প্রতীকী ছবি।
দেশে ব্রিটেন স্ট্রেনের চোখ রাঙানির মাঝেই ফের সে দেশের সঙ্গে বিমান যোগাযোগ চালু করার সিদ্ধান্ত নিল সরকার।
এই নয়া স্ট্রেনের আতঙ্ক বৃদ্ধির জেরে গত ২৩ ডিসেম্বর থেকে সে দেশের সঙ্গে বিমান যোগাযোগ ছিন্ন করেছিল ভারত। তবে তা আগামী সপ্তাহ থেকে ফের আংশিক ভাবে চালু করা হবে বলে শুক্রবার জানান কেন্দ্রীয় বিমানমন্ত্রী হরদীপ সিংহ পুরী। ৬ জানুয়ারি ভারত থেকে প্রথম উড়ান ব্রিটেনে পাড়ি দেবে। আর সে দেশ থেকে যাত্রী নিয়ে ৮ তারিখ ভারতে আসবে প্রথম বিমানটি। এই বিমান যোগাযোগের জেরে যাতে বিপত্তি আরও না বাড়ে তার জন্য নয়া আচরণবিধিও বিবৃতি জারি করেছে কেন্দ্র।
আপাতত দিল্লি, মুম্বই, বেঙ্গালুরু এবং হায়দরাবাদের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকেই দু’দেশের মধ্যে উড়ান চলাচল করবে। তবে দু’তরফের জন্যেই সপ্তাহে সেই সংখ্যা ১৫টি করে বেঁধে দেওয়া হয়েছে। উড়ান ধরার ৭২ ঘণ্টা আগে ব্রিটেন থেকে আসা যাত্রীদের নিজেদের গত ১৪ দিনের গতিবিধি সংক্রান্ত তথ্য দিল্লি বিমানবন্দরের অনলাইন পোর্টালে (www.newdelhiairport.in) আপলোড করতে হবে। তা ছাড়া, বিমানে ওঠার ৭২ ঘণ্টা আগে করানো কোভিড পরীক্ষার নেগেটিভ রিপোর্টও সঙ্গে আনতে হবে। সংশ্লিষ্ট পোর্টালটিতেও সেটি আপলোড করা বাধ্যতামূলক।
উড়ান নির্দেশিকা
• আগামী ৬ জানুয়ারি থেকে ফের চালু হবে ভারত-ব্রিটেন বিমান চলাচল। ৮ তারিখ সে দেশ থেকে আসা প্রথম বিমান অবতরণ করবে ভারতে। এই পরিপ্রেক্ষিতে নির্দিষ্ট আচরণবিধি ঘোষণা করল কেন্দ্র।
• ৬ জানুয়ারি থেকে ২৩ তারিখ পর্যন্ত দু’তরফেই সপ্তাহে ১৫টি করে মোট ৩০টি বিমান চলবে।
• আপাতত দিল্লি, মুম্বই, বেঙ্গালুরু এবং হায়দরাবাদের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকেই এই উড়ানগুলি চলবে।
• উড়ান ধরার ৭২ ঘণ্টা আগে ব্রিটেন থেকে আসা যাত্রীদের গত ১৪ দিনের গতিবিধি সংক্রান্ত তথ্য দিল্লি বিমানবন্দরের অনলাইন পোর্টালে (www.newdelhiairport.in) আপলোড করতে হবে।
• বিমানে ওঠার ৭২ ঘণ্টা আগে করানো কোভিড পরীক্ষার নেগেটিভ রিপোর্টও সঙ্গে রাখতে হবে। তা ছাড়া সংশ্লিষ্ট পোর্টালটিতেও সেটি আপলোড করতে হবে।
• ভারতের বিমানবন্দরে নামার পর নিজেদের
খরচে যাত্রীদের বাধ্যতামূলক ভাবে কোভিড পরীক্ষা করাতে হবে।
• যাত্রীদের মধ্যে কারও রিপোর্ট পজ়িটিভ এলে বিমানবন্দর থেকেই
সরকারি নিভৃতবাসে নিয়ে যাওয়া হবে তাঁদের।
• আক্রান্ত যাত্রীর পাশের বা আশপাশের আসনের যাত্রীদেরও আলাদা সরকারি কোয়রান্টিনে থাকার ব্যবস্থা করা হবে।
• রিপোর্ট নেগেটিভ এলেও বাড়িতে ১৪ দিনের নিভৃতবাসে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাত্রীদের। সেই নিয়ম যথাযথ ভাবে পালন হচ্ছে কি না তার উপর নজর রাখবে সংশ্লিষ্ট রাজ্য বা জেলা প্রশাসন।
• জিনোমিক সিকোয়েন্সের পরে যদি কারও শরীরে ব্রিটেন স্ট্রেনের সন্ধান
পাওয়া যায় তা হলে বর্তমান নিয়ম অনুযায়ীই ওই
ব্যক্তির নিভৃতাবাসের
ব্যবস্থা করা হবে। রিপোর্ট নেগেটিভ না আসা
পর্যন্ত তাঁকে সেখানেই থাকতে হবে।
• এই সতর্কতাবিধিগুলি যাতে সুষ্ঠু ভাবে পালিত হয় তার জন্য সংশ্লিষ্ট বিমানবন্দরগুলিতে হেল্পডেস্ক তৈরির আর্জি জানানো হয়েছে
কেন্দ্রের তরফে।
তবে ভারতের বিমানবন্দরে নামার পরেও নিজেদের খরচে যাত্রীদের বাধ্যতামূলক ভাবে কোভিড পরীক্ষা করাতে হবে বলে জানানো হয়েছে ওই নির্দেশিকায়। যাত্রীদের মধ্যে কারও রিপোর্ট পজ়িটিভ এলে বিমানবন্দর থেকেই সরাসরি সরকারি নিভৃতবাসে নিয়ে যাওয়া হবে তাঁদের। আক্রান্ত যাত্রীর পাশের বা আশপাশের আসনগুলিতে বসা যাত্রীদেরও আলাদা সরকারি কোয়রান্টিনে থাকার ব্যবস্থা করা হবে। রিপোর্ট নেগেটিভ এলেও বাড়িতে ১৪ দিনের নিভৃতবাসে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাত্রীদের। সেই নিয়ম যথাযথ ভাবে পালন হচ্ছে কি না তার উপর নজর রাখবে সংশ্লিষ্ট রাজ্য বা জেলা প্রশাসন।
এ দিকে ‘ব্রিটেন স্ট্রেন’ নিয়ে চিন্তা অব্যাহত স্বাস্থ্য কর্তাদের। গুজরাতে ব্রিটেন ফেরত চার জনের মধ্যে এই নয়া স্ট্রেনের সন্ধান মিলেছে বলে এ দিন স্বাস্থ্য দফতরের তরফে জানানো হয়েছে। অমদাবাদে অবতরণ করা আরও ১৫ জন করোনা পজ়িটিভের নমুনাও পুণের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজিতে পাঠানো হয়েছে খতিয়ে দেখার জন্য। সেই রিপোর্ট আসা এখনও বাকি। যা না আসা পর্যন্ত স্বস্তি পাচ্ছেন না স্বাস্থ্য কর্তাদের।
রাজ্যে ব্রিটেন ফেরত এক ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা এক জনের শরীরে নয়া করোনা স্ট্রেনের সন্ধান মিলেছে বলে এ দিন জানিয়েছেন কর্নাটকের স্বাস্থ্যমন্ত্রী কে সুধাকর। তিনি জানান, রাজ্যে ব্রিটেন ফেরত মোট ন’জনের শরীরে ওই স্ট্রেনের সন্ধান মিলেছিল। সংস্পর্শে আসা এই নয়া আক্রান্তকে নিয়ে যা দশ হল। তাঁদের চিকিৎসা চলছে। তবে কারও মধ্যে কোনও আশঙ্কাজনক কিছু দেখা যায়নি বলেই জানিয়েছেন মন্ত্রী।