রাহুল গাঁধী। ফাইল চিত্র।
ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় বেআইনি ভাবে অর্থ লেনদেনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গত বৃহস্পতিবার তলব করেছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। কিন্তু বিদেশে থাকাকালীন বুধবার ইডি-র তলব পেয়ে কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী জানিয়ে দিয়েছিলেন ২৪ ঘণ্টার নোটিসে তাঁর পক্ষে হাজিরা দেওয়া সম্ভব নয়। শুক্রবার রাহুল গাঁধীকে নতুন নোটিস পাঠিয়েছে ইডি। আগামী ১৩ জুন তাঁকে ইডি-র দফতরে হাজির হতে বলা হয়েছে।
বুধবার পাঠানো ইডি-র ওই নোটিসে আগামী ৮ জুন জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হয়েছিল কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীকে। কিন্তু তিনি করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় আপাতত নোটিস পাঠানো হচ্ছে না বলে ইডি সূত্রের খবর।
জওহরলাল নেহরু প্রতিষ্ঠিত ন্যাশনাল হেরাল্ড সংবাদপত্র নিয়ে ২০১৩ সালে, মনমোহন সিংহের জমানাতেই দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছিল বিজেপি। ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিষয়টি নিয়ে নতুন করে জলঘোলা শুরু হয়। যার মূল হোতা ছিলেন বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামী। তাঁর অভিযোগ, ‘অ্যাসোসিয়েটেড জার্নালস লিমিটেড’ নামে যে সংস্থার হাতে সংবাদপত্রটির মালিকানা ছিল, বাজারে ৯০ কোটি টাকা দেনা ছিল তাদের। যার বেশিরভাগটাই কংগ্রেসের কাছ থেকে নেওয়া।
২০০৮ সালে সংবাদপত্রটির প্রকাশনা বন্ধ হয়ে যায়। সেই অবস্থাতেই সংস্থাটি অধিগ্রহণ করে সনিয়া, রাহুল এবং শীর্ষস্থানীয় কংগ্রেস নেতাদের ‘ইয়ং ইন্ডিয়ান প্রাইভেট লিমিটেড’ সংস্থা। যার পর ন্যাশনাল হেরাল্ডের কয়েক হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি ইয়ং ইন্ডিয়ানের দখলে চলে আসে। ৯০ কোটি টাকা দেনার বোঝাও চাপে তাদের ঘাড়ে।
এর কিছু দিন পর ‘দেনার টাকা উদ্ধার করা সম্ভব নয়’ বলে কারণ দেখিয়ে কংগ্রেসের তরফে ঋণের টাকা মকুব করে দেওয়া হয়। এখানেই আপত্তি তোলেন স্বামীর। তাঁর যুক্তি, কংগ্রেস রাজনৈতিক দল। তাদের কোনও কর দিতে হয় না। কোনও বাণিজ্যক সংস্থাকে ঋণ দেওয়াও তাদের এক্তিয়ারের বাইরে। ২০১৫-র গোড়ায় মামলার তদন্তের ভার যায় ইডি-র হাতে।
যদিও কংগ্রেস নেতৃত্বের পাল্টা দাবি, ইয়ং ইন্ডিয়া অলাভজনক সংস্থা। এই সংস্থা কোনও মালিককে ডিভিডেন্ট (মুনাফার ভাগ) দিতে পারে না। কোনও সম্পত্তির হাতবদল বা আর্থিক লেনদেনও হয়নি। বস্তুত, প্রথম দফার তদন্তের পর ইডি কংগ্রেসের দাবিকেই মান্যতা দিয়ে মামলাটি বন্ধ করার সুপারিশ করেছিল। কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত খারিজ করে তড়িঘড়ি ইডি-র তৎকালীন অধিকর্তা রাজন কাটোচকে সরিয়ে দেয় নরেন্দ্র মোদী সরকার।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।