নির্ভয়া কাণ্ডের চার দণ্ডিত। —ফাইল চিত্র
নির্ভয়া কাণ্ডে ফের মৃত্যু পরোয়ানা জারির আর্জি ফেরাল দিল্লির আদালত। বিচারক জানিয়ে দিলেন, যত ঘৃণ্য অপরাধীই হোক, আইনের সব সুবিধা পাওয়ার অধিকার তার রয়েছে। অন্য দিকে পরোয়ানা জারি না হওয়ায় কার্যত হতাশ নির্ভয়ার মায়ের দাবি, ‘‘পাতিয়ালা হাউস কোর্ট মৃত্যু পরোয়ানা জারি করবে না। তাই সুপ্রিম কোর্টই পরোয়ানা জারি করুক।’’
আইনজীবী সংক্রান্ত জটিলতায় আইনি প্রক্রিয়া সারতে পারছে না বলে দাবি করেছিল নির্ভয়া কাণ্ডের দণ্ডিত পবন গুপ্ত। তার জন্য আইনজীবী দেওয়ার প্রস্তাবও দিয়েছে আদালত।
নির্ভয়া কাণ্ডের তিন দণ্ডিতর সব আইনি বিকল্প শেষ। বাকি শুধু পবন গুপ্ত। তার হাতে রয়েছে সুপ্রিম কোর্টে রায় সংশোধনের আর্জি (কিউরেটিভ পিটিশন) এবং রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা। পবনের এই দুই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত বাকিদেরও ফাঁসি কার্যকর করা যাচ্ছে না। কিন্তু সেই প্রক্রিয়া কেন দেরি হচ্ছে, তা নিয়ে বুধবার প্রশ্ন তোলেন পাতিয়ালা হাউস কোর্টের অতিরিক্ত দায়রা বিচারক ধর্মেন্দ্র রানা। জানা যায়, আগের আইনজীবীকে পবন সরিয়ে দিয়েছে। নতুন আইনজীবী নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত পবন সেই আবেদন করতে পারছে না বলে জানানো হয়েছে।
সেই জট কাটাতে বিচারক নিজেই আইনজীবীদের একটি তালিকা দেখান পবনের বাবাকে। ডিস্ট্রিক্ট লিগ্যাল সার্ভিসেস অথরিটির ওই তালিকা থেকে যে কোনও এক জন আইনজীবীকে বেছে নিতে বলেন বিচারক। যদিও তার পরেও পবন কোনও আইনজীবী নিয়োগ করেছে কি না, সেই বিষয়টি এখনও স্পষ্ট হয়নি।
আরও পড়ুন: ২৬/১১-র চক্রী হাফিজ সইদকে ৫ বছরের সাজা শোনাল পাক আদালত
গত ৫ ফেব্রুয়ারি দিল্লি হাইকোর্ট অপরাধীদের সব আইনি প্রক্রিয়া শেষ করার জন্য সাত দিনের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল। সেই সময়সীমা মঙ্গলবারই শেষ হয়েছে। এ বার নতুন করে মৃত্যু পরোয়ানা জারির আর্জি নিয়ে মামলাকারীরা নিম্ন আদালতে যেতে পারেন বলে মঙ্গলবারই রায় দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। বুধবার ফের পাতিয়ালা হাউস কোর্টে সেই আর্জি জানায় সরকার পক্ষ। কিন্তু আদালত নতুন করে মৃত্যু পরোয়ানা জারি করতে রাজি হয়নি। সেই প্রসঙ্গেই বিচারক বলেন, জঘন্যতম অপরাধীও তার শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত আইনের সব বিকল্প পেতে পারে।
আরও পড়ুন: আপের জয়ে এত উচ্ছ্বাস কেন? চিদম্বরমকে তোপ শর্মিষ্ঠার
নির্ভয়া কাণ্ডের চার দণ্ডিত মুকেশ কুমার সিংহ, পবন গুপ্ত, বিনয় কুমার শর্মা ও অক্ষয় কুমারের মৃত্যু পরোয়ানা প্রথম জারি করেছিল পাতিয়ালা হাউস কোর্ট। সেই পরোয়ানায় ফাঁসি কার্য়করের তারিখ ছিল ২২ জানুয়ারি। তার পর পরোয়ানা পিছিয়ে করা হয়েছিল ১ ফেব্রুয়ারি। কিন্তু তার মধ্যেও সব আইনি প্রক্রিয়া শেষ না হওয়ায় গত ৩১ জানুয়ারি পাতিয়ালা হাউস কোর্ট পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ফাঁসি কার্যকরের উপর স্থগিতাদেশ দেয়।