নির্ভয়া কাণ্ডে প্রাণদণ্ডে দণ্ডিত বিনয় শর্মা। — ফাইল চিত্র
জেলের দেওয়ালে নিজেই নিজের মাথা ঠুকে গুরুতর আঘাত পেয়েছে নির্ভয়ার খুন ধর্ষণে দোষী সাব্যস্ত বিনয় শর্মা। এই মুহূর্তে তার মানসিক অবস্থা এতটাই খারাপ যে নিজের মাকে পর্যন্ত চিনতে পারছে না। ফাঁসির নির্ধারিত দিনের প্রায় দু’সপ্তাহ আগে আজ এই দাবি করেছেন বিনয়ের আইনজীবী।
দিল্লির পাটিয়ালা হাউস আদালতে গত সপ্তাহেই বিনয়ের আইনজীবী জানিয়েছিলেন, তাঁর মক্কেলের মানসিক অবস্থা বিপর্যস্ত। জেলের ভিতরে অনশনে বসেছে সে। সে দিনই নির্ভয়ার ধর্ষণ ও খুনে দোষী সাব্যস্ত চার জন— বিনয় শর্মা, অক্ষয় ঠাকুর, পবন গুপ্ত ও মুকেশ সিংহের নামে মৃত্যু পরোয়ানা জারি করে আদালত। তিহাড় জেলে ৩ মার্চ ভোর ছ’টায় তাদের ফাঁসি হওয়ার কথা। এর পরেই আজ নাটকীয় ভাবে বিনয়ের আইনজীবী আদালতে জানান, জেলের দেওয়ালে নিজের মাথা ঠুকে গুরুতর আহত হয়েছে তাঁর মক্কেল। ডান হাত ভেঙে গিয়েছে। মানসিক অসুস্থতা, স্কিৎজোফ্রিনিয়া-র রোগীতে পরিণত হয়েছে বিনয়। তার দ্রুত চিকিৎসা প্রয়োজন। ইন্সটিটিউট অব বিহেভিয়ার অ্যান্ড অ্যালায়েড সায়েন্সেস হাসপাতালে নির্ভয়ার ধর্ষককে চিকিৎসা করানোর আর্জি জানিয়েছেন তার আইনজীবী।
তিহাড় জেলের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ২৬ বছর বয়সি বিনয় গত রবিবার বিকেলে জেলের দেওয়ালে মাথা ঠুকে নিজেকে আঘাত দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। নিরাপত্তাকর্মীরা তা দেখে ফেলেন এবং তাকে আটকান। বিনয়ের সামান্য আঘাত লেগেছে বলেই দাবি করেন ওই কারা আধিকারিক। তবে বিনয়ের আইনজীবী সওয়াল করেছেন, তাঁর মক্কেলের পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে সে কাউকে, এমনকি নিজের মাকেও চিনতে পারছে না। ফলে আইনজীবীর আর্জি, ফাঁসি না দিয়ে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হোক তাঁর মক্কেলকে। এক কারা আধিকারিক জানিয়েছেন, দোষী সাব্যস্ত বাকি তিন জনের থেকে বিনয়ের স্বভাব আলাদা। সব সময়েই বিরক্ত হয়ে থাকে সে।
২০১২ সালে নির্ভয়ার গণধর্ষণ ও হত্যার ঘটনার পরে ছয় জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এর মধ্যে তিহাড় জেলে ভিতরে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় অভিযুক্ত রাম সিংহকে। সে আত্মহত্যা করেছে বলে জানানো হয়। ওই ঘটনায় অভিযুক্ত এক নাবালক তিন বছর সরকারি শিশু-কিশোর আবাসে কাটানোর পরে এখন মুক্ত। আগামী ৩ মার্চ ভোরে দোষী সাব্যস্ত বাকি চার জনের ফাঁসি হওয়ার কথা। আগে অবশ্য দু’বার মৃত্যু পরোয়ানা জারি হওয়ার পরেও ফাঁসির আদেশ কার্যকর হয়নি। নির্ভয়ার মায়ের আশা, ফাঁসির দিন আর পিছোবে না।