টিকার মহড়া। ছবি: পিটিআই।
দেশ জুড়ে করোনার গণ-টিকাকরণ শুরুর দিন চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে আগামী সোমবার সব মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বসবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সূত্রের মতে, আজ সারা দেশে হওয়া গণ-টিকাকরণের মহড়ায় কী ধরনের সমস্যা দেখা দিয়েছে, রাজ্যগুলির কোনও চাহিদা রয়েছে কি না— সে সব নিয়েও ওই বৈঠকে কথা হতে পারে।
রাজ্যগুলিতে টিকাকরণের পরিকাঠামো খতিয়ে দেখতে আজ দেশ জুড়ে দ্বিতীয় বার মহড়া তথা ‘ড্রাই রান’ হয়। এই দফায় ৭৩৬টি জেলায় ওই ড্রাই রান হয়েছে। টিকা দেওয়ার প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে আজ চেন্নাই যান কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন। তিনি বলেন, ‘‘সব রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ, আজকের মহড়ার পরে কারও কোনও সমস্যা হলে কেন্দ্রকে জানান।’’ রাজ্যগুলিকে তাঁর আশ্বাস, খুব দ্রুত প্রতিষেধক পৌঁছে যাবে।
জরুরি ভিত্তিতে ব্যবহারের প্রশ্নে গত ৩ জানুয়ারি দু’টি প্রতিষেধককে ছাড়পত্র দিয়েছিল ড্রাগস কন্ট্রোলার জেনারেল অব ইন্ডিয়া (ডিসিজিআই)। একটি হল অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও অ্যাস্ট্রাজ়েনেকা সংস্থার তৈরি কোভিশিল্ড। ভারতে ওই টিকা উৎপাদনের দায়িত্বে রয়েছে পুণের সিরাম ইনস্টিটিউট। দ্বিতীয়টি ভারত বায়োটেকের কোভ্যাক্সিন। প্রথম ধাপে যে এক কোটি স্বাস্থ্যকর্মী ও দু’কোটি প্রথম সারির কোভিড-যোদ্ধাকে টিকা দেওয়া হবে— তাঁদের কোভিশিল্ড দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। যদিও সূত্রের মতে, এখনও সরকারি ভাবে কোনও সংস্থাকেই টিকা সরবরাহের বরাত দেওয়া হয়নি। এক-দু’দিনের মধ্যে তা দেওয়া হবে। তিন কোটিকে টিকা দেওয়ার জন্য মোট ৪৮০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে অর্থ মন্ত্রক।
স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দাবি, টিকায় ছাড়পত্র দেওয়ার দশ দিনের মধ্যেই টিকাকরণ শুরুর পরিকাঠামো রয়েছে ভারতের। এই দাবি নির্ভুল হলে আগামী সপ্তাহের যে কোনও দিনে টিকাকরণ শুরু হতে পারে। আজ প্রধানমন্ত্রীর দফতর টুইট করে বলে, ‘‘দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে ও গণ-টিকাকরণ শুরুর দিনক্ষণ ঠিক করতে প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীরা আগামী সোমবার বিকেল ৪টেয় ভিডিয়ো-বৈঠক করবেন।’’ টিকাকরণের দু’টি সম্ভাব্য তারিখ নিয়ে জল্পনা রয়েছে। প্রথমটি ১২ জানুয়ারি, স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিন। সূত্রের মতে, ভোটমুখী বাংলাকে বার্তা দিতে ওই দিনে টিকাকরণ শুরুর ঘোষণা করতে পারেন মোদী। এ ছাড়া, আগামী ১৪ জানুয়ারি মকর সংক্রান্তির দিন বা তার পরের কোনও তারিখে টিকাকরণ শুরুর ভাবনা-চিন্তাও রয়েছে। ড্রাই আইসে মুড়ে কী ভাবে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে টিকা নিয়ে যেতে হবে, সে বিষয়ে বিমান সংস্থাগুলির উদ্দেশে আজ এক প্রস্ত নির্দেশিকা জারি করেছে বিমান নিয়ন্ত্রক সংস্থা ডিজিসিএ।
মানবদেহে পরীক্ষামূলক প্রয়োগের তৃতীয় দফার ফলাফল আসার আগেই কোভ্যাক্সিনকে ছাড়পত্র দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন অনেকে। আজ অবশ্য এই বিষয়ে সরকারের পাশে দাঁড়িয়েছে চিকিৎসক সংগঠন ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ)। বিবৃতি দিয়ে তারা বলেছে, ‘‘কোভ্যাক্সিন এবং কোভিশিল্ড প্রতিষেধক আমাদের গর্বিত করেছে। ভারতীয় প্রতিষেধকগুলি মানবদেহে শক্তিশালী অ্যান্টিবডি তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে। সেগুলি কার্যকরী ও সস্তা। সংগঠনের সমস্ত সদস্যকে গণ-টিকাকরণে অংশ নিতে অনুরোধ জানাচ্ছি।’’