বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল। ছবি সংগৃহীত
জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল বনাম বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের টানাপড়েন আর আড়ালে রইল না বলেই মনে করছে রাজনৈতিক সূত্র।
কোভিডের দ্বিতীয় ধাক্কায় আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে এমনিতেই মুখ পুড়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। ব্রিটেন, আমেরিকার শীর্ষ সংবাদপত্রগুলিতে তীব্র আক্রমণ করা হয়েছে প্রধানমন্ত্রীকে। মোদী সরকারের প্রশাসনিক ব্যর্থতার পাশাপাশি ব্যঙ্গ করা হয়েছে ব্যক্তি মোদীর ভাবমূর্তিকেও। উঠে এসেছে গুজরাতের সাম্প্রদায়িক অশান্তি থেকে হালের কৃষক আন্দোলন প্রসঙ্গ এমনকি অতিমারির সময়েও ২০ হাজার কোটি টাকা খরচ করে সেন্ট্রাল ভিস্টা প্রকল্পের সমালোচনাও।
সূত্রের মতে, আন্তর্জাতিক মাটিতে তৈরি হওয়া এই মোদী-বিরোধী ভাষ্যের মোকাবিলা নিয়ে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ খোদ প্রধানমন্ত্রী। এই পরিস্থিতিতে বিদেশনীতির প্রশ্নে বাড়তি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালকে। রাজনৈতিক সূত্রের মতে, ডোভাল এবং জয়শঙ্করের পারস্পরিক সম্পর্ক মধুর নয়। এর আগেও গত বছর বিদেশমন্ত্রী যখন পূর্ব লাদাখে চিনা অনুপ্রবেশের সঙ্কট সামলানোর জন্য চেষ্টা করছিলেন, তখন হঠাৎ করেই আসরে আনা হয়েছিল ডোভালকে। চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই-র সঙ্গে সমান্তরাল ভাবে কথা শুরু করেছিলেন তিনি।
‘দ্য ইকনমিস্ট’, ‘দ্য অস্ট্রেলিয়ান’, ‘দ্য ল্যান্সেট’, ‘দ্য গার্ডিয়ান’-এর মতো বিদেশি পত্রপত্রিকায় মোদীর চূড়ান্ত সমালোচনার পর বিভিন্ন দেশে নিযুক্ত ভারতীয় দূতদের সঙ্গে ভিডিয়ো বৈঠক করেছিলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। অভিযোগ, সেই বৈঠকে মোদী সরকার ও প্রধানমন্ত্রীর ভাবমূর্তি মেরামত করা এবং সরকার কী ভাবে কোভিড সামলাচ্ছে তার ভাষ্য সংশ্লিষ্ট দেশগুলিতে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য কোনও নির্দেশই দেওয়া হয়নি। কিন্তু সেটাই জয়শঙ্করের কাছে প্রত্যাশিত ছিল। জয়শঙ্কর ওই বৈঠকে মোদীর ভাবমূর্তি বাড়ানোর চেষ্টার বদলে অক্সিজেন, প্রয়োজনীয় ওষুধ এবং চিকিৎসা সরঞ্জাম আপৎকালীন ভিত্তিতে আমদানির দিকেই জোর দিয়েছিলেন বলে সূত্রের খবর।
আপাতত তালিবানের একটি অংশের সঙ্গে আলোচনার দরজা খোলা, পাকিস্তানের সঙ্গে ব্যাক চ্যানেল কথাবার্তা শুরু করা, চিন নীতি— সব কিছুই ডোভাল নিয়ন্ত্রণ করছেন বলে জানা গিয়েছে। যা নিঃসন্দেহে জয়শঙ্করের অস্বস্তির কারণ।