নির্মলার বক্তব্য, ‘নেতাজি’র ১২৫তম জন্মবার্ষিকীতে তাঁকে নিয়ে বাংলার ট্যাবলো বাদ পড়াটা নেহাৎই ‘কাকতালীয়’ । গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ
সাধারণতন্ত্রদিবসের বাংলার ‘সুভাষ’ ট্যাবলো বাদ যাওয়া নিয়ে ‘সস্তার রাজনীতি বন্ধ করুন।’ ট্যাবলো বাদ পড়ার ব্যখ্যা দিতে গিয়ে টুইট করলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন।
বিষয়টি নিয়ে এত দিন নীরব ছিল কেন্দ্র। বিতর্ক বাড়লেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বা প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংহ কোনও বিবৃতি বা ব্যখ্যায় যাননি। এমনকি ট্যাবলো নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে লেখা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতার চিঠিরও কোনও জবাব এসেছে বলে শোনা যায়নি। এই প্রথম কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার কোনও মন্ত্রী জবাব দিলেন।
নির্মলার বক্তব্য, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৫তম জন্মবার্ষিকীতে তাঁকে নিয়ে বাংলার ট্যাবলো বাদ পড়াটা নেহাৎই ‘কাকতালীয়’ ব্যপার। কারণ ট্যাবলো বাছাই করা হয়েছে পূর্ব নির্ধারিত প্রক্রিয়া মেনে। বাংলার ট্যাবলো সেই প্রক্রিয়াতেই বাদ পড়েছে। আর ঘটনাচক্রে এ বছরই বাংলার ট্যাবলোর বিষয় ছিল ‘নেতাজি’। ধারাবাহিক তিনটি টুইটে নির্মলা এটাই বোঝাতে চেয়েছেন। যদিও তাঁর এই যুক্তি অথবা কোন বাছাই প্রক্রিয়া মেনে বাংলার ট্যাবলো বাদ পড়ল, তা ওই টুইটে স্পষ্ট নয়।
নির্মলা যা লিখেছেন, তার অনুবাদ করলে দাঁড়ায়, ‘প্রধানমন্ত্রী সাধারণতন্ত্র দিবসের ট্যাবলো নিয়ে সিদ্ধান্ত নেন না। সরকারও নেয় না। এর জন্য বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞ কমিটি আছে। সব রাজ্যের প্রস্তাব থেকে এই কমিটি ঠিক করে কোন কোন রাজ্যের ট্যাবলো প্রদর্শন করা হবে।’ নির্মলা জানিয়েছেন, কুচকাওয়াজের সময় সীমিত তা-ই স্বাভাবিক নিয়মেই সব রাজ্যের ট্যাবলোকে জায়গা দেওয়া সম্ভব নয়। এ বারও ৫৬টি রাজ্যের প্রস্তাব থেকে মাত্র ২১টিকে বেছে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু কী প্রক্রিয়ায় হয়েছে বাছাই, তা নির্মলার টুইটে স্পষ্ট নয়।
নির্মলা লিখেছেন, ‘মোদী জমানায় প্রচলিত শর্ত মেনে ২০১৮ এবং ২০২১-এ কেরলের ট্যাবলো বেছে নেওয়া হয়েছিল। ২০১৬, ২০১৭, ২০১৯, ২০২০, এবং ২০২১-এ বেছে নেওয়া হয় তামিলনাড়ুর ট্যাবলো। পশ্চিমবঙ্গের ট্যাবলো প্রদর্শিত হয়েছিল ২০১৬, ২০১৭, ২০১৯ এবং ২০২১ সালে।’ কেন্দ্রের বিরুদ্ধে এই তিনটি রাজ্যের সঙ্গে বিমাতাসুলভ আচরণের অভিযোগ ছিল। কারণ এই তিনটি রাজ্যেরই ট্যাবলো এ বছর অর্থাৎ ২০২২ সালের সাধারণতন্ত্র দিবসে বাছাই পর্বে বাদ গিয়েছে। আবার এই তিন রাজ্যে সাম্প্রতিক বিধানসভা ভোটে ধাক্কা খেয়েছে কেন্দ্রে ক্ষমতায় থাকা শাসক দল বিজেপি।
নির্মলা হিসেব দিয়ে বোঝাতে চেয়েছেন, তিন রাজ্যই আগে বহুবার সুযোগ পেয়েছে। লিখেছেন, ‘এর মধ্যে সস্তার রাজনীতি খোঁজা বন্ধ করুন।’ কিন্তু পর্যবেক্ষকদের বক্তব্য, তিন রাজ্য আগে কিসের ভিত্তিতে জায়গা পেয়েছিল এবং এ বছরই বা কেন পেল না তা কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর টুইট দেখে বোঝা যাচ্ছে না।