সংসদ ভবন— ফাইল চিত্র।
করোনা আবহে কোপ পড়ল সর্বদল বৈঠকে। সোমবার থেকে সংসদের বাদল অধিবেশন শুরু হচ্ছে। কিন্তু তার আগে প্রথা মেনে সর্বদল বৈঠক করছেন না লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, গত দু’দশকে এমন ঘটনা ঘটেনি। রবিবার স্পিকার সংসদের বিজনেস অ্যাডভাইসরি কমিটির বৈঠক করবেন। সেখানেই বাদল অধিবেশনের সম্ভাব্য আলোচ্য বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা হতে পারে বলে সংসদ সচিবালয় সূত্রের খবর।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে এ বার সংসদের বাদল অধিবেশন পিছিয়ে গিয়েছে। কমেছে অধিবেশনের মেয়াদও। পাশাপাশি সংক্রমণ রুখতে নানা বিধিনিষেধ জারি হয়েছে সংসদ ভবনে। আগামী ১ অক্টোবর পর্যন্ত অধিবেশন চলার কথা থাকলেও করোনা আবহে তা সম্ভব হবে কি না, সে বিষয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন বিরোধী শিবিরের অনেক সাংসদই।
সুষ্ঠু ভাবে সংসদ চালাতে প্রতিবারই অধিবেশন শুরুর আগে সর্বদল বৈঠক করেন স্পিকার। সরকার ও বিরোধী শিবিরের মধ্যে একটি কার্যকরী বোঝাপড়া গড়ে তোলাই এর উদ্দেশ্য। কিন্তু এবার তা সম্ভব হচ্ছে না। এ দিন বিজনেস অ্যাডভাইসরি কমিটির বৈঠকে সরকারের প্রস্তাব মেনে প্রশ্নোত্তর পর্ব বাতিল এবং জিরো আওয়ার ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত হতে পারে বলে সূত্রের খবর। যদিও বিরোধীরা ইতিমধ্যেই প্রশ্নোত্তর পর্ব বাতিলের প্রস্তাবের বিরোধিতায় সরব হয়েছে।
শেষ পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে অশান্ত হতে পারে বাদল অধিবেশন। পাশাপাশি, পূর্ব লাদাখে চিনা ‘আগ্রাসন’ নিয়ে বিরোধীরা সরব হবে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের ধারণা। ২০১৭ সালে ডোকলাম পর্বের সময় নরেন্দ্র মোদী সরকার বিষয়টি নিয়ে কিছু বলতে অস্বীকার করার উত্তপ্ত হয়েছিল সংসদ। করোনা সংক্রমণ মোকাবিলায় কেন্দ্রের পদক্ষেপ নিয়েও এ বারের অধিবেশনে বিরোধীরা প্রশ্ন তুলতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: নিট পরীক্ষার্থীদের জন্য ছুটল মেট্রো, সোমবার সুযোগ সকলকেই
সংসদীয় মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৩টি বিল এ বার বাদল অধিবেশনে পেশ করার জন্য তালিকাভুক্ত হয়েছে। তার মধ্যে ১৭টি বিল পাশ করানোর জন্য রাখা হয়েছে। বাদল অধিবেশনের সময় যে সব সাংবাদিক এবং সংবাদমাধ্যম কর্মী সংসদ ভবন চত্বরে হাজির থাকবেন, ইতিমধ্যেই তাঁদের কোভিড টেস্ট করানো হয়েছে। তবে সেন্ট্রাল হলে সাংবাদিক ও সংবাদমাধ্যম কর্মীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ।
সংক্রমণ এড়াতে গোটা অধিবেশনে কাগজের ব্যবহার কমাতে সক্রিয় সংসদ সচিবালয়। এই উদ্দেশ্য বেশির ভাগ নথিই ডিজিটাল মাধ্যমে রাখা হচ্ছে। সাংসদদের কাছে সমস্ত সংসদীয় নথি পাঠানো হবে অনলাইনে। সাংসদেরা ভবনের দু’টি কক্ষেই ছড়িয়ে-ছিটিয়ে বসবেন।
আরও পড়ুন: কোভিড-ধস্ত অর্থনীতি চাঙ্গা করতে ‘দিশাহীন উড়ান’ চাঙ্গিতে
আলাদা আলাদা সময়ে রাজ্যসভা এবং লোকসভার অধিবেশন হবে। বাদল অধিবেশনের প্রথম দিন লোকসভার অধিবেশন হবে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা। অন্য দিনগুলিতে বিকেল ৩টে থেকে সন্ধ্যা ৭টা। রাজ্যসভার অধিবেশন প্রথম দিন বিকেল ৩টে থেকে সন্ধ্যা ৭টা এবং পরবর্তী দিনগুলিতে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত বসবে।
অধিবেশন চলাকালীন সাংসদেরা দু’টি কক্ষেই থাকবেন। এমনকি, বেশ কিছু সাংসদকে বসানো হবে দর্শক গ্যালারিতেও! লোকসভা চলাকালীন সেই কক্ষের বেশ কিছু সাংসদ রাজ্যসভায় বসে জায়ান্ট স্ক্রিনে অধিবেশন দেখবেন। করোনা আবহে সংসদের ক্যান্টিনে রান্না বন্ধ রাখা হবে। পরিবর্তে প্যাকেটে খাবার সরবরাহ করা হবে।