ফাইল চিত্র।
নিজের হাতে গড়েছেন অমিত শাহকে। গত দু’দশকে সর্বনিম্ন আসন সংখ্যায় নেমেও গুজরাতে ‘বড়’ জয় পেয়েছেন। তবু বিশ্রাম নয়। পরের ভোটের জন্য ঝাঁপাতে হবে এখন থেকেই।
বদ্ধ ঘরে এমন হরেক কথা দলের সাংসদদের শোনাচ্ছিলেন নরেন্দ্র মোদী। সে সব ভাসিয়ে এল কান্নার স্রোত। এক বার নয়, তিন-তিন বার।
গুজরাত-হিমাচলের ভোটের পরে বিজেপি সাংসদদের সঙ্গে আজই ছিল মোদীর প্রথম বৈঠক। নিজের রাজ্যে টেনেটুনে পাশের ক্ষত ঢাকতে তিনি যে উদ্দীপনার মন্ত্র দেবেন, তা প্রত্যাশিতই ছিল। বৈঠকের শুরুতেই সকলে উঠে দাঁড়িয়ে করতালিতে স্বাগত জানান মোদীকে। পাশে তখন অমিত শাহ, লালকৃষ্ণ আডবাণীরা। কিন্তু মোদী যে কেঁদেই ফেলবেন, ভাবতে পারেননি অনেকে!
যুবক বয়স থেকে নিজের কঠিন রাজনৈতিক যাত্রার কথা শোনাচ্ছিলেন মোদী। পুরনো সঙ্গীদের কথা, যাঁদের অনেকে এখন নেই। কথায় কথায় এল অটলবিহারী বাজপেয়ীর প্রসঙ্গও। গুজরাতে ২৬টি লোকসভা আসনের মধ্যে ২০টি জেতার পরে কী ভাবে হঠাৎই পিছন থেকে মোদীকে জড়িয়ে ধরে ‘সাবাশি’ দিয়েছিলেন বাজপেয়ী। এমন নানা কথা বলতে বলতেই আবেগ ঝরল প্রধানমন্ত্রীর।
আরও পড়ুন: ইউপিএ-র রাশও ছাড়বেন সনিয়া
প্রধানমন্ত্রী হয়ে সংসদের সেন্ট্রাল হলে বক্তৃতা দিতে গিয়ে কেঁদেছিলেন মোদী। নোট বাতিলের পরে চৌরাস্তায় শাস্তি ভোগের কথা বলতে গিয়েও। ফেসবুকের সদর দফতরে কেঁদেছিলেন মায়ের কথা বলতে বলতে। গুজরাত ভোটের সময়ে মোদীর চোখের জল নিয়ে বাজিও ধরেছিল সাট্টা বাজার। আডবাণীর চোখে প্রায়শই জল দেখে অভ্যস্ত বিজেপি নেতারা এখন তাঁর সঙ্গে মোদীর তুলনাও টানছেন। তবে অনেকের মতে, ক্ষমতার কেন্দ্রে থাকার সময়ে ‘লৌহপুরুষ’ আডবাণীর চোখে কখনও জল দেখা যায়নি। কিন্তু মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরেই যত জল ঝরিয়েছেন।
ফারাক এখানেই।
‘মোদীভক্ত’ বলে পরিচিত মন্ত্রী গিরিরাজ সিংহ অবশ্য বলছেন, ‘‘মোদী তো রাহুল গাঁধীর মতো রাজঘরানা থেকে আসেননি। মেহনত করে এই জায়গা অর্জন করেছেন। ফলে তাঁর গলায় আবেগ মানায়।’’ তাঁদের মতে, আবেগের আবহে মোদী আজ দলকে গুজরাতের ফলাফলে দমে না গিয়ে আরও চাঙ্গা হওয়ার বার্তা দিলেন সুকৌশলে। রাহুলকে বিঁধে বললেন, ‘‘অনেকে হাস্যকর ভাবে হারের মধ্যে জয় খুঁজছেন।’’
তখনই অমিতকে তুলে আনার প্রসঙ্গ টেনে মোদী বলেন, এ ভাবেই যুবকদের আরও কাছে টানতে হবে। রাহুল থেকে হার্দিক পটেল, অল্পেশ ঠাকুর, জিগ্নেশ মেবাণীর মতো তরুণ নেতারা যখন মোদীকে চ্যালেঞ্জ দিতে ময়দানে— তখন এই মন্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ। মোদীর দাবি, ইন্দিরা গাঁধীর সময়ে কংগ্রেস ১৮টি রাজ্যে ক্ষমতায় ছিল। সেই রেকর্ড ভেঙে বিজেপি ১৯ রাজ্যে ক্ষমতায়। কংগ্রেসের অবশ্য বক্তব্য, ইন্দিরা জমানায় রাজ্যও ছিল কুড়িটি। ফলে তুলনা আসছে কোথা থেকে!