কাশ্মীরে পুলিশি ঘেরাটোপে চলছে এনআইএ-র অভিযান। ছবি: পিটিআই।
জম্মু ও কাশ্মীরের জঙ্গি গোষ্ঠীগুলির অর্থের জোগান বন্ধ করতে অভিযানে নামল জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)। বুধবার সকাল থেকে উপত্যকা জুড়ে শুরু হয় তল্লাশি অভিযান। হানা দেওয়া হয় কর্নাটকের বেঙ্গালুরুর একটি ঠিকানাতেও।
এনআইএ-র তরফে জানানো হয়েছে, শ্রীনগরের ৯টি এবং বান্দিপোরার একটি ঠিকানায় তল্লাশি হয়েছে। এর মধ্যে সংবাদপত্র ‘গ্রেটার কাশ্মীর’-এর মালিকানা সংস্থার দফতরের পাশাপাশি কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, দাতব্য প্রতিষ্ঠান এবং ট্রাস্টের কার্যালয় বা সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলির পরিচালকদের বাড়ি রয়েছে। অভিযানের সময় স্থানীয় পুলিশের সাহায্য নেওয়া হয়।
ওই সংস্থাগুলি নানা সামাজিক প্রকল্প ও ধর্মীয় প্রচারের কাজের নামে বিদেশ থেকে অনুদান সংগ্রহ করত। দেশের বিভিন্ন রাজ্য থেকেও তারা নিয়মতি আর্থিক সাহায্য পেত বলে এনআইএ-র দাবি। তদন্তকারী সংস্থার অভিযোগ, সেই টাকার বড় অংশ ঘুরপথে জঙ্গি সংগঠনগুলির কাছে পৌঁছে যেত।
আরও পড়ুন: আগামী সপ্তাহে অম্বালায় আরও তিনটি রাফাল, এপ্রিলে হাসিমারায়
কাশ্মীরের মানবাধিকার আন্দোলনের নেতা পারভেজ খুররমের বাড়ি, তাঁর সংস্থা ‘জম্মু-কাশ্মীর কোয়ালিশন ফর সিভিল সোসাইটি’-র দফতরে এনআইএ আধিকারিকরা হানা দেন এ দিন। খুররমের সহযোগী পারভেজ আহমেদ বুখারি, আহমেদ মট্টা এবং তাঁদের বন্ধু স্বাতী শেষাদ্রির বাড়িতেও তল্লাশি হয়েছে। তালিকায় রয়েছে, কাশ্মীরে নিখোঁজদের পরিবারের সংগঠন ‘অ্যাসোসিয়েশন অফ পেরেন্টস অফ ডিসঅ্যাপিয়ার্ড পার্সনস’-এর প্রধান পরভিনা অহঙ্গেরের বাড়ি এবং ‘অ্যাথ্রাউট’-এর মতো সামাজিক উন্নয়নের কাজে জড়িত স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এবং ‘জিকে ট্রাস্ট’-এর দফতরে।
জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা পিডিপি সভানেত্রী মেহবুবা মুফতি এনআইএ অভিযানের নিন্দা করে টুইটারে লেখেন, ‘মানবাধিকার আন্দোলনের নেতা খুররম পারভেজ এবং গ্রেটার কাশ্মীরের দফতরে এনআইএ-র এই অভিযান আসলেমত প্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করার উদ্দেশ্যে ভারত সরকারের দমনপীড়ন। প্রতিবাদীদের ভয় দেখাতে বিজেপির পোষ্য হিসেবে কাজ করছে এনআইএ’।
আরও পড়ুন: জীবন সংশয় এবং ব্যয় বহন করলে জেড প্লাস নিরাপত্তা দেওয়া হোক, বলে দিল সুপ্রিম কোর্ট
এ দিন বিকেলে এনআইএ জানিয়েছে, তল্লাশি অভিযানে বেশ কিছু ‘অপরাধমূলক নথি’ এবং বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এ বিষয়ে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২০-বি (অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র), ১২৪-এ (রাষ্ট্রদ্রোহ) এবং ইউএপিএ-র বিভিন্ন ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।