সূর্যাস্তের পর থেকে সূর্যোদয় না হওয়া পর্যন্ত মন্দির বা অন্য ধর্মস্থানে বেশি ডেসিবেলের শব্দবাজি ফাটানোর উপরে আজ নিষেধাজ্ঞা জারি করল কেরালা হাইকোর্ট। কেরলের কোল্লমের কাছে পুত্তিঙ্গল মন্দিরে শনিবার ভোররাতে বাজির প্রতিযোগিতার জেরে ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ১১০ জন। সেই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেই বাজির প্রদর্শনী বন্ধে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে হাইকোর্টের এক বিচারপতি গত কাল এ ব্যাপারে আদালতের হস্তক্ষেপ চেয়েছিলেন। সেই সূত্রেই এই নির্দেশ।
যদিও আদালতে সরকারি আইনজীবী দাবি করেন, ওই মন্দিরে বাজির লড়াইয়ের অনুমতি রাজ্য সরকার দেয়নি। তখন আদালত সরকারি কৌঁসুলিকে প্রশ্ন করে, ‘‘অনুমতি ছাড়া আতসবাজির প্রদর্শনী করা হল কেন?’’ পুলিশই কেন অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনের লঘু ধারা প্রয়োগ করছে? অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা কেন করা হচ্ছে না, সে প্রশ্নও তুলেছে কোর্ট। সে দিনের ঘটনায় কোনও জঙ্গি যোগাযোগ আছে কিনা, তদন্তে সে সম্ভাবনাও খতিয়ে দেখতে বলেছে হাইকোর্ট। নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি রাজ্য সরকারের কাছে হাইকোর্ট জানতে চেয়েছে পুত্তিঙ্গল মন্দিরের ঘটনায় সিবিআই তদন্ত প্রয়োজন কি না। দিনের বেলাতেও বাজির শব্দ যেন অনুমোদিত মাত্রা অতিক্রম না করে, দেখতে বলেছে আদালত। ঘটনাচক্রে আজই আবার রাজ্য সরকার বাজির প্রদর্শনীতে নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগ করবে কি না, সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে সর্বদল বৈঠক ডেকেছে। ইতিমধ্যে পুত্তিঙ্গল মন্দিরের ট্রাস্টের প্রেসিডেন্ট জয়লাল, সচিব জে কৃষ্ণমূর্তি, শিবপ্রসাদ, সুরেন্দ্রন পিল্লাই, রবীন্দ্রন পিল্লাই — এই পাঁচ জন আজ সকালে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন। দুর্ঘটনার পর থেকে এঁরা সকলেই পালিয়ে গিয়েছিলেন। এই পাঁচ জন ছাড়া সুরেন্দ্রনাথন পিল্লাই এবং মুরুগেসান নামে দুই ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। মন্দিরের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য-সহ ২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত কাল যে তিনটি গাড়ি বোঝাই বিস্ফোরক উদ্ধার হয়েছিল মন্দির চত্বর থেকে, আজ সেগুলি থেকে উচ্চ ডেসিবেলের বাজি উদ্ধার করেছে পুলিশ। কোর্টের নির্দেশ পাওয়ার পরেই সেগুলি নিষ্ক্রিয় করা হবে।