নরেন্দ্র মোদী।
লোকসভা ও বিধানসভা ভোট এক সঙ্গে করা নিয়ে লাগাতার চাপ দিচ্ছেন নরেন্দ্র মোদী। বিরোধীরা মনে করছে, এই চাপ বজায় রেখে গোটা দশেক রাজ্যে বিধানসভা ভোটের সঙ্গেই লোকসভার ভোট করিয়ে নিতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী।
কংগ্রেসের এক নেতা আজ বলেন, বছরের শেষে এমনিতেই রাজস্থান, ছত্তীসগঢ়, মধ্যপ্রদেশ ও মিজোরামে বিধানসভা ভোট। এই সব রাজ্যে বিজেপির অবস্থা ভাল নয়। সেখানে হারের আশঙ্কাতেই এ বছরের নভেম্বর-ডিসেম্বর থেকে সামনের বছর ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময়ে বিধানসভার সঙ্গে লোকসভার নির্বাচনটিও করিয়ে নিতে চাইছেন নরেন্দ্র মোদী। নবীন পট্টনায়ক ইতিমধ্যেই এক সঙ্গে ভোটে সম্মতি জানিয়েছেন। বিজেপি শাসিত হরিয়ানা, ঝাড়খণ্ড, মহারাষ্ট্রেও সামনের বছর বিধানসভা ভোট। সেগুলিও লোকসভার সঙ্গে করা হতে পারে। তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ ও তেলঙ্গানাকেও এক সঙ্গে ভোটে রাজি করিয়ে নিতে পারেন মোদী।
বিষয়টি আর শুধু ঘরোয়া আলোচনাতেই সীমাবদ্ধ নেই। লালু প্রসাদের পুত্র তেজস্বী আজ প্রকাশ্যেই বলেছেন, ‘‘নীতীশ কুমারকে ত্যাজ্য করে বিজেপি লোকসভার সঙ্গেই বিহারের ভোট করিয়ে নিতে পারে। তৈরি থাকুন।’’ দেবগৌড়ার দলের দানেশ আলিও আজ দিল্লিতে বলেন, ‘‘রাহুল গাঁধীর সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী লোকসভা ও দশটির বেশি রাজ্যে বিধানসভা ভোট করিয়ে নেওয়ার ফন্দি আঁটছেন। নবীনের পর চন্দ্রবাবু নায়ডু কিংবা চন্দ্রশেখর রাও-ও আপত্তি করবেন না।’’ কংগ্রেসের রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালাও বলেন, ‘‘গত কাল খরিফ শস্যের সহায়ক মূল্য বাড়ানোর ঘোষণাতেই স্পষ্ট, লোকসভা ভোট এগোচ্ছে।’’
বিষয়টি নিয়ে আরও হাওয়া উঠেছে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের গত কালের মন্তব্যের পর। ১৫ অগস্টের পরই তিনি লোকসভা ভোটের জন্য দলকে ঝাঁপানোর নির্দেশ দিয়েছেন। বিজেপি অবশ্য প্রকাশ্যে কিছু বলছে না। কিন্তু বিরোধীরা এখন প্রকাশ্যেই লোকসভা ভোট এগোনোর কথা বলতে শুরু করেছে। তাতে অবশ্য তাদের নিজেদের রাজনীতিও আছে। তাড়াতাড়ি ভোটের কথা বলে নিজেদের কর্মীদেরও তৈরি রাখতে চাইছেন নেতারা। কিন্তু মোদী এক সঙ্গে সব ভোট যাতে না-করিয়ে নিতে পারেন, সে জন্য এককাট্টা হচ্ছে বিরোধীরা। সিপিএমের সীতারাম ইয়েচুরিও আজ আইন কমিশনের চেয়ারম্যানকে চিঠিতে জানিয়েছেন, এক সঙ্গে ভোট করানো সংবিধান-বিরোধী। চলতি সপ্তাহেই কমিশন এক সঙ্গে ভোট নিয়ে মত জানতে সব দলকে ডেকেছে।