বিজেপিপন্থীরা বিশিষ্টজনদের একাংশকে ‘আরবান নকশাল’ বলে আক্রমণ করেন। তারই প্রতিবাদে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরছে এই ছবি।
মহারাষ্ট্রের ভীমা কোরেগাঁয়ে অশান্তির পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘গুরুজি’ সম্ভাজি বিড়ের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছিলেন দলিত নেতারা। দলিতদের আক্রমণে প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত বিড়ে সে সময় নিখোঁজ হয়ে যান। সেই ঘটনার সাত মাস পরে সেই বিড়ে শিবিরেরই পাল্টা এফআইআর-এ গৃহবন্দি হয়েছেন ওই দলিত আন্দোলনের প্রতি সহমর্মিতা দেখানো সমাজকর্মীরা। এঁদের বিরুদ্ধে যিনি এফআইআর করেছেন, সেই তুষার দামগুড়ে আদতে সম্ভাজি বিড়েরই শিষ্য।
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে অধ্যাপক এবং কবি ভারাভারা রাও-সহ পাঁচ জনকে পুণে আদালতে নিয়ে যাওয়ার পর সরকার পক্ষের উকিল নিজেই বলেছেন, এঁরা ‘ফাসিস্ত-বিরোধী’ ফ্রন্ট তৈরি করেছেন। সরকার পক্ষের উকিলের মন্তব্য নিয়েই প্রশ্ন উঠছে। বিজেপি সরকারকেই কার্যত ফাসিস্ত হিসেবে চিহ্নিত করেছেন তিনি। গৃহবন্দি ভারাভারা রাও আজ এই প্রসঙ্গে সরব হয়ে বলেছেন, ‘‘মিথ্যা মামলা সাজানো হয়েছে। ফাসিবাদী নীতির বিরুদ্ধে লড়াইকে ষড়যন্ত্র বলা হলে সেটাই সব চেয়ে বড় ষড়যন্ত্র। ভীমা কোরেগাঁওয়ে দলিতদের ওপর হামলা নিয়ে মামলা করতে হলে তো রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে সেটা করা উচিত। মানবাধিকার কর্মীদের বিরুদ্ধে নয়।’’ আজ সাংবাদিক সম্মেলনে লেখিকা অরুন্ধতী রায়ও পুণে আদালতের প্রসঙ্গটি তুলে জানিয়েছেন, সেখানে পুলিশ নিজেই বলেছে যে এটা ‘ফাসিস্ত-বিরোধী ষড়যন্ত্র’ ছিল। তার মানে তারা নিজেরাই মেনে নিচ্ছে যে এই সরকার ফাসিস্ত!
চলতি বিতর্কের পরিপ্রেক্ষিতে ফের উঠে আসছে মহারাষ্ট্রের হিন্দু নেতা সম্ভাজি বিড়ে এবং তাঁর শিষ্য দামগুড়ের প্রসঙ্গ। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে মহারাষ্ট্রের প্রচারে গিয়ে হেলিকপ্টার থেকে নেমেই কার্যত দৌড়ে গিয়ে পা ছুঁয়ে বিড়েকে প্রণাম করতে দেখা গিয়েছে মোদীকে। মোটা সাদা গোঁফওয়ালা শীর্ণ চেহারার প্রভাবশালী কট্টর হিন্দু নেতাকে গুরুজি বলে সম্বোধন করেন মোদী। এ হেন বিড়ের বিরুদ্ধে যখন ভীমা কোরেগাঁও কাণ্ডে এফআইআর করা হয়, তখন বিজেপি সরকার তাঁকে আশ্রয় দিয়েছিল বলে অভিযোগ দলিত মঞ্চের। এই গুরুজির সঙ্গে নিয়মিত ফেসবুকে ছবি পোস্ট করেন তুষার দামাগুড়ে। এ হেন ব্যক্তিকে দিয়ে এফআইআর করানোটাও বিজেপির সুপরিকল্পত কৌশল বলে মনে করছেন ভারাভারা রাওয়েরা।