পরিবেশকর্মী রাজেন্দ্র প্রসাদ।
প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরেই গঙ্গা বাঁচাতে নানান আশ্বাস দিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। এমনকি একটি নতুন মন্ত্রকও তৈরি করেন তিনি। তার জন্য আলাদা অর্থ বরাদ্দ করা হয়। কিন্তু গঙ্গার ঘাট বাঁধানো এবং সৌন্দর্যায়ন ছাড়া আর কোনও কাজই প্রায় হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন দেশের প্রথম সারির নদী-বিশেষজ্ঞ রাজেন্দ্র সিংহ।
পরিবেশকর্মী মহলে ‘ওয়াটারম্যান অব ইন্ডিয়া’ নামেই যাঁর অধিক পরিচিতি, সেই রাজেন্দ্র জানাচ্ছেন, গঙ্গা বাঁচানো দূরের কথা, উল্টে দূষণ বেড়েছে। একের পর এক বাঁধ দিয়ে গঙ্গার জলের অবিরাম প্রবাহ নষ্ট করা হয়েছে। ‘‘মোদী সরকারের কাজকর্ম দেখে বলা যায়, গঙ্গার হয়েছে হার্টের অসুখ। কিন্তু তার দাঁতের চিকিৎসা চলছে,’’ রাজেন্দ্রের গলায় বিদ্রুপ।
গঙ্গা বাঁচানোর ডাক দিয়েই তিন মাস আগে গোমুখ থেকে যাত্রা শুরু হয়েছে পরিবেশকর্মীদের। দীর্ঘ পথ পেরিয়ে সেই যাত্রীরা এসে পৌঁছেছেন কলকাতায়। সাগরমেলার সময় গঙ্গাসাগরে সেই যাত্রা শেষ হবে। সেই সঙ্গে গঙ্গার ‘গঙ্গাপ্রাপ্তি’ রুখতে সভার আয়োজন করছেন যাত্রীরা। গঙ্গা বাঁচাতে কী কী করণীয়, সেই বিষয়ে ওই সভা থেকে কেন্দ্রের উদ্দেশে নির্দেশিকাও জারি করবেন তাঁরা।
উদ্যোক্তারা জানাচ্ছেন, পুণ্যার্থীরা মকরসংক্রান্তিতে সাগরসঙ্গমে ডুব দিয়ে পুণ্য অর্জন করতে আসেন। সেই জনসমাগমকে কাজে লাগিয়েই গঙ্গার দূষণ রোধের কাজ করতে চাইছেন তাঁরা। সেই সভায় একেবারে সামনে থাকছেন রাজেন্দ্র। পশ্চিমবঙ্গে ফরাক্কা থেকে গঙ্গাসাগর পর্যন্ত নদীর চেহারা পর্যবেক্ষণ করেছেন তাঁরা। দু’পাড়ের জনবসতি নিয়ে সমীক্ষা করেছেন। মালদহে ভাঙন দেখেছেন। কথা বলেছেন মৎস্যজীবীদের সঙ্গে। গিয়েছেন মুর্শিদাবাদ, নদিয়া, উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন এলাকাতেও। গঙ্গাতীরের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে কথা বলেছেন স্থানীয় বাসিন্দা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, নাগরিক সমাজের সঙ্গেও।
রাজেন্দ্র জানাচ্ছেন, পশ্চিমবঙ্গেও গঙ্গার অবস্থা ভাল নয়। জলপ্রবাহে ঘাটতি রয়েছে। গঙ্গার পাশে জঞ্জাল ডাঁই করে রাখা হচ্ছে। সে-দিকে প্রশাসনের কোনও নজর নেই কেন, সেই প্রশ্নও তুলছেন তিনি।