ফাইল চিত্র।
মাঝখানে রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডার। এক দিকে যুব কংগ্রেস। অন্য দিকে দিল্লি পুলিশ। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানির বাড়ির সামনে দিল্লি পুলিশের সঙ্গে যুব কংগ্রেসের কর্মীদের রীতিমতো টানাহ্যাঁচড়া চলল।
আটা, দইয়ের উপরে জিএসটি বাড়ানোর প্রতিবাদে সোমবার মহিলা কংগ্রেস কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখিয়েছিল। আজ রান্নার গ্যাসের দাম আরও ৫০ টাকা বাড়ায় যুব কংগ্রেসের কর্মীরা সিলিন্ডার নিয়ে মোদী সরকারের নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রী স্মৃতি ইরানির বাড়ির সামনে হাজির হলেন। মনমোহন সরকারের আমলে রান্নার গ্যাসের দাম বাড়ায় স্মৃতি সিলিন্ডার নিয়ে রাস্তায় নেমেছিলেন। কংগ্রেসের প্রশ্ন, এখন স্মৃতির মতো মোদী সরকারের মন্ত্রিসভায় যে ১১ জন মহিলা মন্ত্রী রয়েছেন, তাঁরা কোথায়? তাঁরা গৃহস্থের প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় খরচের জিনিসপত্রের দাম নিয়ে কিছু বলছেন না কেন? যখন আন্তর্জাতিক বাজারে অশোধিত তেলের দাম কমছে, তখন কেন রান্নার গ্যাসের দাম বাড়ছে, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। কংগ্রেস মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে আগামিকাল ফের রাস্তায় নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ফের ৫০ টাকা প্রতি সিলিন্ডার দাম বাড়ায় রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডারের দাম দিল্লিতে ১০৫০ টাকা ছাড়িয়েছে, কলকাতায় তা আরও বেশি। শুধু কংগ্রেস বা অন্যান্য বিরোধী দল নয়, আজ বিজেপি সাংসদ বরুণ গান্ধীও রান্নার গ্যাসের দাম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। বরুণের অভিযোগ, যখন দেশে বেকারত্ব চরমে, তখন ভারতের নাগরিকদের বিশ্বে সব থেকে দামি এলপিজি কিনতে হচ্ছে। গরিবদের জন্য বিনা মূল্যে রান্নার গ্যাসের সংযোগ পাইয়ে দিতে উজ্জ্বলা প্রকল্প চালু করার পরে নরেন্দ্র মোদী বলতেন, এরপর থেকে আর মহিলাদের ধোঁয়ার মধ্যে রান্না করতে হবে না। আজ সে দিকে ইঙ্গিত করে বরুণ বলেছেন, ‘‘রান্নার গ্যাসের সংযোগের খরচ ১,৪৫০ টাকা থেকে বেড়ে ২,২০০ টাকা হয়েছে। সংযোগ পেতে অর্থ জমার পরিমাণ ২,৯০০ টাকা থেকে বেড়ে ৪,৪০০ টাকা হয়েছে। এমনকি, সিলিন্ডারের রেগুলেটরের দামও ১০০ টাকা বেড়েছে। গরিবের রান্নাঘর ফের ধোঁয়ায় ভরছে।’’
রাহুল ও প্রিয়ঙ্কা গান্ধীও আজ রান্নার গ্যাসের দাম বৃদ্ধি নিয়ে মোদী সরকারকে নিশানা করেছেন। রাহুলের বক্তব্য, মোদী সরকার সংবাদমাধ্যমের শিরোনাম সামলাতে ব্যস্ত। কিন্তু অর্থনীতি তারা সামলাতে পারছে না। ইউপিএ-জমানায় প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, টাকার দাম সেই দেশেই পড়ে, যেখানে সরকার দুর্নীতিগ্রস্ত হয়। এখন টাকার দাম ডলারের তুলনায় ৭৯.৩৬ টাকায় পৌঁছে রেকর্ড পরিমাণ তলানিতে ঠেকেছে। মোদী বলেছিলেন, ২০১৪-তে মূল্যবৃদ্ধি হেডলাইন হত। এখন মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে চর্চাই হয় না। অথচ এথন সিলিন্ডারের দাম ১,০৫৩ টাকায় (দিল্লিতে) পৌঁছেছে। মোদী বলেছিলেন, প্রতি বছর ২ কোটি চাকরি হবে। দেশে শুধু জুন মাসেই ১.৩ কোটি চাকরি গিয়েছে। প্রিয়ঙ্কাও প্রধানমন্ত্রীকে নিশানা করে বলেন, ‘‘বিজেপি ও তার শিল্পপতি বন্ধুরা জনতাকে লুট করছে। বিজেপির জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে গরিব কল্যাণের কথা বলে গত দু’তিন দিনে আটা, সবজি, দই, পনিরে ৫ শতাংশ জিএসটি চাপিয়েছে। আজ রান্নার গ্যাসের দাম ৫০ টাকা বাড়িয়ে গরিব-মধ্যবিত্তর কোমর ভেঙে দিয়েছে।’’ সিপিএমের সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, ‘‘মোদী সরকার ভারতকে বিশ্বের দ্রুততম গতিশীল অর্থনীতি হিসেবে প্রচার করছে। বাস্তব হল, জুন মাসে কর্মসংস্থানের সংখ্যা ৪০.৪০ কোটি থেকে ৩৯ কোটিতে নেমে এসেছে। প্রায় ১.৪ কোটি চাকরি গিয়েছে।’’