প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ফাইল চিত্র।
নয়া জাতীয় শিক্ষানীতির পক্ষে সওয়াল করতে এ বার আসরে নামলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শুক্রবার ইউজিসি আয়োজিত ‘কনক্লেভ অন ট্রান্সফরমেশনাল রিফর্মস ইন হায়ার এডুকেশন আন্ডার ন্যাশনাল এডুকেশন পলিসি’ শীর্ষক ভার্চুয়াল সভায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত নয়া জাতীয় শিক্ষানীতিতে স্কুল পাঠ্যক্রমের পরিবর্তন, এমফিল বন্ধ-সহ শিক্ষাপদ্ধতির বদল নিয়ে ব্যাখ্যা দিলেন তিনি। এর আগে গত সপ্তাহে ‘স্মার্ট ইন্ডিয়া হ্যাকাথন ২০২০’ গ্র্যান্ড ফিনালের সূচনাপর্বের বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘‘নয়া শিক্ষানীতি কার্যকর হলে ১৩০ কোটির বেশি দেশবাসীর প্রত্যাশা পূরণ হবে। শিক্ষা ব্যবস্থাকে আধুনিক করে তোলার জন্য পরিকাঠামোর সংস্কারই আমাদের লক্ষ্য। আগেকার শিক্ষা পদ্ধতির খামতিগুলি নয়া ব্যবস্থায় দূর করা হয়েছে।’’ নয়া শিক্ষানীতিতে লোকাল ও গ্লোবালের মেলবন্ধন ঘটবে এবং বাবাসহেব আম্বেডকরের আকাঙ্খা পূরণ করে শিক্ষা সুলভ হবে বলেও দাবি করেছিলেন তিনি। আজ মোদী বললেন—
• এই নীতি নয়া শতাব্দীতে আমাদের নতুন দিশানির্দেশ দেবে। তাই এই নীতির প্রয়োগ নিয়ে আলোচনা করুন। রণনীতি তৈরি করুন। রোডম্যাপ বানান। সময়সীমা স্থির করুন।
• শুধু সরকারি নির্দেশিকা জারি করে নয়া শিক্ষানীতি কার্যকর করা সম্ভব নয়, তা গ্রহণ করার জন্য মানসিক প্রস্তুতি জরুরি।
• নতুন শিক্ষানীতিতে প্রযুক্তি ও প্রতিভার মেলবন্ধন ঘটবে। দৃষ্টিভঙ্গি বদলাবে সমাজের।
• উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির স্বশাসন নিয়ে দু’টি মত রয়েছে। এক দল বলে, উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে সরকারি নিয়ন্ত্রণ জরুরি। অপর দল পুরোপুরি স্বশাসনের পক্ষে। প্রকৃত শিক্ষার পথ এই দু’টি মতের মাঝখান দিয়ে গিয়েছে।
• উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিও বাড়তি ক্ষমতা পাবে নয়া নীতিতে।
• নতুন নীতিতে যুব সমাজের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত হবে। একই কর্মক্ষেত্রে জীবনভর আটকে থাকতে হবে না।
• রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছিলেন, উচ্চশিক্ষা শুধু আমাদের জ্ঞান দান করে না, নিজেদের অস্তিস্ব উপলব্ধি করতে সাহায্য করে।
• একটি পাঠক্রম মাঝপথে ছেড়ে কোনও পড়ুয়া যদি অন্য পাঠক্রমে যেতে চায়, নতুন ব্যবস্থায় তা আরও সহজ করা হয়েছে।
• জোর দেওয়া হয়েছে অনুসন্ধান, আলোচনা এবং বিশ্লেষণ নির্ভর শিক্ষার উপর।
• বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ছোটরা মাতৃভাষায় মাধ্যমে শিক্ষালাভে স্বচ্ছন্দ। তাই এই বিষয়টির উপর জোর দেওয়া হয়েছে।
• নয়া শিক্ষানীতির সফল প্রয়োগের দিকেই এখন সকলের নজর।
• গ্লোবাল সিটিজেন হলেও যাতে শিকড় থেকে বিচ্ছিন্ন হতে না হয়, নয়া জাতীয় শিক্ষানীতিতে তা নিশ্চিত করার চেষ্টা হয়েছে।
• এই প্রতিযোগিতা থেকে শিক্ষাকে সরিয়ে আনতে হবে। বর্তমান ও ভবিষ্যত প্রজন্মের স্বার্থরক্ষা আমাদের লক্ষ্য।
• আগের শিক্ষানীতিতে ঔৎসুক্য, উৎকর্ষ ও চাহিদার ভারসাম্য রাখার বিষয়টিতে নজর দেওয়া হয়নি। ফলে কখনও চিকিৎসক, কখনও ইঞ্জিনিয়ার, কখনও আইনজীবী হওয়ার প্রতিযোগিতা চলেছে।
• নয়া জাতীয় শিক্ষানীতি একুশ শতকের ভারতবর্ষের চাহিদাকে মাথায় রেখে, উন্নয়নের নতুন শিখর ছোঁয়ার লক্ষ্যে তৈরি করা হয়েছে।
• প্রত্যেক দেশই তাদের শিক্ষানীতিকে জাতীয় মূল্যবোধের সঙ্গে সম্পৃক্ত করে তোলে। এবং সেই মতো শিক্ষানীতির সংস্কার করে।
• জাতীয় শিক্ষানীতি এক তরফা ভাবে চালু করা হয়নি। এর কোথাও পক্ষপাতদুষ্টতা নেই।
• দেশ জুড়ে জাতীয় শিক্ষানীতি নিয়ে নানা আলোচনা চলছে। এমন বিতর্ক স্বাস্থ্যকর।
• আলোচনার মাধ্যমে জাতীয় শিক্ষানীতি রূপায়ণ হবে, যা গত তিন বছর নানা স্তরে মত বিনিময় ও সমীক্ষার মাধ্যমে আমরা ঠিক করেছি।
• এই কনক্লেভ থেকেই জাতীয় শিক্ষানীতির নতুন দিশা তৈরি হবে।
আরও পড়ুন: ২৪ ঘণ্টায় সাড়ে ৬২ হাজার নতুন সংক্রমণ, দেশে মোট আক্রান্ত ২০ লাখ ছাড়াল
আরও পড়ুন: আরব সাগরের উষ্ণায়নই কি পাল্টাচ্ছে পশ্চিমের বর্ষা