দুশ্চিন্তার মেঘ না কাটলেও, আবার বাদশাহি রোদ হাজির রাজধানীর আকাশে।
গত এক সপ্তাহ ধরে দিল্লিবাসী বায়ু দূষণে নাজেহাল। দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ সোমবার আপত্কালীন পরিস্থিতি (পাবলিক এমার্জেন্সি) দাবি করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানিয়েছে। দূষণ নিয়ন্ত্রণে দীর্ঘস্থায়ী ও দৃঢ় পদক্ষেপ করতে পর্ষদের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে সেই আবেদনের শুনানি।
সোমবার ভোরের দিকে বায়ুপ্রবাহের গতিবেগ কিছুটা বেড়ে গিয়ে দিল্লির দূষণ কিছুটা কমে যায়। স্বস্তি মেলে কেজরীবাল সরকার-সহ দিল্লিবাসীর। এ দিন সকালেও বায়ু প্রবাহের গতিবেগ গত কয়েক দিনের তুলনায় অনেকটাই বেশি ছিল। বায়ুপ্রবাহের অভিমুখ উত্তর ও উত্তর-পূর্বগামী। গত রবিবার পর্যন্ত বায়ুপ্রবাহের গতিবেগ ছিল প্রতি ঘণ্টায় ২ কিলোমিটার। এ দিন সকালে তা ছিল ঘণ্টা প্রতি ৪ কিলোমিটার। বিশেষজ্ঞদের দাবি, বুধবার এই গতিবেগ আরও বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা।
আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কমিটি ‘সফর’-এর তথ্য অনুযায়ী, সোমবার বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত বায়ুমণ্ডলে ভাসমান কণা ছিল ২.৫। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, বিপদ এখনও কাটেনি। ‘এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স’ (একিউআই) ওই দিন বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত ৬২২ থেকে ৮০৮ মাইক্রোগ্রাম প্রতি কিউবিক মিটার পর্যন্ত রেকর্ড করা হয়েছিল। এ দিন সকালে কোথাও কোথাও একিউআই কিছুটা নেমেছে। মার্কিন দূতাবাস চত্বরে একিউআই ছিল ৯৯৯ মাইক্রোগ্রাম। এ দিন সকালে তা কমে ৫৩৩ মাইক্রোগ্রাম হয়ে যায়। মন্দির মার্গ, পঞ্জাবি বাগ এলাকায় একিউআই ছিল যথাক্রমে ৮৯৭ ও ৮৯৩ মাইক্রোগ্রাম। এ দিনের সকালের তথ্য অনুযায়ী এই দুই অঞ্চলের একিউআই কমে যথাক্রমে ৫৭৪ ও ৫৬৬ মাইক্রোগ্রাম হয়। আনন্দবিহার অঞ্চলে একিউআই ছিল ৭৬০ মাইক্রোগ্রাম। এ দিন তা কমে ৫৮০ মাইক্রোগ্রাম হয়। একিউআই সবথেকে বেশি কমেছে আর কে পুরম এলাকায়। ৮১৮ মাইক্রোগ্রাম থেকে কমে ৪২৫ মাইক্রোগ্রাম হয়ে যায়। যদিও এই পরিসংখ্যানের কোনওটাই বিপদসীমার নীচে নয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-এর মত অনুযায়ী, বায়ুমণ্ডলে একিউআই হওয়া উচিত ৬০ মাইক্রোগ্রাম।
দিল্লির বায়ুদূষণ বিপদসীমায় পৌঁছে যাওয়ার বার্তা বোধহয় পৌঁছায়নি ছট উৎসব উপলক্ষে আতসবাজি জ্বালানো মানুষদের কাছে। সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, আতসবাজি নিষিদ্ধ হলেও যে হেতু ধর্মীয় উৎসব উপলক্ষে মানুষ আতসবাজি পোড়াচ্ছেন, এই সময় আইনি হস্তক্ষেপ ধর্মীয় আঘাতের কারণ হতে পারে। তাই তারাও বিষয়টি নিয়ে চুপ থেকেছে।