উত্তরপ্রদেশের ভোটের প্রচার থেকে নিজেকে দূরেই সরিয়ে রাখছেন নীতীশ কুমার। সেটা কি কংগ্রেস-সমাজবাদী পার্টির উপর অভিমানে, নাকি নিজেকে ‘বিজেপি-বিরোধী’ প্রচার থেকেই দূরে রাখার জন্য—প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়েই। এবং একই সঙ্গে জেডিইউ ঠিক করেছে, উত্তরপ্রদেশে তারা কোনও প্রার্থীও দেবে না। জেডিইউ নেতৃত্বের যুক্তি, দলের প্রার্থীই যখন নেই, তখন দলনেতারা প্রচারে যাবেন কেন?
আজ পটনায় এ কথা জানিয়ে দেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক কে সি ত্যাগী। তিনি বলেন, ‘‘আমরা মহাজোট করার সমস্ত চেষ্টা করেছি। তা ব্যর্থ হয়েছে।’’ ত্যাগীর বক্তব্য, ‘সাম্প্রদায়িক শক্তি’-কে দূরে রাখতেই এই সিদ্ধান্ত। ভোট কম ভাগ হলে বিরোধীদের মঙ্গল হবে।
সম্প্রতি সমাজবাদী পার্টি এবং কংগ্রেস সরকারি ভাবে জোট ঘোষণা করায় ক্ষুব্ধ হন নীতীশ কুমার। ঘনিষ্ঠ মহলে সে ক্ষোভ গোপনও করেননি। এর পরেই শরদ যাদবরা কংগ্রেসের বিরুদ্ধে আক্রমণ শুরু করে। তবু বিহার সংলগ্ন পূর্ব উত্তরপ্রদেশের কিছু আসনে প্রার্থী দেওয়ার পক্ষেই ছিলেন নীতীশ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দলের নেতারা নীতীশকে বোঝান নির্বাচনে না লড়ে সপা-কং এবং বহুজন সমাজ পার্টির থেকে সম-দূরত্ব নিলে ভবিষ্যতে ‘লাভ’ হবে। কী লাভ? দলের এক প্রবীণ নেতার ইঙ্গিত, পরবর্তী ক্ষেত্রে যে কোনও দিকেই তাঁরা যেতে পারবেন। কোনও বাধ্যবাধকতা থাকবে না। সেটা কি বিজেপির দিকেও হতে পারে? এই প্রশ্নের উত্তর অবশ্য এড়িয়ে গিয়েছেন ওই জেডিইউ নেতা।
তবে উত্তরপ্রদেশের রণাঙ্গনে নীতীশ না থাকলেও লালুপ্রসাদ যে থাকছেন তা তিনি নিজেই জানিয়ে দিয়েছেন। অখিলেশ ও কংগ্রেসের হয়ে জোটের প্রচারে সক্রিয় ভাবে যোগ দেবেন তিনি। তবে সে ক্ষেত্রে লালুর ‘ব্যক্তিগত স্বার্থ’ জড়িয়ে রয়েছে। তাঁর ছোট জামাই তেজপ্রতাপ যাদব মুলায়মের বড়দার নাতি। উত্তরপ্রদেশে সমাজবাদী পার্টির দীর্ঘ দিনের গড় হিসেবে পরিচিত মৈনপুরী থেকে তিনি সপা-র সাংসদ। অখিলেশ ও মুলায়ম দু’জনেরই ঘনিষ্ঠ। তবে দলের রাশ যখন অখিলেশের হাতে তখন লালুকে জামাই-মেয়ের স্বার্থেই তাঁর হাত শক্ত করতে হবে।