ছবি: পিটিআই।
গত কাল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যখন অমিত শাহ, পীযূষ গয়ালদের নিয়ে নীতি আয়োগে অর্থনীতি নিয়ে বৈঠক করলেন, অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন তখন বিজেপি দফতরে। বাজেটের আগে দলের কর্মী-নেতাদের থেকে পরামর্শ নিতে। নির্মলা বিজেপি দফতর ছাড়তেই দলের সাধারণ সম্পাদক অরুণ সিংহ বললেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে গত সাড়ে পাঁচ বছরে গ্রাম, গরিব, আদিবাসী, কৃষক, দলিত, শোষিত— সকলের জন্যই কাজ হয়েছে। সকলে এতে খুশি। বাজেটে সেই প্রক্রিয়া জারি রাখতেই অর্থমন্ত্রীকে সকলে আবেদন করেছেন।’’
সত্যিই কি সকলে খুশি? অপ্রিয় প্রশ্ন নিতে চায় না বিজেপি। অরুণও তাই পাল্টা প্রশ্ন নেননি। কিন্তু দলের অন্দরে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে অর্থনীতির হাল নিয়ে বিজেপির নিচুতলার উদ্বেগের কথা। যার খানিকটা অর্থমন্ত্রীর সামনে প্রকাশও করেছেন দলের নেতা-কর্মীরা।
সংসদের গত অধিবেশনের সময়ই বিজেপি সাংসদদের নির্বাচনী কেন্দ্রে গিয়ে গরিব, কৃষক, ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলার নির্দেশ দেন মোদী। ১১টি ক্ষেত্রের মানুষের সঙ্গে কথা বলার প্রক্রিয়াও শুরু হয়। সাতটি ক্ষেত্রের সঙ্গে বৈঠক হয়ে গিয়েছে। তার রিপোর্ট দলের কার্যকরী সভাপতি জগৎপ্রকাশ নড্ডা ও নির্মলাকে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘সুটবুটের বাজেট’, কটাক্ষ রাহুলের
বিজেপির এক নেতা আজ বলেন, ‘‘অর্থনীতিতে ঝিমুনির ছাপ অনেক ক্ষেত্রেই স্পষ্ট। নগদের জোগান বাড়ানো দরকার। সবথেকে বড় বিষয়, বাজারে ‘সেন্টিমেন্ট’ ফেরানো দরকার। সেটা নেই বলেই লগ্নি আসছে না। সরকারের অনেক বেশি নজরদারির কারণে লগ্নি করতেও এগোচ্ছেন না অনেকে। এই ভয় দূর করতেই হবে।’’
দলের আর এক নেতার বক্তব্য, ‘‘চাষবাসের খরচ চিন্তায় রেখেছে কৃষকদের। গাড়ি শিল্পে চাহিদা বাড়ছে না। ছোট ব্যবসায়ীদের হয়রানি এখনও দূর হয়নি। জিএসটি চালুর পর এখনও পুরোপুরি ধাতস্থ হতে পারেননি তাঁরা। ব্যবসায়ীরা নিজেদের হাজারো সমস্যার কথা জানিয়েছেন।’’
সূত্রের মতে, জিএসটি নিয়ে প্রশ্নের জবাবে নির্মলা বোঝান, কেন্দ্র যেটুকু সংস্কার করার করছে। কিন্তু এই সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত কেন্দ্র একা নেয় না। অথচ বিরোধীরা শুধু বিজেপি-কেই দোষ দেয়। ফলে বিজেপি আক্রমণাত্মক হয়ে পাল্টা প্রচার করতেই পারে।
নির্মলাকে একগুচ্ছ প্রস্তাবও দেওয়া হয়। মাদ্রাসার আধুনিকীকরণের দাবি তোলেন দলের সংখ্যালঘু মোর্চার প্রধান। তবে বিজেপিরই এক জনের প্রশ্ন, অর্থমন্ত্রী সব শুনলেও, বাজেটে তার প্রতিফলন থাকবে কি? বাজেট কি আদৌ পুরোপুরি তাঁর হাতে?