— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
বিনা নোটিসে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে স্কুলে আসছে না কারা? স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে খোঁজ শুরু হল সেই নামগুলোর তালিকা নিয়ে। সেই সঙ্গে নানা স্তরে বিস্তর বৈঠক। ওই স্কুলপড়ুয়াদের পরিবারের সঙ্গে আলোচনা, পুলিশের মতো আইনরক্ষক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় এবং শেষ পর্যন্ত অসময়ে বিয়ে হওয়া থেকে বাঁচাতে আবার তাদের স্কুলে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা। এ ভাবেই ২০২৩-২৪ সালে সারা দেশে ১১.৪ লক্ষেরও বেশি শিশুকে চিহ্নিত করেছে জাতীয় শিশু অধিকার রক্ষা কমিশন। এদের সকলেরই বাল্যবিহারের শিকার হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে বলে কমিশনের একটি সার্বিক রিপোর্টে উঠে এসেছে।
বাল্যবিবাহ রোধ আইনকে অস্ত্র করে কমিশনের প্রতিনিধিরা কাজ করেছেন বাল্যবিবাহ প্রতিরোধের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক, জেলা প্রশাসন-সহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে। তাঁদের মতো অনেকের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকের পরেই রিপোর্টটি তৈরি করা হয়েছে। কোথায় কত শিশুর স্কুলছুট হয়ে বাল্যবিবাহের খপ্পরে পড়ার ঝুঁকি রয়েছে, সেই সংক্রান্ত তথ্য তুলে ধরা হয়েছে সম্প্রতি প্রকাশিত হওয়া ওই রিপোর্টটিতে।
কমিশন জানাচ্ছে, তাদের এই সচেতনতা অভিযানে ১ কোটি ২০ লক্ষেরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছনো গিয়েছে। যে রাজ্যগুলিতে এই অভিযান সবচেয়ে বেশি সাড়া পেয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, ওড়িশা, তামিলনাড়ু ও অন্ধ্রপ্রদেশ। বিশেষত উত্তরপ্রদেশে কমিশনের এই উদ্যোগ ফলপ্রসূ হওয়ায় বাল্যবিবাহের ঝুঁকির মুখে দাঁড়ানো ৫ লক্ষেরও বেশি শিশুকে চিহ্নিত করা গিয়েছে। কর্নাটক ও অসমের মতো রাজ্যে সচেতনতা প্রসারের লক্ষ্যে সমাজের স্থানীয় মাথা, ধর্মীয় নেতা, বিয়ের অনুষ্ঠানে পরিষেবা দানকারী থেকে শুরু করে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী— সবাইকে নিয়ে ৪০ হাজারেরও বেশি বৈঠক করেছেন কমিশনের প্রতিনিধিরা। যদিও এর পরেও কমিশন জানিয়েছে, গোয়া বা লাদাখের মতো কোথাও কোথাও তাদের তথ্য সংগ্রহ বা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে সমস্যা হয়েছে। কোনও কোনও জেলায় দেখা গিয়েছে, বাল্যবিবাহের বিষয়টি এমন ভাবে সংস্কারে ঢুকে পড়েছে যে, তা নির্মূল করাও দুষ্কর।
কমিশনের চেয়ারপার্সন প্রিয়ঙ্ক কানুনগো সব রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলকে রিপোর্টটি-সহ চিঠি পাঠিয়ে বলেছেন, বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের এই গতি ধরে রাখা অত্যন্ত জরুরি। বাল্যবিবাহ বিলোপের বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিয়ে জেলা স্তরে কৌশল গ্রহণের জন্য মুখ্যসচিবদের আর্জি জানিয়েছেন তিনি।