আমেরিকাকে পাশে নিয়ে পাকিস্তানকে তীব্র আক্রমণ শানাল ভারত। আমেরিকাও জানিয়ে দিল, ‘ভাল জঙ্গি, খারাপ জঙ্গি’-র তত্ত্ব বাতিল করে দিয়েছে তারা। এখন যে কোনও ক্ষেত্রেই সন্ত্রাস নিয়ে কড়া পদক্ষেপ চায় ওয়াশিংটন।
ভারত-মার্কিন কৌশলগত আলোচনায় যোগ দিতে দিল্লিতে এসেছেন মার্কিন বিদেশসচিব জন কেরি। আজ সারা দিন তাঁর সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা করেন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। তার পরে যৌথ সাংবাদিক বৈঠকে পাকিস্তানকে আক্রমণ করেন তিনি। সুষমার কথায়, ‘‘পাকিস্তান কী ভাবে ভারতে সন্ত্রাসে মদত দিচ্ছে তা মার্কিন বিদেশসচিবকে বিস্তারিত ভাবে জানিয়েছি। আমরা দু’জনেই এক মত যে, ভাল বা খারাপ জঙ্গি বলে কিছু হয় না। পাকিস্তানকে এখনই লস্কর, জইশ, দাউদ ইব্রাহিম গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। মুম্বই ও পঠানকোটে হামলাকারীদের শাস্তিও হওয়া প্রয়োজন।’’ কেরিও জানান, ভাল বা খারাপ সন্ত্রাসবাদী হয় না। মুম্বই ও পঠানকোট হামলার বিচার নিয়ে ভারতের দাবিকে সমর্থন করেছেন তিনি।
কাশ্মীর নিয়ে দেড় মাস ধরে ভারত-পাকিস্তান বাগ্যুদ্ধের পরে সুষমার এই আক্রমণ প্রত্যাশিতই ছিল বলে মনে করছেন কূটনীতিকরা। সেপ্টেম্বরে রাষ্ট্রপুঞ্জের অধিবেশনে কাশ্মীর প্রসঙ্গ তুলবে পাকিস্তান। তার আগে আমেরিকাকে পাশে টানতে চেয়েছে ভারত।
তবে ‘ভাল জঙ্গি খারাপ জঙ্গি’-র তত্ত্ব থেকে আমেরিকার সরে দাঁড়ানো কূটনৈতিক অবস্থানের বড় পরিবর্তন বলে মনে করছে সাউথ ব্লক। আফগানিস্তানে পাকিস্তানকে সঙ্গে নিয়ে তালিবানের একাংশের সঙ্গে আলোচনা করার সময়ে এই তত্ত্ব প্রচার করেছিল আমেরিকা। কিন্তু মার্কিন দৃষ্টিভঙ্গি বদলেছে বলে জানাচ্ছেন কূটনীতিকরা। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এ দিন আফগানিস্তান নিয়ে একটি কাবুল-ওয়াশিংটন-দিল্লি অক্ষ তৈরির ইঙ্গিত দিয়েছেন জন কেরি।
কেরির ভারত সফরের সময়েই আমেরিকা গিয়েছেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মনোহর পর্রীকর। আজ দু’দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে একটি চুক্তি হয়েছে। তার ফলে প্রয়োজনে একে অপরের ঘাঁটি ব্যবহার করতে পারবে তারা। পাকিস্তান-আফগানিস্তানে সন্ত্রাস ও চিনা চাপ মোকাবিলায় এই চুক্তি দিল্লিকে সাহায্য করবে বলে মনে করছে সাউথ ব্লক।
সরকারি ভাবে বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়নি চিন। কিন্তু এ নিয়ে দিল্লিকে আক্রমণ করেছে সে দেশের সরকারি সংবাদমাধ্যম। তাদের মতে, এই চুক্তি রাশিয়াকেও বিব্রত করবে। এশিয়ায় প্রতিদ্বন্দ্বী রাষ্ট্রগুলির রেষারেষির কেন্দ্রে পরিণত হবে ভারত।