প্রতীকী ছবি।
চব্বিশ ঘণ্টারও বেশি সময় পার হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত হদিস মিলল না নিখোঁজ সুখোই-৩০ যুদ্ধবিমানের।
এর মধ্যেই বিষয়টি নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে পড়শি দেশ চিন। এক দিকে কুলভূষণ যাদবের মামলা নিয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে গত কয়েক মাস ধরেই সম্পর্কের টানাপড়েন চলছে ভারতের। দলাই লামার সাম্প্রতিক অরুণাচল সফরের পর থেকে বেজিংয়ের সঙ্গেও নয়াদিল্লির সম্পর্ক ততটা মধুর নয়। এই অবস্থায় সুখোই কাণ্ড দু’দেশের সম্পর্কের সেই জটিলতা আরও বাড়িয়ে তুলল বলেই মনে করছে বিদেশ মন্ত্রক।
গত কাল সকাল সাড়ে দশটায় অসমের শালনিবাড়ি বিমানঘাঁটি থেকে উড়েছিল সুখোই-৩০ যুদ্ধবিমানটি। সাড়ে এগারোটা নাগাদ সেটির সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোলের। ভারতীয় বায়ুসেনার তরফে আজ জানানো হয়েছে, নিখোঁজ বিমানের চালক ছিলেন স্কোয়াড্রন লিডার দীভেশ পঙ্কজ ও ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট অচুদেব। মঙ্গলবার মেঘলা আবহাওয়ায় প্রাথমিক ভাবে তল্লাশি অভিযানে সমস্যা হয়েছিল। বুধবার সকাল থেকে সি-১৩০ বিমান, সুখোই, চেতক, ধ্রুব, চিতা হেলিকপ্টার নিয়েও তল্লাশি চালানো হয়। ‘ঈগল নেস্ট’ অভয়ারণ্যের লাগোয়া কেলংয়ের জঙ্গলে বিমান ভেঙে পড়ার কথা জানিয়েছিলেন এক বনকর্মী। সেখানেও তল্লাশি বাহিনী পাঠানো হয়েছে। কিন্তু রাত পর্যন্ত বিমানের ধ্বংসাবশেষ বা নিখোঁজ চালকদের কোনও খবরই মেলেনি।
আরও পড়ুন: মোদী-উৎসবেও নিশানায় মমতা
বিমানটির শেষ অবস্থান পাওয়া গিয়েছিল অরুণাচলপ্রদেশ-চিন সীমান্ত লাগোয়া দৌলাসাং এলাকায়। বিমান বাহিনীর কর্তারা মনে করছেন, চিনে ভেঙে পড়তে পারে সেটি। সেই মতো চিনের বিদেশ মন্ত্রকের কাছে নিখোঁজ বিমান সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়েছিল আজ। বেজিংয়ে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র লু কাং সুখোই নিয়ে কথা বলতে গিয়েই ভারতকে সতর্ক করেছেন। প্রথমে বলেছেন, ‘‘আপনারা যা জানতে চাইছেন, তা নিয়ে আমাদের কাছে এই মুহূর্তে কোনও নির্দিষ্ট তথ্য নেই।’’ তার পরেই সীমান্ত লাগোয়া অরুণাচলপ্রদেশের বিতর্কিত এলাকা নিয়ে কথা বলতে শুরু করেন লু।
অরুণাচলকে দীর্ঘদিন নিজেদের এলাকা বলে দাবি করে আসছে বেজিং। সেইমতো ওই রাজ্যকে বরাবর দক্ষিণ তিব্বত বলে উল্লেখ করে তারা। আজও লু বলেছেন, ‘‘দক্ষিণ তিব্বতের উপর আমরা কড়া নজর রাখছি। আশা করি ভারত সেখানে শান্তি ভঙ্গ হতে পারে এমন কোনও কাজ
করবে না।’’
গত মাসে অরুণাচলে তিব্বতি ধর্মগুরু দলাই লামার সফর নিয়ে প্রবল আপত্তি ছিল চিনের। ভারত সেই আপত্তিতে আমল না দেওয়ায় দুই পড়শি দেশের সম্পর্কে চিড় ধরেছিল। অরুণাচলের সীমান্তে ভারতের যুদ্ধবিমান মোতায়েন নিয়েও আপত্তি ছিল বেজিংয়ের। সম্প্রতি বেজিংয়ে ‘ওবর’ সম্মেলনে ভারত যোগ না দেওয়ায় দু’দেশের সম্পর্কের জটিলতা আরও বেড়েছে।