গুজরাতে ভোট মিটেছে। এখনও রাহুল গাঁধীর ভূত তাড়া করছে নরেন্দ্র মোদীকে!
গুজরাতে আগামিকাল নতুন মুখ্যমন্ত্রীর শপথে মোদীকে স্বাগত জানাতে বড়সড় আয়োজন করেছে দল। তার আগে আজ দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবালকে বাদ দিয়ে দিল্লি-নয়ডা মেট্রোর উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী। আপের প্রশ্ন, এটাই কি মোদীর যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো? অবশ্য এই খোঁচা মোদী গায়ে মাখেননি। বরং গুজরাতে ৯৯-এ থমকে যাওয়ার ক্ষত যে এখনও মেটেনি, সেটাই ফুটে ওঠে তাঁর বক্তৃতায়। গুজরাত ভোটের আগে-পরে রাহুল লাগাতার যে-সব অভিযোগ ছুড়ে দিচ্ছেন, সুকৌশলে তারই জবাব দিয়েছেন মোদী।
অভিযোগ এক, মোদী মডেল বলে কিছু নেই। পুরো ভাঁওতা।
এর জবাব দিতে মোদী আঁকড়ে ধরেন অটলবিহারী বাজপেয়ীকে। নিজের নামাঙ্কিত উন্নয়নের মডেলটিই কার্যত বাজপেয়ীকে ‘অর্ঘ্য’ দিলেন তাঁর জন্মদিনে। বোঝালেন, সুশাসন ও উন্নয়নে ‘বাজপেয়ী মডেল’ই তাঁর মন্ত্র। বাজপেয়ীই ‘ভারত মার্গ-বিধাতা’। তাঁর সুশাসনের মডেল মেলে ধরে বোঝালেন, তাঁর মডেলও সকলকে সামিল করেই। পশ্চাদ্মুখী নয়।
দ্বিতীয় অভিযোগ, মোদী দেশকে মধ্যযুগের অন্ধবিশ্বাসে ঠেলে দিচ্ছেন।
এ বার মোদীর হাতিয়ার যোগী আদিত্যনাথ। ১৯৮৮-তে বীর বাহাদুর সিংহ নয়ডা যাওয়ার পরেই কুর্সি খোয়ানোয় বলা হতো, ওখানে গেলেই গদি যায়। মুখ্যমন্ত্রী থাকা কালে তাই নয়ডাকে এড়িয়ে গিয়েছেন রাজনাথ সিংহ, কল্যাণ সিংহ, অখিলেশ যাদব। মায়াবতী গিয়েছিলেন ২০১২-তে। তার পরে আর ক্ষমতায় আসেননি। গেরুয়াধারী যোগী কিন্তু আজ হাজির হন নয়ডার মঞ্চে। তাঁকে পাশে নিয়ে মোদী বললেন, ‘‘পোশাকের কারণে বিভ্রান্ত ছড়ানো হয় যে, যোগীর মানসিকতা আধুনিক হতে পারে না। তিনি পুরনো বিশ্বাসে বাঁধা।’’ এর সঙ্গেই মোদী মনে করান, তিনিও মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময় ৬-৭টি জায়গাকে ‘অপয়া’ বলা হতো। প্রথম বছরেই সে সব জায়গায় গিয়েছিলেন। তিনিই গুজরাতে সব থেকে বেশি দিন মুখ্যমন্ত্রী থেকেছেন। মোদীর তাই বক্তব্য, বিশ্বাস থাকা প্রয়োজন। কিন্তু, অন্ধবিশ্বাসের কোনও জায়গা নেই তাঁর উন্নয়নের টিমে। দেশ এখন বিজ্ঞান-প্রযুক্তির দিকে হাঁটছে।
অভিযোগ তিন, হাতে গোনা কয়েক জন শিল্পপতির জন্যই যা কিছু করেন মোদী। মেট্রো উদ্বোধন করে মোদী বলেন, ‘‘এতে নিশ্চয়ই প্রথম দশ জন শিল্পপতি চড়বেন না! চড়বেন আমার-আপনার মতো লোকই।’’
মোদীর যুক্তিগুলি মানতে নারাজ কংগ্রেস নেতারা। তবে তাঁরা মজাই পেয়েছেন এই ‘রাহুলময়’ বক্তৃতায়।