষমতা রয়েছে নয়াদিল্লি ও বেজিংয়ের। সেখানে তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপের কোনও জায়গা নেই।’