কংগ্রেস-টিডিপি জোট নয়, সব আসনে প্রার্থী দেওয়ার ঘোষণা করল কংগ্রেস। —ফাইল চিত্র
উত্তরপ্রদেশের পর এবার অন্ধ্রপ্রদেশ। ভেস্তে গেল তেলুগু দেশম পার্টির (টিডিপি) সঙ্গে কংগ্রেসের জোট। অন্ধ্রেও ‘একলা চলো’ নীতি ঘোষণা করল কংগ্রেস। আসন্ন লোকসভা এবং অন্ধ্রপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে অন্ধ্রে সব আসনে প্রার্থী দেবে কংগ্রেস। রাজ্য নেতাদের সঙ্গে দু’দিনের বৈঠকের পর অন্ধ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত এআইসিসি নেতা উমেন চাণ্ডিস্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, অন্ধ্রে লোকসভা এবং বিধানসভার সব আসনে নিজের ক্ষমতায় লড়বে কংগ্রেস। টিডিপি সরকারি ভাবে কোনও প্রতিক্রিয়া না জানালেও দলের এক নেতা বলেছেন, জোট করে ক্ষতি ছাড়া লাভ তো কিছুই হয়নি। তাই কংগ্রেস জোট ছেড়েও বেরিয়ে গেলেই ভাল।
ইঙ্গিতটা বুধবারই দিয়েছিলেন কেরলের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী চাণ্ডি। বলেছিলেন, অন্ধ্রপ্রদেশে টিডিপির সঙ্গে কংগ্রেসের কোনও জোট নেই। যা সমঝোতা আছে কেন্দ্রীয় স্তরে। অন্য দিকে বুধবারই দিল্লিতে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধীর সঙ্গে বৈঠক করেন অন্ধ্রের মুখ্যমন্ত্রী তথা টিডিপি প্রধান চন্দ্রবাবু নায়ডু। তার পর থেকেই জোট নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে ওঠে। আর তার পরের দিনই ‘জোটভঙ্গে’র ঘোষণা করল কংগ্রেস।
বুধবার থেকেই অন্ধ্রপ্রদেশে দলের সাংসদ, বিধায়ক ও দলীয় পদাধিকারীদের সঙ্গে বৈঠক শুরু করেন চাণ্ডি। দু’দিনের বৈঠক শেষে বৃহস্পতিবার চাণ্ডি বলেন, ‘‘অন্ধ্রপ্রদেশে কোনও দলের সঙ্গে আমাদের জোট নেই। ২৫টি লোকসভা এবং ১৭৫টি বিধানসভা আসনের সব কটিতেই কংগ্রেস প্রার্থী দেবে এবং নিজের ক্ষমতায় লড়াই করবে।’’ চাণ্ডি এদিন বুঝিয়ে দিয়েছেন, টিডিপির সঙ্গে জোট আছে কেন্দ্রীয় স্তরে। অর্থাৎ কেন্দ্রে সরকার গড়ার প্রশ্নে, অন্ধ্রপ্রদেশে নয়। অর্থাৎ ভোটের পর কেন্দ্রে সরকার গঠনে প্রয়োজনে জোট হতে পারে। কিন্তু ভোটের আগে আসন সমঝোতার ক্ষেত্রে নয়। বিধানসভা নির্বাচনে তো বটেই, লোকসভার ক্ষেত্রেও একই নীতি দলের।
আরও পডু়ন: চিনের চোখরাঙানি রুখতে দাওয়াই! আন্দামানে আরও একটি এয়ার বেস চালু করল ভারত
অথচ মাস দু’য়েক আগেও পরিস্থিতি অন্য রকম ছিল। তেলঙ্গানা বিধানসভা নির্বাচনে টিডিপি কংগ্রেস জোট করে আসন সমঝোতার ভিত্তিতে প্রার্থী দেয়। তাতেও অবশ্য মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের তেলঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতি (টিআরএস) ঝড়ে উড়ে যায় দুই দলই। কংগ্রেসের আসন ২১ থেকে কমে দাঁড়ায় ১৯-এ। আর টিডিপি আগের নির্বাচনে পাওয়া ১৫টি থেকে খুইয়ে জয় পায় মাত্র দু’টি আসনে।
দীর্ঘ দিন এনডিএ-তে থাকার পর গত বছরই জোট ছেড়ে বেরিয়ে আসেন চন্দ্রবাবু নায়ডু। তার পর থেকেই কংগ্রেস-সহ বিজেপি বিরোধীদের এক জোট করতে দৌত্য করছিলেন চন্দ্রবাবু। বিভিন্ন রাজ্যে গিয়ে আঞ্চলিক দলগুলির নেতা-নেত্রীদের সঙ্গে একের পর এক আলোচনা সেরেছেন। বেশ কয়েক বার রাহুল গাঁধীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন দিল্লিতে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই দুই দলেরই জোট হল না অন্ধ্রপ্রদেশে।
আরও পড়ুন: অফিস থেকে শ্রীকান্ত মোহতাকে আটক করে নিয়ে গেল সিবিআই
অন্ধ্রে বিজেপির প্রভাব তেমন নেই। ফলে বিধানসভা এবং লোকসভা নির্বাচনে মূল লড়াই হতে চলেছে কংগ্রেস বনাম টিডিপি। তবে টিআরএস এবং ওয়াইএসআর কংগ্রেসও ভাল লড়াই করবে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। সে ক্ষেত্রে ভোট কাটাকাটির খেলায় শেষ পর্যন্ত টিআরএস-এরই ফায়দা হতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। যদিও কংগ্রেসেরও ভাল ফলের সম্ভাবনা রয়েছে।
(ভারতের রাজনীতি, ভারতের অর্থনীতি- সব গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে আমাদেরদেশবিভাগে ক্লিক করুন।)