এখনই মুখ্যমন্ত্রী হতে প্রস্তুত শরদ পওয়ারের ভাইপো অজিত। ফাইল চিত্র।
যে কোনও মুহূর্তে তিনি শিবির বদলে পদ্মশিবিরে ঝাঁপ দিতে পারেন বলে জল্পনা চলছে মহারাষ্ট্রের রাজ্য রাজ্যনীতিতে। এই আবহেই এনসিপি নেতা তথা শরদ পওয়ারের ভাইপো অজিত পওয়ার জানালেন, এখনই মুখ্যমন্ত্রী হতে প্রস্তুত তিনি। শনিবার একটি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অজিত বলেন, “২০২৪ কেন, আমরা এখনই মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত।” তবে এই আমরা ‘কারা’, আর এই বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি কী বোঝাতে চেয়েছেন, তা স্পষ্ট করেননি তিনি। আর তাতেই জল্পনা আরও বেড়েছে। প্রশ্ন উঠছে, ২০২৪-এর বিধানসভা ভোট পর্যন্ত অপেক্ষা না করেই কি বিজেপির সাহায্যে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার জন্য ঘুঁটি সাজাচ্ছেন অজিত?
একনাথ শিন্ডের বিদ্রোহের জেরে শিবসেনায় ভাঙন এবং উদ্ধব ঠাকরের মুখ্যমন্ত্রিত্ব হাতছাড়া হওয়ার পরে মহারাষ্ট্রে বিরোধী জোট ‘মহাবিকাশ আঘাডী’র বৃহত্তম দল হয়েছে এনসিপি। দলের পরিষদীয় নেতা হিসাবে গত জুলাই মাসে বিরোধী দলনেতা হয়েছেন অজিত। তার আগে উদ্ধব সরকারের উপমুখ্যমন্ত্রী ছিলেন তিনি। সেই প্রসঙ্গেই অজিতকে প্রশ্ন করা হয় মহারাষ্ট্রের পরবর্তী বিধানসভা নির্বাচনে বিরোধী জোটের বৃহত্তম শরিক হিসাবে এনসিপি মুখ্যমন্ত্রী পদ দাবি করবে কি না। তার উত্তরেই অজিত ওই কথা বলেন। ২০০৪ সালের উদাহরণ টেনে তিনি জানান, ২০০৪ সালের নির্বাচনে জোটসঙ্গী কংগ্রেসের চেয়ে বেশি আসন পাওয়ায় হাত শিবিরের আপত্তি সত্ত্বেও মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন দলের নেতা আরআর পাতিল। অন্য দিকে কর্নাটক ভোটের তারকা প্রচারকের তালিকা থেকে ভাইপো অজিতের নাম বাদ দিয়েছেন এনসিপি প্রধান পওয়ার। তার পরেই অজিতের এই মন্তব্যে অন্য ইঙ্গিত খুঁজে পাচ্ছেন কেউ কেউ। ঘনিষ্ঠ বিধায়কদের নিয়ে অজিত দল ছাড়লে এনসিপি সঙ্কটে পড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
২০১৯-এর বিধানসভা ভোটের পরেও এনসিপি প্রধান শরদের ভাইপো অজিত ‘বিদ্রোহী’ হয়েছিলেন। তাঁর সমর্থন পেয়ে মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিয়েছিলেন বিজেপির দেবেন্দ্র ফডণবীস। অজিত হন উপমুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু এনসিপির পরিষদীয় দলে ভাঙন ধরাতে ব্যর্থ হয়ে ইস্তফা দিতে হয় তাঁদের দু’জনকে। এর পর অজিত আবার শরদের শিবিরে আশ্রয় নেন। তাঁকে শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরের নেতৃত্বাধীন মহাবিকাশ আঘাডী জোট সরকারের উপমুখ্যমন্ত্রী করেছিলেন শরদ।
মহারাষ্ট্রে এখন শিবসেনা ভেঙে বেরিয়ে আসা শিন্ডের গোষ্ঠীর সঙ্গে বিজেপির জোট সরকার চলছে। কিন্তু দলত্যাগ-বিরোধী আইনে শিন্ডে এবং তাঁর বিধায়কদের বিধায়ক পদ খারিজ করতে পারে সুপ্রিম কোর্ট। সম্ভাব্য সেই পরিস্থিতিতে শিন্ডের পরিবর্তে অজিতের সঙ্গে হাত মেলানোর ‘বিকল্প পরিকল্পনা’ বিজেপি তৈরি করেছে বলে মরাঠা রাজনীতির কারবারিদের একাংশ মনে করছেন।