নির্ভয়া কাণ্ডের চার দণ্ডিত। —ফাইল চিত্র
দু’বার দিনক্ষণ নির্ধারণ করেও আইনি জটিলতায় নির্ভয়া কাণ্ডের দণ্ডিত চার জনের ফাঁসি হয়নি। এ বার ফের নয়া মৃত্যু পরোয়ানা জারি করল দিল্লির পাতিয়ালা হাউস কোর্ট। নতুন পরোয়ানায় বিচারকের নির্দেশ, আগামী ৩ মার্চ সকাল ৬টায় তিহাড় জেলে চার ফাঁসি কার্যকর করতে হবে। নয়া মৃত্যু পরোয়ানা জারি করায় খুশি নির্ভয়ার পরিবার।
কিন্তু এই দিনক্ষণও কি চূড়ান্ত? এখনই এমনটা নিশ্চিত করে বলতে পারছে না আইনজীবী মহল। কারণ, পবন গুপ্তের হাতে এখনও দু’টি আইনি বিকল্প রয়েছে। আবার সমস্ত আইনি প্রক্রিয়ার পরেও ১৪ দিন সময় দিতে হয় ফাঁসির জন্য। সেই হিসেবে পবনের আইনি প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে দু’দিনের মধ্যে। পবন এই দু’দিনের মধ্যে আবেদন করবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
২০১২ সালে প্যারামেডিক্যাল ছাত্রীকে চলন্ত বাসে গণধর্ষণ ও নৃশংস অত্যাচারের পর খুনের ঘটনায় চার দণ্ডিত মুকেশ সিংহ, বিনয় শর্মা, অক্ষয় ঠাকুর ও পবন গুপ্তর ফাঁসির আদেশ দেয় নিম্ন আদালত। তার পর থেকেই দীর্ঘ আইনি লড়াই চলছে। পবন গুপ্ত বাদে তিন জনই তাঁদের সমস্ত আইনি বিকল্প শেষ করে ফেলেছেন। সর্বশেষ প্রাণ ভিক্ষার আর্জিও খারিজ করে দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ।
আরও পড়ুন: ২৫০০ কোটি মেটানোর আর্জি ভোডাফোনের, ফেরাল সুপ্রিম কোর্ট
সোমবার আদালতে এই বিষয়টি উল্লেখ করেন তিহাড় জেল কর্তৃপক্ষ। পবন গুপ্তের হাতে এখনও রায় সংশোধনের আর্জি (কিউরেটিভ পিটিশন) এবং রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আর্জির বিকল্প থাকলেও তারও কোনও আবেদন কোথাও আটকে নেই বলেও জানান জেল কর্তৃপক্ষের আইনজীবীরা। এর পরেই বিচারক তৃতীয় বারের জন্য মৃত্যু পরোয়ানা জারি করেন।
এর আগেও নির্ভয়া কণ্ডের দণ্ডিতদের ফাঁসির দিনক্ষণ নির্ধারিত করে দু’বার মৃত্যু পরোয়ানা জারি করেছে পাতিয়ালা হাউস কোর্ট। প্রথম পরোয়ানায় ফাঁসি কার্যকরের তারিখ ছিল ২২ জানুয়ারি। তার পর দ্বিতীয় পরোয়ানায় সেই তারিখ ছিল ১ ফেব্রুয়ারি। কিন্তু তার মধ্যেও সব আইনি প্রক্রিয়া শেষ না হওয়ায় গত ৩১ জানুয়ারি পাতিয়ালা হাউস কোর্ট পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ফাঁসি কার্যকরের উপর স্থগিতাদেশ দেয়।
আরও পড়ুন: ধনখড়ের সঙ্গে এক ঘণ্টা বৈঠকে মমতা, সঙ্ঘাতের আঁচ কমার ইঙ্গিত টুইটে
কিন্তু সেই স্থগিতাদেশ তুলে নতুন মৃত্যু পরোয়ানা জারির আর্জি জানিয়ে হাইকোর্টে যায় যায় কেন্দ্র ও দিল্লি সরকার। দিল্লি হাইকোর্ট গত পাঁচ ফেব্রুয়ারি জানিয়ে দেয়, সাত দিনের মধ্যে অপরাধীদের সব আইনি প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে। তার পরেও মৃত্যু পরোয়ানার আর্জি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যায় সরকার পক্ষ। গত মঙ্গলবার হাইকোর্টের দেওয়া সময়সীমা শেষের পর শীর্ষ আদালত জানায়, নিম্ন আদালতে এ বার মৃত্যু পরোয়ানা জারি করতে আর কোনও বাধা নেই। সেই মতো পাতিয়ালা হাউস কোর্টে মৃত্যু পরোয়ানার আর্জি জানায় সরকার পক্ষ।
অন্য দিকে রায়ের পরে নির্ভয়ার মা বলেন, ‘‘নতুন করে মৃত্যু পরোয়ানা জারি করায় আমি খুশি। তবে ৩ মার্চ ফাঁসি কার্যকর হলে আরও খুশি হব। নির্ভয়ার বাবা বলেন, ‘‘ফাঁসির রায় কার্যকর হলে দেশে অপরাধের সংখ্যা কমবে।’’