কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। —ছবি পিটিআই।
জাতীয় জনসংখ্যা পঞ্জি (এনপিআর)-তে তথ্য দেওয়ার সময় কোনও রকম নথিপত্র দেখাতে হবে না বলে জানিয়ে দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। একই সঙ্গে তাঁর আশ্বাস, তথ্য না-দেওয়ার কারণে কাউকে সন্দেহজনক ভোটার (ডি-ভোটার) হিসেবে চিহ্নিত করা হবে না।
আজ রাজ্যসভায় দিল্লির হিংসা নিয়ে বিতর্কের জবাবি ভাষণে কিছু রুটিন তথ্য দিয়েই সিএএ, এনপিআর, এনআরসি প্রসঙ্গে চলে যান শাহ। বিজেপি সূত্রের মতে, বিষয়গুলি নিয়ে শুধু মুসলিমদের মধ্যে নয়, সংশয় দেখা দিয়েছে হিন্দুদের মধ্যেও। ফলে ক্ষুব্ধ সঙ্ঘ পরিবার। আন্তর্জাতিক মহলেও নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। ফলে চাপ বাড়ছিল শাহের উপরে। আজ রাজ্যসভাকে ব্যাখ্যা দেওয়ার মঞ্চ হিসেবে বেছে নেন তিনি।
চলতি জনগণনার সঙ্গেই এনপিআর-এর তথ্য সংগ্রহ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। আজ রাজ্যসভায় কংগ্রেস সাংসদ কপিল সিব্বল অভিযোগ করেন, এনপিআর-এর প্রশ্নের জবাব দিতে যাঁরা ব্যর্থ হবেন তাঁদের নাম সন্দেহজনক ভোটারের তালিকায় উঠে যাবে। জবাবে শাহ বলেন, ‘‘কোনও ডি-ভোটার তালিকা বানানো হচ্ছে না। এনপিআর নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। কোনও ব্যক্তির কাছে যতটা তথ্য আছে ততটা দিলেই হবে।’’ এর পরেই শাহ বলে বসেন, ‘‘কারও কাছে তথ্য না-থাকলে তাঁকে ডি ভোটারের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা...।’’ বাক্য শেষ হওয়ার আগেই প্রবল হইচই শুরু করে দেন বিরোধীরা। তাঁরা বলতে থাকেন, সরকার যে আসলে ডি-ভোটার তালিকা বানানোর পরিকল্পনা করেছে, তা এতেই স্পষ্ট। বাক্য বিভ্রাটে অস্বস্তিতে পড়ে যান শাহ। বিরোধীদের হইচই থামলে তিনি বলেন, ‘‘কারও কাছে তথ্য না-থাকলে তাঁকে ডি-ভোটারের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে বলে যে অভিযোগ উঠেছে তা অসত্য।’’ স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে শাসক শিবির।
শাহ এনপিআর নিয়ে ভয়ের কিছু নেই বলে দাবি করলেও আশ্বস্ত নন বিরোধীরা। তাঁদের বক্তব্য, শাসক শিবির এর আগেও বলেছে, এনপিআর-এ তথ্য দেওয়া বাধ্যতামূলক নয়, ঐচ্ছিক। কিন্তু একই সঙ্গে তাদের নেতারা এ প্রশ্নও তুলেছেন যে, তথ্য থাকলে দেওয়া হবে না কেন! এ বারের এনপিআর-এ বাবা-মায়ের জন্মস্থান-সহ বেশ কিছু নতুন প্রশ্ন যুক্ত করা হয়েছে। এনপিআর-এ তথ্য দেওয়ার পরে তথ্যপ্রদানকারীকে এই মর্মে হলফনামা দিতে হবে যে, তথ্য সঠিক। তথ্য ভুল প্রমাণ হলে জরিমানার সংস্থানও রয়েছে আইনে। অতএব নতুন প্রশ্ন ছেঁটে এনপিআর-কে পুরনো আঙ্গিকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া না-হলে স্বস্তির কোনও অবকাশ নেই বলেও বিরোধীদের বক্তব্য।