নীরব মোদী।—ফাইল চিত্র।
কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে পালিয়েছেন হিরে ব্যাবসায়ী নীরব মোদী। চেষ্টা সত্ত্বেও তাঁর নাগাল পাননি গোয়েন্দারা। এখন তাঁর বাংলো নিয়েও ভোগান্তি সরকারের। কোটি কোটি টাকা দিয়ে তৈরি ওই বাংলোর গাঁথনি অত্যন্ত মজবুত। ছেনি-হাতুড়ি ঠেকানো যাচ্ছে না তাতে। অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতিও কাজ দেয়নি। বাধ্য হয়ে বাংলো ভাঙতে আনা হচ্ছে ডিনামাইট, যাতে শক্তিশালী বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ধূলোয় মিশিয়ে দেওয়া যায় বাংলোটি।
মুম্বই থেকে ৯০ কিলোমিটার দূরে, মহারাষ্ট্রের রায়গড়ের আলিবাগে একেবারে সমুদ্র ঘেঁষে সখের বাংলোটি তৈরি করিয়েছিলেন নীরব মোদী। ৩৩ হাজার স্কোয়্যারফুট আয়তনের ওই বাংলোর কিছুটা অংশ মাটির ভিতরে। গাড়ি নিয়ে সরাসরি তার মধ্যে ঢুকে যাওয়ার ব্যবস্থাও ছিল। সুইমিং পুল, পার্ক-সহ ছিল বিনোদনের সবরকম বন্দোবস্তও। সবমিলিয়ে বাংলোটি তৈরি করতে সেইসময় খরচ পড়েছিল প্রায় ২৫ কোটি টাকা। এই মুহূর্তে বাজার দর প্রায় ১০০ কোটি ছাড়িয়েছে। কিন্তু সমুদ্র উপকূলে বাড়ি বানাতে গেলে যে সমস্ত নিয়ম মেনে চলতে হয়, তার ধারেননি নীরব মোদী। নজর দেননি পরিবেশ সংরক্ষণের দিকেও। বরং বেআইনিভাবেই বিলাসবহুল ওই বাংলোটি তৈরি করিয়েছিলেন।
বাংলোর বিরুদ্ধে ২০০৯ সালেই বম্বে হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিল একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। যদিও সেই সময় তাতে বিশেষ আমল দেননি কেউই। তবে পঞ্জাব ব্যাঙ্কের কয়েক হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নীরব মোদীর দেশত্যাগী হওয়ার খবরেই টনক নড়ে স্থানীয় প্রশাসনের। হাইকোর্টের নির্দেশ পেয়ে গত ২৫ জানুয়ারি থেকে শুরু হয় বাংলো ভাঙার কাজ। কিন্তু প্রায় দেড় মাস পেরোতে চললেও এখনও পর্যন্ত কাজ এগোয়নি সেভাবে। কাচের জানলা, দরজা যদিও ভেঙে ফেলা গিয়েছে। মেঝে, পিলার এবং ছাদের চাঙর পর্যন্ত ভাঙা সম্ভব হয়নি। বাংলোর গাঁথনি এতটাই মজবুত যে ছেনি-হাতুড়ি, এমনকি আধুনিক যন্ত্রপাতিও কাজ দেয়নি। বাধ্য হয়ে তাই ডিনামাইট আনা হচ্ছে। ১০০টি বিস্ফোরক ব্যবহার করে আগামী শুক্রবার অর্থাৎ ৮ মার্চ, সকাল ৯টায় বাংলোটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: ‘লোকে বলেছিল হাফ প্যান্ট পরিয়ে মেয়েদের শরীর দেখাতে শেখাচ্ছিস?’
আরও পড়ুন: প্রতিরক্ষা মন্ত্রক থেকেই চুরি গিয়েছে রাফালের নথি! সুপ্রিম কোর্টে জানাল কেন্দ্র
একটি সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রায়গড়ের অতিরিক্ত জেলাশাসক ভরত শিটোলে জানান, “বাংলোর এদিক ওদিক গর্ত খোঁড়ার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। যার মধ্যে ডিনামাইট ভরে দেওয়া হচ্ছে। শুক্রবার সকালে রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে বিস্ফোরণ ঘটানো হবে।”
পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের ১৩ হাজার কোটি টাকা হাতানোর অভিযোগ নীরব মোদীর বিরুদ্ধে। তবে গোয়েন্দাদের টনক নড়ার আগেই দেশ ছেড়ে পালান তিনি। তার পর একবছরেরও বেশি পেরিয়ে গিয়েছে। এখনও পর্যন্ত তাঁর নাগাল পাননি ভারতীয় গোয়েন্দারা।
(দেশজোড়া ঘটনার বাছাই করা সেরা বাংলা খবর পেতে পড়ুন আমাদের দেশ বিভাগ।)