Kota

কোটায় ফের পড়ুয়ার মৃত্যু! বন্ধ ঘর থেকে উদ্ধার নিট পড়ুয়ার দেহ

পড়ুয়াদের আত্মহত্যার প্রবণতা কমাতে জেলা প্রশাসন একাধিক পদক্ষেপ করেছে। হস্টেলে সিলিং ফ্যানে ‘অ্যান্টি হ্যাঙ্গিং ডিভাইস’ লাগানো, বারান্দায় জাল বসানোর কথাও বলা হয়েছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ১১:১৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

ডাক্তারি প্রবেশিকা পরীক্ষার (নিট) প্রস্তুতি নিতে বছর খানেক আগে রাজস্থানের কোটায় গিয়েছিলেন হরিয়ানার রোহতকের এক পড়ুয়া। কিন্তু পরীক্ষায় বসার আগেই নিজের জীবন শেষ করে দিলেন বছর ২০-এর ওই ছাত্র। রবিবার হস্টেলের ঘর থেকে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। কোনও সুইসাইড নোট পাওয়া না গেলেও পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, আত্মঘাতীই হয়েছেন ওই ছাত্র। এই নিয়ে চলতি বছরে আট জন পড়ুয়ার মৃত্যুর ঘটনা ঘটল ‘কোচিং হাব’ কোটায়।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে খবর, গত বছর রোহতক থেকে কোটায় পড়তে এসেছিলেন ছাত্রটি। কোটারই এক কোচিং সেন্টারে নিটের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। থাকতেন ওই কোচিং সেন্টারের আশপাশেরই এক হস্টেলে। সেই হস্টেলের ঘর থেকেই তাঁর দেহ উদ্ধার হয়েছে।

জানা গিয়েছে, রবিবার সকাল থেকে ওই ছাত্রকে একাধিক বার ফোন করেন তাঁর বাবা-মা। কিন্তু কোনও বারই তিনি ফোন তোলেননি। তাতেই সন্দেহ হয় পরিবারের। তাঁরা যোগাযোগ করেন হস্টেলের নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে। তাঁরা গিয়ে দেখেন, ওই ছাত্রের ঘরের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ। অনেক বার ডাকাডাকি করেও কোনও লাভ হয়নি। তিনিই খবর দেন পুলিশকে। খবর পেয়ে পুলিশ হস্টেলে পৌঁছে ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে দেখে, সিলিং ফ্যান থেকে ওই ছাত্রের দেহ ঝুলছে।

Advertisement

কুনহাদির এক উচ্চপদস্থ পুলিশ অফিসার অরবিন্দ ভরদ্বাজ জানান, ঘটনাস্থল থেকে কোনও সুইসাইড নোট পাওয়া যায়নি। মৃতের পরিবারকে খবর দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। কেন তিনি আত্মঘাতী হলেন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পড়ুয়াদের আত্মহত্যার প্রবণতা কমাতে জেলা প্রশাসন একাধিক পদক্ষেপ করেছে। হস্টেলে সিলিং ফ্যানে ‘অ্যান্টি হ্যাঙ্গিং ডিভাইস’ লাগানো, বারান্দায় জাল বসানোর কথাও বলা হয়েছে। অরবিন্দের কথায়, ‘‘ওই হস্টেলে কেন প্রশাসনের নির্দেশ মোতাবেক ফ্যানের সঙ্গে অ্যান্টি হ্যাঙ্গিং ডিভাইস লাগানো হয়নি, তা-ও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’’

উল্লেখ্য, রাজস্থানের কোটা প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রশিক্ষণের কেন্দ্র হিসাবে বিখ্যাত, বিতর্কিতও। আইআইটিতে ভর্তি হওয়ার পরীক্ষা থেকে শুরু করে চিকিৎসক হওয়ার প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষারও কোচিং হাব বলা হয় কোটাকে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ছাত্র-ছাত্রীরা কোটায় গিয়ে সেখানে থেকে পড়াশোনা করেন। কিন্তু তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ সেই চাপ সহ্য করতে পারেন না। কেউ কেউ কোটায় পড়াশোনার ‘অমানুষিক’ চাপ নিতে না পেরে আত্মঘাতী হন। চলতি বছরে কোটায় এই নিয়ে এটি অষ্টম আত্মহত্যার ঘটনা। গত বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালেও ২৯ জন ছাত্র আত্মহত্যা করেছিলেন কোটায়। ২০২২ সালে সেই সংখ্যাটা ছিল ১৫।

গত মাসে উত্তরপ্রদেশের কনৌজ জেলার বাসিন্দা উরুজের আত্মহত্যার খবর মিলেছিল। তিনিও নিট প্রস্তুতি নিতে কোটায় এসেছিলেন। জওহর নগর এলাকার এক বাড়িতে ভাড়া থাকতেন উরুজ। সেই বাড়ি থেকেই তাঁর দেহ উদ্ধার করেছিল পুলিশ। একের পর এক নিট পরীক্ষার্থীর আত্মহত্যার ঘটনায়, এমনিতেই রাজ্য এবং জেলা প্রশাসন বিব্রত। এ বছরের শুরু থেকেই বেশ কয়েক জন পড়ুয়ার আত্মহত্যায় জেলা প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement