নির্ভয়া কাণ্ডে ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত পবন গুপ্ত। —ফাইল চিত্র
নিম্ন আদালতে খারিজ হয়েছে, দিল্লি হাইকোর্ট খারিজ করেছে। ২০১২ সালের ১৬ ডিসেম্বর নির্ভয়া ধর্ষণ-খুন কাণ্ডের সময় সে নাবালক ছিল, পবন গুপ্তর এই আর্জি এ বার খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্টও। শীর্ষ আদালতের বিচারপতিদের পর্যবেক্ষণ, ‘‘এই আর্জি শোনার মতো কোনও ভিত্তি আমরা খুঁজে পাইনি।’’ আগামী ১ ফেব্রুয়ারি নির্ভয়া কাণ্ডের চার দোষীর ফাঁসি হওয়ার কথা।
দিল্লির প্যারামেডিক্যাল পড়ুয়া নির্ভয়াকে চলন্ত বাসে তুলে গণধর্ষণ ও অকথ্য নির্যাতন করে ছ’জন। তাদের মধ্যে রাম সিংহ বিচার চলাকালীন তিহাড় জেলে আত্মহত্যা করেন। সেই সময় এক জন ছিল নাবালক। জুভেনাইল আদালতে বিচারের পর তিন বছরের সাজার মেয়াদ শেষে সে ছাড়া পেয়ে গিয়েছে। কিন্তু পবন গুপ্তও আদালতে দাবি করেছিল, অপরাধের সময় সে নাবালক ছিল।
প্রথমে জুভেনাইল আদালত নথিপত্র খতিয়ে দেখে তার সেই আর্জি খারিজ করে দিয়েছিল। সেই রায় চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে যান পবনের আইনজীবী। কিছু দিন আগে দিল্লি হাইকোর্টও নিম্ম আদালতের রায়ই বহাল রাখে। এর পর শুক্রবার একই আর্জি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করে পবন গুপ্ত। সোমবার সেই আর্জিও খারিজ করে দিল শীর্ষ আদালত।
আরও পড়ুন: পুলিশের চাকরি ছেড়ে জঙ্গি দলে, শোপিয়ানে এনকাউন্টারে নিহত যুবক-সহ ৩ হিজবুল সদস্য
শুনানিতে পবনের আইনজীবী এ পি সিংহর দাবি, স্কুলের নথি অনুযায়ী ঘটনার সময় পবন নাবালক ছিল। কিন্তু কোনও আদালতই সেই নথি গ্রাহ্য করেনি। কিন্তু দিল্লি পুলিশের পক্ষে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বলেন, ‘‘প্রতিটি বিচার প্রক্রিয়াতেই ওই উল্লিখিত নথিপত্র খতিয়ে দেখা হয়েছে।’’ এই সময়ে এসে বার বার নাবালক বলে অপরাধীর আবেদন গ্রাহ্য করে বিচার প্রক্রিয়া ব্যাহত হবে বলেও মত প্রকাশ করেন তুষার মেহতা। তিনি আদালতে জানান, ঘটনার সময় পবনের বয়স ছিল ১৯ বছর। বার্থ সার্টিফিকেটের কপি এবং স্কুলের সার্টিফিকেটের সার্টিফায়েড কপি বিচারের প্রতিটি পর্যায়েই খতিয়ে দেখা হয়েছে। তা ছাড়া পুলিশও জানিয়েছে যে, পবনের বাবা-মা তার বয়স নিশ্চিত করেছে।
দু’পক্ষের সওয়াল-জবাব শেষে বিচারপতিরা বলেন, ‘‘এই আর্জির মধ্যে আমরা কোনও ভিত্তি খুঁজে পাচ্ছি না। একবার জুভেনাইল আদালত এই আর্জি খুঁটিয়ে পরীক্ষা করে খারিজ করার পর ফের সেই দাবি তোলা যায় না।’’ পবনের আইনজীবীর উদ্দেশে বিচারপতিরা বলেন, ‘‘আর কত বার একই জিনিস শুনব আমরা। আপনারা আগেও একাধিক বার এই দাবি তুলেছেন।’’
আরও পড়ুন: হাতের বদলে পায়ের মেডিক্যাল রিপোর্ট! কাঠগড়ায় নামী ডায়াগনস্টিক
দিল্লির দায়রা আদালত প্রথম মৃত্যু পরোয়ানা জারি করে বলেছিল, ২২ জানুয়ারি সকাল সাতটায় নির্ভয়া কাণ্ডের চার দোষীর ফাঁসি কার্যকর করতে হবে। কিন্তু এক অভিযুক্ত প্রাণভিক্ষার আর্জি জানানোয় নতুন করে মৃত্যু পরোয়ানা জারি করে দিল্লির আদালত। নতুন পরোয়ানা অনুযায়ী আগামী ১ ফেব্রুয়ারি সকাল ছ’টায় চার জনের ফাঁসি হবে তিহাড় জেলে।