(বাঁ দিক থেকে) শিন্ডেসেনা নেতার পলাতক পুত্র মিহির শাহ এবং মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে। — ফাইল চিত্র।
মুম্বইয়ের বিএমডব্লিউকাণ্ডে কেউ ছাড় পাবেন না। রাজনীতিক হোক বা তাঁর সন্তান, তিনি মুখ্যমন্ত্রী থাকা পর্যন্ত রেহাই নেই কারও— সোমবার এমনই জানালেন একনাথ শিন্ডে। পাশাপাশি, মুম্বইয়ের ‘হিট অ্যান্ড রান’ মামলায় তিনি উদ্বিগ্ন বলেই জানান মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী।
রবিবার ভোরে স্কুটারে চেপে সাসুন ডকে মাছ কিনতে গিয়েছিলেন প্রদীপ নাকভা নামে এক ব্যক্তি। সঙ্গে ছিলেন তাঁর স্ত্রী কাবেরী। ওরলির কোলিওয়াড়া এলাকার বাসিন্দা প্রদীপের মাছের ব্যবসা। প্রতি দিন ডক এলাকা থেকে মাছ কিনে এনে বাজারে বিক্রি করেন নাকভা দম্পতি। রবিবার ফেরার পথে তাঁদের স্কুটিতে পিছন থেকে এসে সজোরে ধাক্কা মারে একটি বিএমডব্লিউ। প্রদীপ ছিটকে রাস্তায় পড়লেও কাবেরীকে বেশ কিছুটা পথ টেনে নিয়ে যায় গাড়িটি। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর।
ঘটনায় নাম জড়িয়েছে শিবসেনা (একনাথ শিন্ডে শিবির) নেতা রাজেশ শাহ এবং তাঁর পুত্র মিহিরের। অভিযোগ, দুর্ঘটনার সময় ওই বিএমডব্লিউ-র স্টিয়ারিংয়ে মিহির ছিলেন। মত্ত অবস্থায় গাড়ি চালাচ্ছিলেন তিনি। এই ঘটনার পর থেকেই পলাতক মিহির। তাঁকে খুঁজতে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।
ঘটনার পর থেকেই বিরোধীরা শাসকদলের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে। এমনকি, মৃতার স্বামীও দাবি করেছেন, ‘‘দোষীরা প্রভাবশালী, তাই তাঁদের শাস্তি হবে না।’’ এই নিয়ে যখন বিতর্ক মাথাচাড়া দিচ্ছে, তখনই একনাথ স্পষ্ট জানালেন, ধনী হোক বা রাজনীতিক, দোষ করলে ছাড় পাবেন না কেউই। সোমবার এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, ‘‘হিট-অ্যান্ড-রান ঘটনা বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বিগ্ন। এটা কখনই মেনে নেওয়া যায় না যে, ক্ষমতাবান এবং প্রভাবশালীরা তাঁদের ক্ষমতার অপব্যবহার করে আইনে ফাঁকি দেবে। সাধারণ নাগরিকের জীবন আমাদের কাছে মূল্যবান। আমি রাজ্য পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছি সব অভিযোগ গুরুত্ব সহকারে দেখতে। আমাদের সরকার এই সব ঘটনার বিরুদ্ধে কঠোর আইন এবং শাস্তির ব্যবস্থা করেছে।’’
তার পরই একনাথ বলেন, ‘‘আমি যত দিন মুখ্যমন্ত্রী থাকব, কেউই ছাড় পাবেন না। অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমি জ়িরো টলারেন্স নীতিতে বিশ্বাসী।’’ পাশাপাশি, তিনি এ-ও জানান, ভুক্তোভোগী পরিবারের পাশে সব সময় রয়েছে তাঁর সরকার। উল্লেখ্য, রবিবারের দুর্ঘটনাকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ বলে জানিয়েছিলেন শিন্ডে। তিনি জানান, দোষীদের শাস্তি দেওয়া হবে। আইন নিজের পথেই চলবে।
অন্য দিকে, ঘটনার পর ওই বিএমডব্লিউ গাড়ির চালক এবং শিবসেনা নেতা রাজেশকে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। মিহিরের খোঁজ পেতে দু’জনকে জেরা করা হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, দু’জনের কেউই তদন্তে সহযোগিতা করেননি। সেই কারণে জিজ্ঞাসাবাদের পর দু’জনকেই গ্রেফতার করা হয় রবিবার বিকেলেই।