নরেন্দ্র মোদী।
বিধানসভা ভোটের মুখে দাঁড়ানো বিহারকে যদি পাখির একটি চোখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, তা হলে পাখির অন্য চোখটি মধ্যপ্রদেশে। সেখানে ২৭টি বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন আসন্ন। আজ প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা (গ্রামীন) প্রকল্পের অধীনে সেই রাজ্যের পৌনে দু’লাখ বাড়ির গৃহপ্রবেশ অনুষ্ঠানে, ‘সব কা সাথ সব কা বিকাশ’-এর মন্ত্র জপলেন মোদী। কয়েকটি উপজাতি অধ্যুষিত গ্রামের বাড়ির মালিকদের সঙ্গে বাক্যালাপ করলেন ভিডিয়ো সংযোগে। কেন্দ্র এবং শিবরাজ সিংহ চৌহানের রাজ্য সরকারের কৃতিত্বকে তুলে ধরে, তাঁদের ভিডিয়ো-উপস্থিতিতে কংগ্রেস সরকারের ব্যর্থতার দিকটিও তুলে ধরলেন সুকৌশলে।
জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার অনুগামী ২২ জন কংগ্রেসী বিধায়ক পদত্যাগ করে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরে সব মিলিয়ে এখন মধ্যপ্রদেশের ২৭টি কেন্দ্র খালি। উপনির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার তারিখ পার হওয়ার আগেই কংগ্রেস ১৫ জন নতুন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে দিয়েছে। সিন্ধিয়া-বিরোধী বেশ কিছু বিজেপি নেতা যোগ দিয়েছেন কংগ্রেসে। এসেছেন কিছু বিএসপি নেতাও। ফলে আপাতত রাজ্যে বিজেপি সরকারের কোনও বিপদ না থাকলেও উজ্জীবিত কংগ্রেসের এই সক্রিয়তায় খানিকটা নড়ে বসতে হচ্ছে বিজেপিকেও। আর সেই কৌশলে প্রধান অস্ত্র হিসাবে খোদ মোদী মাঠে নেমেছেন বলে জানাচ্ছে সূত্র।
প্রধানমন্ত্রী আজ বলেন, “করোনার সঙ্কট না-থাকলে আমি আজ নিজে যেতাম এই আনন্দ ভাগ করে নিতে। আশা করি এ বছর দেওয়ালি এবং অন্যান্য উৎসব অনেক ভাল হবে।” মধ্যপ্রদেশের পৌনে দু’লাখ দরিদ্র পরিবার মাথার উপর পাকা ছাদ পাওয়ার এই ঘটনাকে ‘গোটা দেশের গৃহহীনদের প্রতি শুভসঙ্কেত’ বলেন মোদী। বক্তৃতায় পরিযায়ী শ্রমিকের বিষয়টিকেও তুলে এনেছেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর কথায়, “বিভিন্ন শহর থেকে কাজ হারিয়ে ফিরে আসা শ্রমিকদের ইচ্ছাশক্তি এবং পরিশ্রমের ফলে বাড়ি তৈরির কাজ দ্রুত হয়েছে। তাঁরাও এই প্রকল্পে জুড়ে গিয়েছেন।”
মধ্যপ্রদেশে বিজেপির ভোটযুদ্ধে প্রধান প্রতিপক্ষ কংগ্রেসের নাম করেননি মোদী। কিন্তু নাম না-করেও আক্রমণ করতে ছাড়েননি। বলেছেন, “স্বাধীনতার পর থেকে দরিদ্রদের জন্য আবাসন প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছিল ঠিকই। নাম বদলে বদলে একই প্রকল্প চলেছে বছরের পর বছর। কিন্তু দেশের কোটি কোটি দরিদ্রের স্বপ্ন পূরণ হয়নি। তার কারণ এই সমস্ত যোজনাগুলিতে সরকারের কর্তৃত্ব অনেক বেশি ছিল।” তাঁর কথায়, “আবাসনের পরিকল্পনা এবং কে কে বাড়ি পাবেন, সে ব্যাপারে দিল্লি নিজের সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিত। আদিবাসীরা কী ভাবে থাকতে চান, তাঁদের জীপন যাপনের ধরন এবং আবাসন ব্যবস্থা কেমন হবে, সে ব্যাপারে সরকারের ধারণাও ছিল না। একটি বাড়ি পেতে সরকারি কর্মীদের পিছনে লেগে থাকতে হতো মানুষকে। আমরা ক্ষমতায় আসার পরে বিষয়টি উল্টে গিয়েছে। সরকারই এখন খুঁজে বার করছে কার বাড়ি প্রয়োজন।”