ফাইল চিত্র।
জ্বর নিয়েই আদালতে এসেছিলেন। নির্ভয়া মামলার শুনানি চলাকালীন আদালতেই অজ্ঞান হয়ে গেলেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি আর ভানুমতী। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আইন অনুযায়ী, একই অপরাধে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত একাধিক অপরাধীর একই সঙ্গে ফাঁসি দিতে হবে। কিন্তু নানা আইনি ফাঁকফোঁকর খুঁজে নির্ভয়ার ধর্ষক-খুনিদের আইনজীবী বারবার ফাঁসির দিন পিছিয়ে দিচ্ছেন। এখনও এক জন দণ্ডিতের সামনে প্রাণ বাঁচানোর জন্য কিছু আইনি পথ খোলা আছে। ফলে আবার মৃত্যু পরোয়ানা জারি হলে তা পিছিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই কেন্দ্রীয় সরকার হাইকোর্টে আবেদন জানিয়েছিল, যাতে চার অপরাধীর পৃথক ফাঁসি দেওয়ার অনুমতি দেয় কোর্ট। সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছিল দিল্লি হাইকোর্ট। তার পরেই সুপ্রিম কোর্টে যায় কেন্দ্র।
আজ সেই মামলারই শুনানি চলছিল বিচারপতি ভানুমতীর এজলাসে। কেন্দ্রের আইনজীবী সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা জানিয়েছেন, জ্বর নিয়েই আজ আদালতে এসেছিলেন বিচারপতি। তার পরেই অজ্ঞান হয়ে যান। তখনই তাঁকে তাঁর নিজস্ব চেম্বারে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁর শুশ্রুষা করেন আদালতের চিকিৎসকেরা। কিছু ক্ষণ পর জ্ঞান ফিরলে বিচারপতিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ২০ ফেব্রুয়ারি পরের শুনানি হবে, জানিয়েছে আদালত।
এক দণ্ডিত বিনয় শর্মা শীর্ষ আদালতে আর্জি জানিয়েছিল, জেলে তার উপরে নানা অত্যাচারের ফলে সে মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত। কিন্তু রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ এই সব দিক খতিয়ে না-দেখেই তাঁর প্রাণভিক্ষার আর্জি খারিজ করে দিয়েছেন। তাই রাষ্ট্রপতির সেই সিদ্ধান্তের বিচারবিভাগীয় পর্যালোচনা করা হোক। আজ বিনয়ের আবেদন শোনে সুপ্রিম কোর্টের তিন বিচারপতির বেঞ্চ। বেঞ্চ রায় দেয়, বিনয়ের আইনজীবীর এই আবেদনের কোনও ভিত্তি নেই। রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্তের বিচারবিভাগীয় পর্যালোচনা করার কোনও দরকার নেই।
বিচারপতিরা আরও জানিয়েছেন, তিন দণ্ডিত, বিনয়, মুকেশ সিংহ এবং অক্ষয় ঠাকুরের সামনে আর কোনও আইনি পথ খোলা নেই। আর এক দণ্ডিত পবন গুপ্তও জানিয়ে দিয়েছে, রাষ্ট্রপতির কাছে সে প্রাণভিক্ষার আর্জি করবে না। তা ছাড়া, সুপ্রিম কোর্ট-সহ কোনও আদালতেই অপরাধীদের তরফ থেকে আর কোনও আবেদন পড়ে নেই। তাই কেন্দ্রের মামলার ফয়সালা হওয়ার আগেই দায়রা আদালত ফের মৃত্যু পরোয়ানা জারি করতে পারে। নির্ভয়ার চার ধর্ষক-খুনির গত ১ ফেব্রুয়ারি ভোর ছ’টার সময়ে ফাঁসি হওয়ার কথা ছিল। দায়রা আদালতের নির্দেশে তা অনির্দিষ্টকালের জন্য পিছিয়ে যায়।