প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক সেরে বেরিয়ে মুখ ভার বিজেপির এক সাংসদের। ‘বুড়ো’ বয়সে কোথা থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ৩ লক্ষ ফলোয়ার জোগাড় করবেন! ভোটের বাকি এক বছর। এখন মাঠে নেমে লড়াই করবেন, না দফতরে বসে টুইট-ফেসবুক করবেন!
অথচ প্রধানমন্ত্রী হাবেভাবে বুঝিয়ে দিয়েছেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় অনুগামী সংখ্যার উপরেও নির্ভর করবে পরের ভোটে টিকিট পাকা কি না! সম্প্রতি দলের সাংসদদের ডেকে এমনই নিদান দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। গত লোকসভা ভোটের সময় সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমেও যুদ্ধটা তিনিই শুরু করেছিলেন। চার বছর পরে সেই লড়াইয়ে নিজেই অনেক পিছিয়ে পড়েছেন।
ভোটের আগে সাংসদদের যেমন গুঁতো দিচ্ছেন, তেমনই সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের পুরনো দাপট ফিরে পেতে মরিয়া মোদী। আজ নিজেই টুইট করে জানান, সোশ্যাল মিডিয়ার ‘বন্ধু’দের সঙ্গে তিনি দেখা করতে চান। তবে শর্ত আছে। যাঁরা কেন্দ্রের মুদ্রা প্রকল্পের সাফল্যের গল্প তাঁকে শোনাবেন, তাঁদের সঙ্গেই সাক্ষাৎ করবেন তিনি।
শর্ত নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি বিরোধীরা। তাঁদের বক্তব্য, সমালোচনা সহ্য করতে পারেন না বলেই মোদী গত চার বছরে একবারও সাংবাদিক সম্মেলনে প্রশ্নের মুখোমুখি হননি। সোশ্যাল মিডিয়ার ‘বন্ধু’রাও সমালোচনা করতে পারেন, এই আশঙ্কায় সেখানেও শর্ত চাপিয়েছেন! কংগ্রেস নেতারা বলছেন, ‘‘নিজের তৈরি করা সাম্রাজ্যে নিজেরই পতন দেখছেন প্রধানমন্ত্রী।’’ তাঁদের মতে, সোশ্যাল মিডিয়ায় কংগ্রেসের সমর্থনে যে বিশিষ্টরা প্রচার করেন, সম্প্রতি দিল্লিতে দলের ওয়ার-রুমে তাঁদের সঙ্গে ঘণ্টা দুয়েক কথা বলেছেন রাহুল গাঁধী। ছবি তুলেছেন। মতের আদানপ্রদানও করেছেন। সেই পথই ধরতে চান মোদী।
কিন্তু বিজেপির বক্তব্য, প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগে থেকেই মোদী সোশ্যাল মিডিয়ায় সক্রিয়। সেখানে তাঁর ফলোয়ার প্রায় ৪ কোটি। রাহুল গাঁধী তাঁর ধারেকাছেও নেই। মাত্র ৬৫ লক্ষ ফলোয়ার তাঁর। পাল্টা কংগ্রেসের বক্তব্য, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মোদীর ফলোয়ার বেশি থাকতে পারে, কিন্তু রাহুলের টুইটই আজকাল বেশি ‘রি-টুইট’ হয়। এতে স্পষ্ট, জনপ্রিয়তা কার বেশি।
বিজেপির তথ্য-প্রযুক্তি মোর্চার প্রধান অমিত মালব্যের দাবি, ‘‘ভুয়ো অ্যাকাউন্ট দিয়ে রাহুল গাঁধীর টুইট রি-টুইট করানো হয়।’’ পাল্টা বিরোদীদের দাবি, মাত্র ক’দিন আগেই এক রিপোর্টে জানা গিয়েছে, মোদীর অর্ধেক ফলোয়ারই ভুয়ো! আর কংগ্রেসের তথ্যপ্রযুক্তি সেলের প্রধান দিব্যা স্পন্দনা বলেন, ‘‘সোশ্যাল মিডিয়ায় কংগ্রেস অনেক পরে সক্রিয় হয়েছে। সে দিক থেকে বিজেপি অনেকটা এগিয়ে ছিল। কিন্তু এখন কংগ্রেস আর পিছিয়ে নেই।’’