ছবি: পিটিআই।
ক্ষোভের আগুন জ্বলছিলই। তা নেভাতে সোমবার চেন্নাইয়ে এসে তামিল ভাষায় প্রশংসায় পঞ্চমুখ হলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আমেরিকা থেকে ফেরার পর আজই প্রথম চেন্নাইয়ে এলেন তিনি। ফলে কথায় রইল সদ্যসমাপ্ত আমেরিকা সফরের রেশ। মোদী জানালেন, তামিল স্বর এখন আমেরিকাতেও শোনা যাচ্ছে।
সম্প্রতি হিন্দি দিবসে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছিল দেশজুড়ে। অমিত বলেছিলেন, একমাত্র হিন্দিই গোটা দেশকে এক করতে পারে। যা নিয়ে সব চেয়ে বেশি ক্ষোভ তৈরি হয় দক্ষিণ ভারতে। তামিলনাড়ুর বিরোধী দলনেতা, প্রয়াত এম করুণানিধির পুত্র এম কে স্ট্যালিন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, ‘‘এটা ইন্ডিয়া, হিন্দিয়া নয়।’’ তামিল সুপারস্টার ও রাজনীতিক কমল হাসন জানিয়ে দেন, এমন হলে ভাষাযুদ্ধ শুরু হয়ে যাবে। যা দেশ এবং তামিলনাড়ুর কাছে কাঙ্খিত নয়। শুধু বিরোধী নেতারাই নয়, বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল বিজেপির ভিতরেও। কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী বি এস ইয়েদুরাপ্পা-সহ দলের অনেক দক্ষিণী নেতাই অমিতের বক্তব্যকে হজম করতে পারেননি।
এর পরেই ভাষা নিয়ে ক্ষোভ কমাতে নামেন মোদী। আজ চেন্নাই বিমানবন্দরে নেমেই সংক্ষিপ্ত বক্তৃতা শুরু করেন তামিল ভাষায় ‘ভনাক্কম’ (নমস্কার) সম্বোধন করে। এর পরে চেন্নাই আইআইটি-র সমাবর্তন অনুষ্ঠানেও মোদীর মুখে শোনা গিয়েছে তামিলের জয়গান।
সংবর্ধনা: আইআইটি মাদ্রাজের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সোমবার। ছবি: পিটিআই
সম্প্রতি আমেরিকাতে থাকার সময়েও বেশ কয়েকবার ভারতের বিভিন্ন ভাষার শক্তির কথা শোনা গিয়েছিল প্রধানমন্ত্রীর মুখে। রাষ্ট্রপুঞ্জে বক্তৃতার সময়ে বিশ্বভ্রাতৃত্বের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরতে গিয়ে প্রাচীন তামিল কবি কানিয়ান পুনগুণদ্রানার উদ্ধৃতি দিয়েছিলেন তিনি। যার মূল কথা— আমরা সর্বত্র, সকলের জন্য রয়েছি। আর আজ মোদী বলেন, ‘‘আমেরিকায় ছিলাম যখন, একবার তামিল ভাষায় কথা বলেছিলাম। সবাইকে জানিয়েছিলাম, এটা ভারতের প্রাচীন ভাষাগুলির মধ্যে একটি। আজও গোটা আমেরিকায় তামিল শোনা যায়।’’
দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পরে আজই প্রথমবার চেন্নাইয়ে এলেন মোদী। চেষ্টা করলেন বিতর্ক থেকে নিজেকে অনেক দূরে রাখতে। সংঘাত এড়াতে অমিতও অবশ্য আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন, আঞ্চলিক ভাষার উপর হিন্দিকে চাপিয়ে দেওয়ার কথা মোটেই বলেননি তিনি।