Rath Yatra 2020

ভক্ত সমাগম নেই, রথে তবু দূরত্ববিধি নিয়ে প্রশ্ন

সার্বিক ভাবে করোনা-সতর্কতার আবহে মঙ্গলবার পুরীর রথকে ঘিরে ভিড়ের ছবিটা আদর্শ নয়।  

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০২০ ০৪:০৬
Share:

উৎসবমুখর: রথযাত্রা শুরুর আগে সেবায়েতদের ভিড়। মঙ্গলবার পুরীতে। পিটিআই

ভক্তদের আবেগ জিতল। অথবা ঈশ্বরের ইচ্ছাই জয়ী! কিন্তু সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশে সত্যরক্ষা হল কি না, প্রশ্ন থেকেই গেল।

Advertisement

জগন্নাথের রথযাত্রার রাস্তা বড় দাণ্ডে লোক কম। আশপাশের ছাদ যা হাজার হাজার টাকায় ভাড়া করে দাঁড়ানোর ফাঁকফোকর খোঁজেন ভক্তেরা, তা-ও কার্যত ফাঁকা। তবু জগন্নাথ-বলরাম-সুভদ্রার রথে চড়ার অনুষ্ঠান পাহুন্ডি বা গজপতি রাজার রাস্তা ঝাঁট দিয়ে ছেরা পহরার সময়ে ঠাসাঠাসি এড়ানো গেল কই! সামান্য দূরত্ব রেখে রথের রশি টানা গিয়েছে অবশ্য। অনেকের মুখে মাস্কও ছিল না সব সময়ে। সার্বিক ভাবে করোনা-সতর্কতার আবহে মঙ্গলবার পুরীর রথকে ঘিরে ভিড়ের ছবিটা আদর্শ নয়।

দিনশেষে ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক টুইট করে জগন্নাথদেবের গুন্ডিচা-যাত্রা সময়ে ও মসৃণ ভাবে সারা হয়েছে বলে সবাইকে ধন্যবাদ জানান। মন্দির প্রশাসন, পুরী জেলার পুলিশ-প্রশাসন ও রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের ভূমিকাও উল্লেখ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও রথযাত্রার শুভেচ্ছা জানান। সুপ্রিম কোর্ট মত বদলে রথযাত্রায় সায় দেওয়ার পরে সোমবার আরও ১১০০ জন সেবায়েতের কোভিড-পরীক্ষা করায় রাজ্য সরকার। তাতে এক জন প্রতিহারীর শুধু ফল পজ়িটিভ। তাতে সেবায়েতদের মনের জোর টাল খায়নি। সকাল সাতটায় অনসরপেন্ডিতে খিচুড়িভোগের পরে শুরু হয় পাহুন্ডিবিজে বা বিগ্রহদের রথারোহণের অনুষ্ঠান। বলরামের রথ তালধ্বজ চলতে শুরু করে বেলা ১২টা নাগাদ। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ ছিল, এক একটি রথের চলা শুরুর মধ্যে এক ঘণ্টার ফাঁক রাখতে হবে। বেলা দু’টোয় জগন্নাথদেবের রথ নন্দীঘোষের যাত্রা শুরু। তপ্ত মাটিতে সেবায়েতদের হাঁটতে কষ্ট হলেও বিকেল পৌনে পাঁচটার মধ্যে তিনটি রথই পৌঁছে গিয়েছে। তবে শ্রী বিগ্রহ এখনও রথেই। বুধবার বিকেলে ফের পাহুন্ডি করে তাঁদের গুন্ডিচাধামে স্থাপন করা হবে।

Advertisement

আরও পড়ুন: ‘মৃত্যুহার কম’, তবু রাশ নেই সংক্রমণে

দয়িতাপতিদের বড়গ্রাহী (মনিটর) জগন্নাথ সোঁয়াইন মহাপাত্র কিছুটা হেঁটে, কিছুটা রথে গুন্ডিচায় গিয়েছেন। তাঁর পুত্র, হবু বড়গ্রাহী রাজকুমারের পা পুড়ে একসা। বলভদ্রের রথের সঙ্গে পুরোটা হেঁটে কাহিল প্রবীণ বড়গ্রাহী রামচন্দ্র দয়িতাপতিও। তবু হাসি মুখে বললেন, ‘‘পুলিশকে রশি ছুঁতে দিইনি সেবায়েতরা।’’ রথের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা শ্রীগৌরাঙ্গের বিভিন্ন অনুষ্ঠান পরম্পরাও রক্ষিত হয়েছে। মাধ্বগৌড়েশ্বর বৈষ্ণব সংঘের অধ্যক্ষ মোহন্ত সুমনচরণ দাস বলছিলেন, ‘‘বাংলার বৈষ্ণব ভক্তেরা আসতে পারলেন না। গৌরাঙ্গের সময়ের প্রথামাফিক রথের আগে গৌড়ীয় (বাঙালি) এবং উৎকলীয় ভক্তদের মিলন অনুষ্ঠান সংক্ষেপে সারা হয়েছে।’’ রথের প্রাক্কালে গৌরাঙ্গ স্মরণে গম্ভীরা মঠে ঝালিঅর্পণ বা গুন্ডিচা মন্দির পরিষ্কার (গুন্ডিচামার্জন) করার অনুষ্ঠানও অল্প ক’জন ভক্ত মিলে সম্পন্ন করেন। এ দিনও রথের আগে আগে পরম্পরা মেনে বৈষ্ণব ভক্তেরা কীর্তন করতে করতে যান। চৈতন্য যে-ভাবে যেতেন। জগন্নাথ তত্ত্ববিষয়ক প্রাবন্ধিক চৈতন্যময় নন্দ বললেন, ‘‘টিভিতে দেখেছি। বিভিন্ন মঠের মোহন্তদের সঙ্গে কথা বলছি। মনটা পুরীতেই পড়ে।’’

আরও পড়ুন: করোনার ‘ওষুধ’! পতঞ্জলির তথ্য তলব

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement